চীন বাংলাদেশের জনগণের পছন্দকে সম্মান করতে চায় :চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী
২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৪৮ এএম
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াই ই বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের পছন্দকে সম্মান করতে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখতে আগ্রহী চীন। অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার বেইজিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র বৈঠক হয়।
বৈঠকের বিষয়ে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়াই ই বলেছেন, চীন ও বাংলাদেশ ভালো প্রতিবেশী, যারা একে অপরকে সাহায্য করে এবং ভালো অংশীদার, যারা সাধারণ উন্নয়ন চায়। তিনি বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৫০ বছরে উভয় পক্ষ সর্বদা একে অপরকে সম্মান করেছে, একে অপরকে সমানভাবে বিবেচনা করেছে। উভয়ের জন্যই উইন উইন ফলাফলের জন্য সহযোগিতা করেছে, যা দেশগুলির মধ্যে সম্পর্কের জন্য একটি উদাহরণ স্থাপন করেছে।
চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন সর্বদা বাংলাদেশকে তার প্রতিবেশী কূটনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকে রেখেছে এবং সকল বাংলাদেশি জনগণের জন্য সু-প্রতিবেশী ও বন্ধুত্বের নীতি অনুসরণ করেছে। এই বছর চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী, এটি ‘চীন-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময় বছর’ হিসেবেও পরিচিত এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়ন নতুন সুযোগের মুখোমুখি হচ্ছে। ওয়াই ই বলেন, চীন বাংলাদেশের সাথে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব অব্যাহত রাখতে, কৌশলগত যোগাযোগ জোরদার, বাস্তবসম্মত সহযোগিতা গভীর উচ্চমানের সাথে যৌথভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ নির্মাণ এবং চীন-বাংলাদেশ ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারত্বের ধারাবাহিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশকে তার স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় মর্যাদা রক্ষা, তার জাতীয় অবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়নের পথ অন্বেষণ, বাংলাদেশি জনগণের পছন্দকে সম্মান এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখতে আগ্রহী। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, চীন সংস্কারকে আরও গভীর করছে এবং চীনা-ধাঁচের আধুনিকীকরণকে উৎসাহিত করছে, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে তার প্রতিবেশী দেশগুলির জন্য নতুন সুযোগ দেবে। চীন ও বাংলাদেশ উভয়ই উন্নয়নশীল দেশ, যাদের বিস্তৃত অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে।
এদিকে, বেইজিংয়ের আন্তঃদেশ সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড কো কে-অপারেশনকে (বিআরসি) আরও উচ্চমানসম্পন্ন করতে পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ককে গভীরতর করার অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ এবং চীন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মো. তৌহিদ হোসেন সাথে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ং ই-এর সঙ্গে বৈঠকে বৈঠকে এ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে চীনের দৈনিক দ্য চায়না ডেইলি। বৈঠকের পর একটি লিখিত বিবৃতি দিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সেখানেও উল্লেখ করা হয়েছে এ তথ্য।
বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, চীনের পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ এবং দেশটির জনগণকে সবসময়েই গুরুত্ব দেওয়া হয়। আধুনিকায়ন বা আধুনিক সভ্যতা সম্পর্কে চীনের যে ধারণা-তাকে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে দেওয়ার জন্য ব্যাপক সংস্কার এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই প্রথম-যারা বেল্ট অ্যান্ড রোড কো-অপারেশন বিষয়ক মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এমওইউ) চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল।
বিবৃতিতে দুই দেশের মধ্যকার বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্প, ‘ছোটো কিন্তু সুন্দর’ জীবিকা নির্বাহ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা এবং উদীয়মান নতুন বিনিয়োগক্ষেত্রে অন্বেষণের ক্ষেত্রে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক আরও সুসংহত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ওয়াং ই।
ওয়াং দুই দেশের প্রতি বড় বড় প্রকল্প এবং ্রছোট কিন্তু সুন্দরগ্ধ জীবিকা নির্বাহের কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা সমন্বয় করার, নতুন উদীয়মান ক্ষেত্রগুলি অন্বেষণ করার সময় ঐতিহ্যবাহী সহযোগিতা সুসংহত করার আহ্বান জানিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় চীন। চলতি বছর দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ হবে।
এদিকে বৈঠক শেষে এক বার্তায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাংলাদেশের জন্য এমন এক ঐকমত্য, যা বাংলাদেশের সব সরকার এবং পুরো জাতি দ্বারা সমর্থিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখ-তাকে সমর্থন করা এবং দীর্ঘ ৫ দশক ধরে বিভিন্ন ইস্যুতে নিঃস্বার্থভাবে সহযোগিতা করার জন্য বেইজিংকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তৌহিদ হোসেন। সেই সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশ সবসময়ই ‘এক চীন’ নীতিতে আস্থাশীল।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র আমন্ত্রণে গত সোমবার সে দেশে সফরে যান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বেইজিং সফর শেষে সাংহাই যাবেন। তিন দিনের সফর শেষে আগামী ২৪ জানুয়ারি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দেশে ফিরবেন। উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হওয়ার পর এটিই তৌহিদ হোসেনের প্রথম চীন সফর।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
টঙ্গীবাড়ীতে হল্যান্ডের ড্যানিসপো কোম্পানির বীজ আলুর গাছ পরিদর্শনে ইউএনও
রাউজানে বড়ই সহ হরেক রকমের বাগান করে সফল মালিক শায়েস্তা খাঁন
৪ দিনের রিমান্ডে চট্টগ্রামের সাবেক এমপি নদভী
তল্লাশি চলছে বোমা হামলার হুমকি পাওয়া বিমানে
টেক্সটাইল ট্যালেন্ট হান্ট সিজন-৯ ন্যাশনাল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
গাজায় ৩ দিনে ঢুকেছে ২ হাজার ৪ শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাক : জাতিসংঘ
পুলিশের জন্য গোলাপি রঙের পোশাক চান সমন্বয়ক
ঢাবি এলাকায় গাছ থেকে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
এবার হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ডে পলক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনুসের সঙ্গে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ
আন্দোলনকারী মালয়েশিয়াগামীদের সরিয়ে দিলো পুলিশ
গান গাইতে গিয়ে হাসপাতালে মোনালী ঠাকুর
সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা থেকে অস্ত্র ককটেলসহ ২ দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীকে আটক করেছে মোংলা কোস্ট গার্ড
ট্রাম্পের ৫০০ বিলিয়ন ডলারের ‘স্টারগেট’ প্রকল্প, এআই প্রযুক্তিতে বিপ্লব
এবার যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড প্রধানকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প
টেকনাফে বিজিবির অভিযানে ৪লাখ ৫০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার
মার্কিন রাজনীতিতে উত্তরসূরির জন্য রেখে যাওয়া চিঠিতে ট্রাম্পকে যে বার্তা দিলেন বাইডেন
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের বৈঠক
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের দায়িত্ব ছাড়লেন সারজিস আলম
নাটোরে অবৈধ কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল মৎস্য ঔষধ উদ্ধার