বঙ্গবন্ধু কোন নির্দিষ্ট দলের নেতা নন, সমগ্র জনগোষ্ঠী ও সকল রাজনৈতিক দলের নেতা : বিএইচপি
২০ মার্চ ২০২৩, ১০:৩১ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫০ পিএম
বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বিপ্লব ছিল দুটি। একটি বাঙালি জাতির 'স্বাধীনতা' অপরটি 'অর্থনৈতিক মুক্তি'। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর প্রথম বিপ্লবের সফলতা অর্জন করেন, কিন্তু দ্বিতীয় বিপ্লব অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের পূর্বেই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছেন, কিন্তু দুর্নীতি আর হিংসাত্মক রাজনীতির কারণে তিনি কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছেন না।
দুর্নীতি বন্ধের জন্য তিনি সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দিগুণ বৃদ্ধি করে দিয়েছেন, কিন্তু দুর্নীতি কমেনি, বরঞ্চ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি হিংসা-বিদ্বেষ ও সংঘাতের রাজনীতি বন্ধের কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি।
বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির বিপ্লব সফল করতে হলে, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর মতো দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে ভালোবাসতে হবে এবং জনগণকে দেশাত্ববোধের বন্ধনে আবদ্ধ করে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করতে হবে। এজন্য দেশের রাজনীতিকে অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামের রাজনীতিতে রূপদান করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্য অপশক্তি দেশে যে হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতি সৃষ্টি করেছে তা পরিহার করতে হবে। জাতীয় মূলনীতির ভিত্তিতে অর্থনৈতিক মুক্তির রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শুভ জন্মদিন সমগ্র বাঙালি জাতির এক মহাআনন্দের দিন। ১৯৯৬ সাল থেকে এ দিবসটি বাংলাদেশ জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে বাংলাদেশ। স্বাভাবিক ছিল, দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠী এ দিবসটি উদযাপন করবে, কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় তা হয়নি।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর এক মহাশোকের দিন। প্রতি বছর এই দিন দুটিকে স্মরণীয় করে রাখা, জাতীয়ভাবে এ দিন দুটির মাহাত্ম আলোচনার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে জীবন্ত করে রাখা, দেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নৈতিক দায়িত্ব এবং কর্তব্য। অন্যথায় জাতি হিসেবে আমাদের অকৃতজ্ঞ হয়ে থাকতে হবে।
বঙ্গবন্ধু এক অদ্ভুত বৈশিষ্ঠের অধিকারী ছিলেন। তিনি নিজ শত্রুকেও ভালোবাসতেন। তিনি দেশের জনগণকে নিজ ঔরষজাত সন্তানের মত ভালোবাসতেন। তাঁর ভালোবাসায় কোন খাঁদ ছিল না। তিনি ছিলেন, নিখুঁৎ দেশপ্রেমিক জাতিয়তাবাদী এক অবিসংবাদিত মহান নেতা।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আর কোন বিভ্রান্তি কিংবা পক্ষ-বিপক্ষের রাজনীতি নয়, তাঁকে সকল বিতর্কের উর্ধ্বে রাখতে হবে। এ বিষয়ে দেশের সকল রাজনৈতিক দলের একমত হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর শুভ জন্মদিনে এই প্রত্যাশা করি। জাতীয় স্বার্থে ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নির্বিশেষে সবাই মিলে ১৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর শুভ জন্মদিন জাতীয় শিশু দিবস এবং ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উদযাপনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করা সকলের জন্য কর্তব্য।
শুধু সরকারী কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগ নয়, জাতীয়ভাবে বঙ্গবন্ধুর শুভ জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠান সফল করার বিষয়ে দল-মত নির্বিশেষে দেশের সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি জাতীয় কমিটি করা একান্ত আবশ্যক। কারণ, বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নির্দিষ্ট দলের নেতা নন, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীর নেতা।
স্বাধীনতার ৫২ বছরেও বঙ্গবন্ধুকে সার্বজনীন করা হয়নি। এ বিষয়ে কোন উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। বঙ্গবন্ধুর শুভ জন্মদিনে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনের কাছে বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি-বিএইচপির পক্ষ থেকে বিনীতভাবে নিবেদন করছি, বঙ্গবন্ধুকে শুধু আওয়ামী লীগের নেতা করে রাখবেন না, বঙ্গবন্ধুকে দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠী ও সকল রাজনৈতিক দলের নেতা রূপে পরিগণিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
ভারতের মহাত্মা গান্ধী, ব্রিটেনের রাণী এলিজাবেথ, যুক্তরাষ্ট্রের জর্জ ওয়াশিংটন, চীনের মাওসে তুং, রাশিয়ার লেনিন প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ। এসব মহামনীষীরা তাদের স্ব-স্ব দেশের জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং অভিভাবক। তাদেরকে কেন্দ্র করেই দেশগুলোয় জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় রয়েছে। বাংলাদেশেও বঙ্গবন্ধুকে জাতীয় ঐক্যের প্রতীক করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
ভারতের জাতির পিতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী (মহাত্মা গান্ধী) এক সময় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতা ছিলেন, কিন্তু তিনি এখন সমগ্র ভারতবাসীর নেতা। একইভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক সময় আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন, কিন্তু ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলার সমগ্র জনগোষ্ঠীর অবিসংবাদিত নেতা রূপে পরিগণিত হন।
বাংলাদেশের সাত কোটি মানুষের পক্ষ থেকে ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু পশ্চিম-পাকিস্তানীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, সাত কোটি মানুষকে দাবায় রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দমাতে পারবে না। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণের পর দলমতনির্বিশেষে সকল শ্রেণিপেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুর সাথে ঐক্যমতপোষণ করে স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। তখন বঙ্গবন্ধু ও বাংলার সাত কোটি মানুষ এক ও অভিন্ন সত্ত্বায় রূপান্তরিত হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে দেশি-বিদেশি একটি অপশক্তি বাংলাদেশের জনগণকে বিভক্ত করে দিয়েছে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, একইভাবে বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বিতীয় বিপ্লব সফল করার জন্য আমাদের আবার ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অর্থনৈতিক মুক্তির সফল বিপ্লব ঘটাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর শুভ জন্মদিনে এটাই জাতির প্রত্যাশা। জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা