ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১
জনতা ব্যাংকের সাবেক টাইপিস্টের দাবি

দু’টি ৫ তলা ভবনের একটি করেছেন নিজে অপরটি দিয়েছেন শ্বশুর

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম


ছিলেন সামান্য ইলেকট্রিক মিস্ত্রী। এরপর পিয়ন পদে চাকরি নেন জনতা ব্যাংকে। পরে দায়িত্ব পান টাইপিস্ট পদে। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানের গোপন তথ্য পাচারসহ নানা ধরনের অনৈতিকতার মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ করতে থাকেন। এক এক করে ঢাকায় তিনটি বাড়ি ও একাধিক ফ্ল্যাটের মালিক হন। তবু সম্পদের মোহ যেন তাকে পেয়েই বসে। অন্যের সম্পদও জোর করে দখলের চেষ্টা করেন। অতি লোভী ব্যক্তির নাম লুৎফর রহমান। গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর হলেও ঢাকার মুগদা-মা-া এলাকায় গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন। বসবাস করেন সেখানেই।

সম্প্রতি প্রতারণার মামলায় জেল খেটে জামিনে মুক্ত হন। কিন্তু জামিনে বের হয়েই মামলার বাদীকে দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ফরিদপুর কিংবা শরীয়তপুরে বাড়ি বলে নিজেকে সব সময় আওয়ামী লীগ দাবি করে প্রভাব বিস্তার করা লুৎফর গত ১৫ বছরে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দিয়ে আসছিলেন। এমনকি ঢাকায় বাড়ি করার সময় রাজউককেও নয়-ছয় বুঝিয়ে নিজের সুবিধামতো ভবন বানিয়েছেন।

বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের ছায়াতলে ব্যাপক প্রভাব খাটিয়ে জাল-জালিয়াতি করে প্রতিবেশীদের জমিও দখলে নিয়েছেন। যারা তার কাছে জমি বিক্রি করতে চাননি তাদের ওপর চালিয়েছেন অমানসিক নির্যাতন, হামলা। মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করিয়েছেন বছরের পর বছর। গত ১৫ বছর একাধিক মামলা ও জিডি করেও লুৎফরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া যায়নি। এমনই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ রকম একজন ভুক্তভোগী সংবাদ কর্মী মো: মামুন ইবনে হাতেমী নামের দক্ষিণ মুগদার এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি লুৎফর রহমানের প্রতিবেশী। আমার বাবা নুরুল ইসলাম হাতেমী ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি হওয়া প্রথম তিন শিক্ষার্থীর একজন। এলাকার মসজিদসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণে বাবার অবদান রয়েছে। তার মৃত্যুর পর লুৎফরের কুনজর পড়ে আমাদের দক্ষিণ মুগদার বাড়িটির ওপর। এ বাড়ি দখলে নিতে তার সন্ত্রাসী ভায়রা ভাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলায় সদ্য গ্রেফতারকৃত মুগদা ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম ভাট্টির সহযোগিতায় আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিতে শুরু করে। রাত-দিনে বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়ির সবাইকে আতঙ্কে রাখতেন। আমার মৃত বাবাকে জীবিত দেখিয়ে গ্যাস-বিদ্যুতের লাইনের ভুয়া কাগজ তৈরি করে লুৎফর। ক্ষমতার দাপটে পুলিশের সামনে আমার দোতলা বাড়ি ভেঙে ফেলেন। তারপরও তাকে কিছুই বলার ছিল না। তার ষড়যন্ত্রমূলক সাজানো মামলায় ১২ বছর ফেরারি ছিলাম। অবশেষে ৫ আগস্টের পর তার বিরুদ্ধে মামলা করি। তিনি জামিনে এসে আমাকে ও আমার পরিবারকে দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। উল্টো আমাকেই পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। মামুন বলেন, তার বিরুদ্ধে গত ১৫ বছরে উক্ত প্রতারক লুৎফর বিভিন্ন ধরনের মামলা দিয়েছেন শুধুমাত্র আ.লীগের প্রভাব খাটিয়ে। তিনি এসব মামলা এবং লুৎফরের অত্যাচার থেকে প্রতিকার পেতে বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অপরদিকে হামলা-মামলা ও সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত লুৎফর রহমান গত রাতে ইনকিলাবকে বলেন, আমার এত সম্পদ নেই। ঢাকায় মাত্র ৫ তলা করে দু’টি বাড়ি আছে। একটি ৫ তলা ভবন করেছি নিজের টাকায়। অপর একটি ৫ তলা ভবন আমার শ্বশুর করে দিয়েছেন। যেটি ছেলের নামে করেছি। লুৎফর দাবি করেন, টাইপিস্ট পদে চাকরি শুরু করলেও পরে অফিসার হয়ে ২০১৯ সালে অবসর নিয়েছি। তার বিরুদ্ধে মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলায় যা হবার হবে, পরে দেখা যাবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
আরও

আরও পড়ুন

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

ধূমপানকে না বলুন

ধূমপানকে না বলুন

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত