বিআরটি ফ্লাইওভারেও ভোগান্তি
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১২ এএম
বাস র্যাপিড ট্রানজিট বিআরটি প্রকল্পের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। বেড়েছে নির্মাণ ব্যয়ও। তবুও সঠিক সময়ে কাজ শেষ হয়নি। অবশেষে কাজ অসমাপ্ত রেখেই বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে গাজীপুর থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত বিআরটি লেনে বাস চলাচল উদ্বোধন করে প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। যানজট কমানোর জন্য প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হলেও এ প্রকল্পের কাজের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই সড়কটিতে যানজটে ক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজন। এর আগে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে উত্তরার বিএনএস সেন্টার আজমপুর পর্যন্ত ফ্লাইওভারটি খুলে দেয়া হয়। এই অংশটুকু খুলে দেয়া হলেও কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছে না এই সড়কে যাতায়াতকারী লোকজন।
এরইমধ্যে এই ফ্লাইওভার অংশের সড়কে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। যার কারণে বিআরটির উড়ালপথেও দেখা দিচ্ছে যাত্রী ভোগান্তি। যে, যার মতো ব্যবহার করছে বিআরটি ফ্লাইওভার। ইতোমধ্যেই পরিবহন শ্রমিকরা ফ্লাইওভারের উপরে গড়ে তোলেছে বাস স্টপিজ। ফ্লাইওভারের দুই পাশের অংশে গড়ে উঠেছে যাত্রী পরিবহনের কাউন্টার। উপরে-নিচে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী দোকান। এসব দোকান ও বাস স্টপিজে জটলা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে লোকজন। ফ্লাইওভারের রাস্তা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ময়লা পরিস্কার না করার কারণে বিভিন্ন স্থানে ময়লা-অবর্জনা দেখা যায়। যা চরম অস্বস্থিকর বলে মনে করছেন যাত্রীরা। পরিবহন চালকদের অতি লোভের কারণে যানজট মুক্ত হচ্ছে না উড়ালসড়ক। উড়ালসড়কের উপর অব্যবস্থাপনার কারণে বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উত্তরা হাউজবিল্ডিং এলাকায় উড়ালসড়কের উপর ঝুঁকি পূর্ণ অবস্থায় গণপরিবহনগুলো যাত্রী উঠা নামা করছে। এসময় টঙ্গী গাজীপুর থেকে ছুটে আসা প্রতিটি গাড়ি থেকে ৮/১০ জন করে যাত্রী নামছে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা দ্রুত গতিতে ছুটে আসা গাড়ির সামনে পরিবার ও শিশু বাচ্চাদেরকে নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক পারাপার হয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে। আবার একই সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে চলন্তগাড়ির সামনে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দৌড়ে গিয়ে গাড়িতে উঠতে দেখা যায়। অপরদিকে উত্তরবঙ্গের নামিদামি এসি নন এসি বাস ও গাজীপুর টঙ্গী ফায়ার স্টেশন হয়ে উড়ালসেতু দিয়ে আসা গণপরিবহন ঢাকার প্রবেশ পথ বিএনএস সেন্টার আজমপুর ব্রিজের গোড়ায় থামিয়ে যাত্রী নামানোর কারণে ব্রিজের ওপর যানজট সৃষ্টি হয়। ফলে চাকরিজীবীদের কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়ে বিপাকে পড়েন অফিসগামীরা। উড়ালসেতুর উপর গড়ে উঠেছে পান সিগারেটের দোকান। এ ছাড়াও ব্রিজের উপর পরে আছে ময়লার স্তুপ। বালি ও ময়লা আবর্জনায় উড়ালসড়ক।
জানা যায়, উড়াল সড়ক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে রয়েছে বড় ধরনের সরকারি বাজেট। উড়ালসড়ক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বড় ধরণের বাজেট থাকা সত্ত্বেও বিআরটি প্রকল্পের অসাধু কর্মকর্তারা এ কাজে কোন জনবল না রেখে উক্ত বাজেট আত্মসাৎ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিআরটি প্রকল্প কর্তৃপক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে রাজধানীর প্রবেশপথ টঙ্গী আব্দুল্লাহপুর হয়ে আজমপুর এলাকার উড়ালসেতু ময়লা আবর্জনায় একাকার হয়ে উঠেছে। উড়ালসড়কের মাঝ পথে গণপরিবহনগুলো স্ট্যান্ড বানিয়ে যাত্রী উঠা নামা করার কারণে প্রায়ই সেখানে যানজট সৃষ্টি হয়। গত ২১ ডিসেম্বর ঢাকার প্রবেশপথ আবদুল্লাহপুর এলাকার বেইলি ব্রিজ ভেঙে পরার কারণে গাড়ির প্রচন্ডচাপে উড়াল সড়কের নিচে যানজট লেগেই আছে। তার উপর নতুন যন্ত্রণা দিনে-রাতে উত্তরা আজমপুর উড়ালসেতুর উপর যানজট।
কয়েকজন যাত্রী বলেন, আমরা নিরুপায়, যানজটের ভয়ে আমরা ঝুঁকি জেনেও এখান দিয়ে যাতায়াত করি। বিআরটি প্রকল্পের উত্তরা আজমপুর বিএনএস সেন্টার এলাকায় উড়াল সড়কের ব্রিজের গোড়ায় যাত্রীবাহী গণপরিবহন দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানোর কারণে আজমপুর এলাকায় যানজট লেগেই থাকে।
উড়ালসড়কে উঠার সময় দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানো বিষয়ে আজমপুর এলাকার টিআই রমজান আলী ইনকিলাবকে বলেন, তারা যথা সাধ্য চেষ্টা করছেন এই এলাকায় যেন যাত্রীবাহী গণপরিবহন না দাঁড়ায়। ট্রাফিক নির্দেশনা না মানায় তারা নিয়মিত মামলা দিচ্ছেন। এ বিষয়ে তিনি বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের দায়ী করছেন। বিমানবন্দর মহাসড়কের বিএনএস সেন্টার অংশে রোড ব্যারিয়ার লাগানোর ব্যপারে বিআরটি প্রকল্পের কর্মকর্তাদের সাথে তাদের সিনিয়ররা দফায় দফায় আলোচনা করছেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, জনগণকে সঠিকভাবে কাঙ্খিত সেবা দিতে হলে কাজে সৃজনশীলতা, দক্ষতা ও গতিশীলতা আনতে হবে। প্রজেক্ট সুষ্ঠুভাবে পরিকল্পনা ও পরিচালনার জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। জনগণের অর্থ যাতে জনগণের সেবায় সঠিকভাবে নিয়োজিত হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। বিআরটি প্রজেক্টের ক্ষতিগ্রস্ত সম্পত্তিগুলোর মেরামত ও সংস্কারের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। বিআরটি প্রজেক্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রফেসর ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. শামছুল হক বলেন, বিআরটি প্রকল্প যেভাবে পরিচালনা করার কথা, সেভাবে পরিচালনা না হলে এখানে যানজট বাড়বে। করিডরের জন্য বিশেষায়িত বাস না কিনে সাধারণ বাস চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিলেই বরং ভালো হবে। বিআরটি একটি খ-িত প্রকল্প হলেও এখানে গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ায় যানজট থেকে স্বস্তি মিলেছে। দীর্ঘসময় ও অতিরিক্ত খরচে বিআরটি প্রকল্প রেকর্ড করেছে।
উড়ালসড়কে ঝুঁকি পূর্ণ অবস্থায় যাত্রী উঠা নামা ও তদারকিসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে বিআরটি প্রকল্পের পিডি ও প্রজেক্ট ম্যানেজারকে মুঠোফোনে বার বার ফোন করে ও পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মনিরুজ্জামানের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেন নি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
এক বছরে ১৫০ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ, আটক ৮৬
ভারত থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের সময় বেনাপোল সীমান্তে আটক ৭
মতলব দক্ষিণে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত
৫৭৫ কোটি টাকা মুনাফা করেছে রূপালী ব্যাংক
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের জন্য হেলথকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন
ঢাবি দাবা প্রতিযোগিতা শুরু
জোকোভিচ-কিরগিওস জুটির বিদায়
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের তালিকাভুক্তির সময় বাড়ল
হাসিনার বিরুদ্ধে সিনেমা করে হুমকির মুখে তিশা
ডুয়েটে টেকনিক্যাল সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত
প্রতিদিনের বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হলেন মোরছালীন বাবলা
‘লেখাপড়া না করে দেশ শাসন করতে গেলে আ.লীগের মতো ভুল করার আশঙ্কা রয়েছে’
বিরলে অবৈধ সুদ ও মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
বিরলে বুরো বাংলাদেশের আয়োজনে শীতবস্ত্র বিতরণ
বিরল প্রেস ক্লাবে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
বিরলে পৃথকভাবে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন
বর্ণাঢ্য আয়োজনে পটুয়াখালীতে ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত
লামায় অবৈধ ৭টি ইট ভাটায় অভিযান ৭লক্ষ টাকা জরিমানা
২৭ জানুয়ারি পবিত্র শব-ই-মিরাজ
সিলেটে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় আঞ্চলিক কর্মশালা