ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

রেলে আয়ের শীর্ষে কক্সবাজার এক্সপ্রেস

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে নতুন ট্রেন চালুর কারণে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছরের ১১ মাসে ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেশি আয় করেছে রেল। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের আন্তনগর ট্রেনগুলোর আয় ও যাত্রী পরিবহনের হিসাব পর্যালোচনা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ২৭ জোড়া আন্তনগর ট্রেন নিয়মিত চলাচল করে। এ ছাড়া পূর্বাঞ্চল থেকে পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেন চলাচল করে ১৮টি। এসব ট্রেনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করেছে ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলরত পারাবত এক্সপ্রেস। আর আয়ের দিকে শীর্ষে ছিল নতুন চালু হওয়া কক্সবাজার এক্সপ্রেস। এই ট্রেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিরতিহীন চলাচল করে।

ট্রেন পরিচালনার সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে দুটি অঞ্চলে বিভক্ত। একটি অঞ্চল যমুনা নদীর পূর্ব পাশে, যা পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে (ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট-ময়মনসিংহ বিভাগ) হিসেবে পরিচিত। আর যমুনা নদীর পশ্চিম পাশ নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে গঠিত (রাজশাহী-রংপুর-খুলনা বিভাগ)।

রেলওয়ের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ৭২টি ট্রেনে যাত্রী চলাচল করেছেন ১ কোটি ৭৯ লাখ ১৬ হাজার ১৬০ জন। আগের বছর ২০২৩ সালে এই সময়ে যাত্রী পরিবহন করা হয়েছিল ১ কোটি ৯৩ লাখ ৩৬ হাজার ৮০৪ জন। এদিকে এ বছর এসব ট্রেন থেকে রেলের আয় হয়েছে ৬৪২ কোটি ১৭ লাখ ৯১ হাজার ৪৬৭ টাকা। ২০২৩ সালের আয়ের পরিমাণ ছিল ৬১১ কোটি ৬১ লাখ ১৭ হাজার ৮৭০ টাকা।

রেলের পূর্বাঞ্চলে নিয়মিত ২৭ জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ট্রেনগুলো সর্বোচ্চ ৯ লাখ থেকে সর্বনিম্ন ৩ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে। এর মধ্যে ৫ লাখের বেশি যাত্রী আসা-যাওয়া করেছেন ১২ জোড়া ট্রেনে। ২৭ জোড়া ট্রেনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করেছে পারাবত এক্সপ্রেস। এটি ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচল করে। জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এই ট্রেনে যাতায়াত করেছেন ৯ লাখ ৯ হাজার ৫৪১ যাত্রী। যাত্রী পরিবহনে এই ট্রেন থেকে রেলের আয় হয়েছে ১৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এরপর সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহন করা চারটি ট্রেনই চলাচল করে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলরত মহানগর গোধূলি-প্রভাতি যাত্রী পরিবহন করেছে ৮ লাখ ২৭ হাজার ৪৩৬ জন। এই ট্রেনে রেলের আয় হয়েছে ২৫ কোটি ৪৬ লাখ ৮২ হাজার ৫৪৮ টাকা। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলরত আরেকটি ট্রেন মহানগর এক্সপ্রেসে চলাচল করেছেন ৭ লাখ ১০ হাজার যাত্রী। রেলের আয় হয় ১৯ কোটি ৯৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে চলাচলরত দুটি আন্তনগর ট্রেনের মধ্যে পাহাড়িকা এক্সপ্রেস বেশি যাত্রী পরিবহন করেছে। এই ট্রেনে চড়েছেন ৬ লাখ ৭২ হাজার ৯৫১ জন। আর উদয়ন এক্সপ্রেস করে আসা-যাওয়া করেছেন ৪ লাখ ৯১ হাজার জন। দুটি ট্রেন থেকে আয় হয়েছে যথাক্রমে ১৮ কোটি ৫১ লাখ ৭১ হাজার ও ১৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

প্রায় ছয় বছর কাজ চলার পর ২০২৩ সালের নভেম্বরে উদ্বোধন করা হয় রেলওয়ের নতুন রুট কক্সবাজার। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইনের উদ্বোধন করা হয়। এর মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রামের সঙ্গে পর্যটন শহরের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয় ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে। ঢাকা থেকে আন্তনগর বিরতিহীন ট্রেন দেওয়া হয়। কক্সবাজার এক্সপ্রেস নামের এই ট্রেন চলাচল শুরুর পর থেকেই দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। পরের বছর জানুয়ারি থেকে আরেকটি বিরতিহীন ট্রেন দেওয়া হয় ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম থেকে চালু করা হয় বিশেষ ট্রেন। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে চলাচলরত আন্তনগর ট্রেনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে কক্সবাজার এক্সপ্রেস থেকে। চলাচলের প্রথম বছরেই এই ট্রেন ৪ লাখ ৮২ হাজার ২২৬ জন যাত্রী পরিবহন করে। আয় হয়েছে ৪২ কোটি ৯৫ হাজার টাকা, যা আন্তনগর ট্রেনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। কক্সবাজার রুটে আরেকটি ট্রেন পর্যটক এক্সপ্রেস থেকে আয় হয়েছে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এই ট্রেনে যাওয়া-আসা করেছেন ৪ লাখ ৬ হাজার যাত্রী। এই দুটি ট্রেনের পর আয়ের শীর্ষে রয়েছে দেশের প্রথম আন্তনগর বিরতিহীন ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস।

রেলওয়ের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক (চট্টগ্রাম) এ বি এম কামরুজ্জামান বলেন, আয় বৃদ্ধির অন্যতম ও মূল কারণ হচ্ছে কক্সবাজার রুট চালু হওয়া। এটি দীর্ঘ রুট। আবার ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেনে যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কক্সবাজার রুটের ট্রেনগুলো চালু হওয়ার কারণে রেলের আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছে। গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় ট্রেন চলাচল সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ছিল।

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
আরও

আরও পড়ুন

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

ধূমপানকে না বলুন

ধূমপানকে না বলুন

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত