আগামী মাসে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ :সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম | আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০১ এএম
অন্তর্র্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচার নির্বাচনের আগেই সম্ভব। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনগুলোর দেয়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। আলোচনার ভিত্তিতেই কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নের পথে যাবে সরকার। এর বাস্তবায়ন নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ওপর।
গতকাল বুধবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। সকালে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ সংস্কার কমিশনÑ এই চার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেয়া হয়। আইন উপদেষ্টা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঠিক করা হবে ন্যূনতম সংস্কার, নাকি প্রত্যাশিত মাত্রায় বিস্তৃত সংস্কার করা হবে। আর ন্যূনতম সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য হলে তখন ন্যূনতম সংস্কারের ক্ষেত্রে কোন কোন সুপারিশ প্রাধান্য পাবে, তা চিহ্নিত করা হবে। সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পুরো কাজটা অন্তর্বর্তী সরকার সম্পন্ন করে যেতে পারবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, কয়েকটি ধাপে আলোচনার ভিত্তিতে সরকার আইন ও বিধি প্রণয়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যেসব সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য হবে সেগুলো বাস্তবায়ন হবে। তবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ও আকাক্সক্ষা যেন বাস্তবায়ন হয় সেদিকে সব অংশীজন গুরুত্ব দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। সংস্কার কমিশনের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর লিখিত প্রস্তাবনা দেয়ার মধ্যে দিয়ে তাদের সঙ্গে এক ধরনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়ে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রত্যেকটি কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করেছে উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, আজ চারটি কমিশন রিপোর্ট জমা দিয়েছে এবং অন্য দুটি কমিশন বেশ কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে। প্রতিবেদনের কোথায় কোথায় প্রাধান্য দেওয়া উচিত, সেটি চিহ্নিত করে আগামীকাল একটা প্রজ্ঞাপন দেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরও জানান, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টগুলো ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পাওয়া যাবে।
স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়া বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা চিরতরে বিলুপ্তি করা জুলাই বিপ্লবের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। আশা করি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানের যে আকাক্সক্ষা ছিল তা বাস্তবায়ন হবে। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ছয়টি কমিশনেরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। সংস্কার কমিশনের সব প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারিতে।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এরপর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ এসব প্রতিবেদন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে কাজের সুবিধার জন্য ছয়টি কমিশনের কাজের মেয়াদ এক মাস বাড়ানো হয়েছে। এই ছয় কমিশনেরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রকাশ করা হবে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সরফরাজ হোসেন এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান তাদের প্রতিবেদন জমা দেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন প্রকাশের কথা জানানো হয়। একই সঙ্গে ছয়টি কমিশন গঠন করা হলেও বিচার ব্যবস্থা এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছে। এসব কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সংস্কার প্রস্তাব ও এগুলোর বাস্তবায়ন নিয়ে ঐকমত্য হলে সংলাপ থেকে একটি রূপরেখা আসতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর রাষ্ট্র সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অন্তর্বর্তী সরকার ৬ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করে। এসব কমিশনকে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য প্রথমে তিন মাসের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসাবে ৭ জানুয়ারি তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। পরে তাদের সময় বাড়িয়ে ১৫ জানুয়ারি করা হয়। এর পর সরকার গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারী ও শ্রমবিষয়ক সংস্কারসহ নানা বিষয়ে কমিশন গঠন করে। ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। এসব কমিশন অংশীজন হিসেবে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সংগঠনের প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ বিশিষ্টজনের সঙ্গে সভা করে তাদের মতামত নিয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মোট ৩৮টি রাজনৈতিক জোট ও দল লিখিতভাবে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মাধ্যমে জরিপ চালিয়ে সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে কমিশনগুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ই-মেইলেও মতামত দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছিল।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, চারটি সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা হওয়ার পর সংক্ষিপ্তসার গণমাধ্যমকে অবহিত করা হবে। কমিশনপ্রধানরা জানিয়েছেন, তাদের সুপারিশগুলোর মধ্যে কিছু রয়েছে স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য, আর কিছু দীর্ঘমেয়াদি। কিছু সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এখন সংসদ না থাকায় নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সংসদ গঠন না করা পর্যন্ত সংবিধান সংশোধন বা সংস্কার করার সুযোগ নেই বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশে বলা হয়েছে তা নিচে তুলে ধরা হলো:
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন: বিদ্যমান এককক্ষবিশিষ্ট সংসদের পরিবর্তে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদের সুপারিশ করছে সংস্কার কমিশন। প্রস্তাবে যুক্তরাজ্য ও ভারতের আদলে শক্তিশালী নিম্নকক্ষ স্থাপনের কথা থাকছে। এ ছাড়া ১০০ নারী আসনসহ নিম্নকক্ষের ৪০০টি আসনের কথা বলা হয়েছে। নারী আসনসহ নিম্নকক্ষের ৪০০ আসনে নির্বাচন হবে বিদ্যমান পদ্ধতিতে। উচ্চকক্ষে ১০৫ আসন থাকার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি আসনে রাষ্ট্রপতি মনোনয়ন দেবেন। সমাজের পিছিয়ে পড়া বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রপতির হাতে পাঁচটি আসন দেওয়ার প্রস্তাব করা হচ্ছে। উচ্চকক্ষের বাকি ১০০ আসনে নির্বাচন হবে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে। দলগুলো নির্বাচনে সারাদেশে যত ভোট পাবে, তার অনুপাতে উচ্চকক্ষে আসন পাবে। দলগুলো উচ্চকক্ষে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে যাতে বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব রাখে, সেটাও সুপারিশে উল্লেখ থাকছে। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া, প্রধানমন্ত্রী, একই সঙ্গে দলীয়প্রধান ও সংসদ নেতা যাতে না হন, এমন বিধান, নির্বাহী বিভাগের জবাবদিহি নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিধান, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাÑ এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ থাকছে কমিশনের প্রস্তাবে। এ ছাড়া সংবিধানের মূলনীতিতে পরিবর্তন আনার সুপারিশও করা হচ্ছে। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার এই তিনটিকে সংবিধানের মূলনীতি করার সুপারিশ করবে কমিশন। এই তিনটির পাশাপাশি আরও দুটি মূলনীতিও যোগ করা হতে পারে। গণতান্ত্রিক জবাবদিহিমূলক ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিয়ে সুপারিশ প্রস্তুত করেছেন বলে জানিয়েছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ক্ষমতা যাতে এককেন্দ্রীকরণ না হয়, সেই সুপারিশ থাকবে। ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি করতে হবে। ক্ষমতার ভাগ-বণ্টনের মধ্য দিয়ে ভারসাম্য তৈরি করা যাবে। দেশের জনসংখ্যার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংসদের আকার বাড়ানোর সুপারিশ করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের সব মানুষকে নিতে হলে সংসদের আকার বাড়াতে হবে। নারীদের সরাসরি প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিকক্ষ সংসদ প্রসঙ্গে আলী রীয়াজ বলেন, নিম্নকক্ষ আরও বড় হলে আলোচনার জায়গা তৈরি হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ছোট আকারে হবে উচ্চকক্ষ। প্রধানমন্ত্রী -প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরির বিষয়ে কমিশন প্রস্তাব দেবে জানান কমিশনপ্রধান।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন: দীর্ঘ মেয়াদে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে একটি কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে আইন পরিবর্তনের পাশাপাশি কিছু প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনেরও সুপারিশ থাকছে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নির্বাচন, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ইসির নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিতকরণ, প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইনে সংশোধন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা বাড়ানো এবং নির্বাচন কমিশনকে দায়বদ্ধ করার জায়গা তৈরি, আরপিওতে শাস্তি ও ব্যবস্থা নেওয়ার বিধানগুলো কিছু ক্ষেত্রে আরও সুনির্দিষ্ট করা, হলফনামার ছকে পরিবর্তন করে প্রার্থীর বিদেশে সম্পদ থাকলে তার বিবরণ দেওয়া বাধ্যতামূলক করা, হলফনামার তথ্য যাচাই বাধ্যতামূলক করা, ‘না’ ভোটের বিধান যুক্ত করা, সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি ভোটের ব্যবস্থা করা, রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়ন পদ্ধতিতে কিছু পরিবর্তন আনাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে সুপারিশ করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, সংবিধান সংস্কারের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থার বিষয়টি চিন্তা করে নির্বাচন সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশ সাজিয়েছে। সুপারিশে ইসির ক্ষমতা বৃদ্ধির বিপরীতে দায়বদ্ধতার মধ্যে আনার কথা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্পিকারের নেতৃত্বে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের সুপারিশ করা হবে। ইসির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে ওই কমিটি তদন্ত করবে।
পুলিশ সংস্কার কমিশন: সংস্কার প্রস্তাবে জুলাই-আগস্টে হতাহতের জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তির সুপারিশ এবং পুলিশ যেন রাজনৈতিক দলের বাহিনীতে পরিণত না হয় ও বল প্রয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়েও সুপারিশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া থানায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, পুলিশের ভাতা বাড়ানো, ব্যারাকে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা, থানায় সেবা নিশ্চিতসহ নানা বিষয়ে সুপারিশ থাকছে কমিশনের প্রতিবেদনে। কমিশনপ্রধান সাবেক সিনিয়র সচিব সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন এই কমিশন পুলিশ সংস্কারের জন্য সাধারণ মানুষের মত নিয়েছিল। কমিশনের ওয়েবসাইটে গত ৩১ অক্টোবর কেমন পুলিশ চাই শীর্ষক এক জনমত জরিপে ১৭টি প্রশ্ন দেওয়া হয়। জনমত জরিপে দেশের ৬৪ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ২৪ হাজার ৪৪২ জন অংশ নেয়। জরিপে পুলিশকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অবসান চেয়েছে ৮৯ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ। ভুয়া ও গায়েবি মামলার অবসান চেয়েছে ৯৫ শতাংশ মানুষ। ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ পুলিশের দুর্নীতি বন্ধের প্রত্যাশা করে।
দুদক সংস্কারের সুপারিশ: প্রধানত দুদকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার, দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সেসব সুপারিশ করা হয়েছে। কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, কমিশনারদের নিয়োগ দলীয় প্রভাবমুক্ত করতে সুনির্দিষ্ট মানদ- নিশ্চিত করতে সুপারিশ করা হয়েছে, ভবিষ্যতে কমিশন যাতে দলীয় প্রভাবে প্রভাবিত না হয়, দুদকের সর্বোচ্চ পদে নিয়োগ প্রক্রিয়াটাও যাতে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক হয়। এই নিয়োগে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার সুযোগ রাখার কথাও বলা হয়েছে।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, দুদক এখন জনপ্রশাসন তথা আমলাতন্ত্রের হাতে জিম্মি। আমলাদের প্রভাব থেকে মুক্ত করতে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব করা হয়েছে। দুদকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনায় অনেক ইতিবাচক-নেতিবাচক দিক আছে, সেগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য কিছু জোরালো প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুদক কর্মকর্তারা যাতে গর্বের সঙ্গে কাজ করতে পারে, একই সঙ্গে তাদের জবাবদিহি নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতে যথাযথ সুপারিশ করা হয়েছে। দুদকের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কাটিয়ে ওঠার ব্যবস্থা করা হবে। সংস্কার কমিশন দুদককে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চায়। কোনো প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা সীমাহীন নয়, জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়Ñ এটি নিশ্চিত করা হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
ধূমপানকে না বলুন
জালিমের পরিণতি ভালো হয় না
অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি
মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়
১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত