ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে সর্বস্তরে শোকের ছায়া
১২ এপ্রিল ২০২৩, ০১:০০ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৪৩ পিএম
বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কয়েকদিন ধরে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাকে।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রধান চিকিৎসক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক ডা. মামুন মোস্তাফী বলেন, ‘অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি আমাদের সবার প্রিয় বড়ভাই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর আমাদের মধ্যে নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আপনাদের সকলে প্রতি আমার নিবেদন, আপনারা সবাই তার জন্য প্রাণভরে দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে বেহশত নসীব করেন।’
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, আমি বিকেলে উনাকে দেখতে গিয়েছিলাম। জানতে পেরেছি উনি মারা গেছেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রাণ পুরুষ, প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) আনুমানিক রাত ১০:৪০ এ গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
এর আগে গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ জানান, আমি হাসপাতালে আছি। স্যার মারা গেছেন।
৮২ বছর বয়সি ডা. জাফরুল্লাহ কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন অনেক বছর ধরে। কয়েক দিন আগে তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো খারাপের দিকে যায়। এমন অবস্থায় তাকে গত বুধবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত রোববার তার চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। এর প্রধান সমন্বয়কারী ছিলেন অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মামুন মোস্তাফী।
জানা যায়, ১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালের নামেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঠিক করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। হাসপাতালের পাশাপাশি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিও গড়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৮২ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ওষুধনীতি প্রণয়নেও তার ভূমিকা ছিল।
তার মৃত্যুতে রাজনীতিবীদ থেকে শুরু করে লেখক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, আইনজীবী, আলেম সমাজ ও সাধারণ জনগণ শোক প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে রাত থেকেই সোস্যাল মিডিয়াতে সবাই নিজ নিজ প্রোফাইলে শোক প্রকাশ করেছেন।
দ্বীপ আজাদ নামে একজন লিখেছেন, গণমানুষের ডাক্তার, বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর নেই। নিজের মতো করে বলতেন, যা ভালো মনে করতেন। মানুষের ভালোবাসায় বেঁচে থাকবেন। ওপারে ভালো থাকুন।
কেফায়েত শাকিল নামে একজন লিখেছেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে কি লিখবো এতক্ষণ ভেবেও সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম না। কারণ উনি এত গুণের মানুষ, এক কথায় কিছু শেষ করতে পারছি না। আল্লাহ তাঁকে উত্তম প্রতিদান দিক।
মীর আব্দুল আলীম নামে একজন লিখেছেন, এক জীবনে এর চেয়ে আর বেশি কি চাই। জাফরুল্লাহ চৌধুরী আপনার জীবন মনুষ্যজন্মের স্বার্থক সমাপ্তিতে শেষ হলো। মানুষের জন্য জীবনের অনেক কিছু ছেড়েছেন। আর তাইতো পেয়েছেন গরিব সাধারণ মানুষের ভালোবাসা।
ইশরাত মণি নামে একজন লিখেছেন, মনে আছি কি সেই ডা. জাফরুল্লাহ স্যারকে, যিনি লড়েছেন সেই ভয়াবহ সময়ে মানুষের পাশে থেকে। এমন ভালো মানুষগুলো তাড়াতাড়ি চলে যায় আল্লাহ উনার রুহকে প্রশান্তি দান করুক। এই জাতি আপনাকে কখনো ভুলবে না।
মেহেদী হাসান তালহা নামে একজন লিখেছেন, কিছু মানুষ থাকেন সমালোচনার উর্ধ্বে, হুইল চেয়ারে বসেও দেখিয়েছেন কীভাবে মেরুদণ্ড সোজা রাখতে হয়। আল্লাহ আপনাকে জান্নাতবাসী করুন।
জোবায়ের হাসান শাকিল নামে একজন লিখেছেন, একজন দেশপ্রেমিকের বিদায়।
মোস্তফা মোজাম্মেল মাহমুদ নামে একজন লিখেছেন, জীবনের প্রত্যেকটা মুহূর্তে নিজেকে নি:স্বার্থভাবে এতটা উজাড় করে দেয়া আপনার মতো এমন বীর দেশ আর পাবে কিনা জানি না। আপনি ছিলেন সত্যিকারের বীর। মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন আজীবন। স্যালুট ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সলিম উল্লাহ মেসবাহ নামে একজন লিখেছেন, একজন দেশপ্রেমিক মানুষ চলে গেলেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী আর নেই। মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি একজন অসাধারণ মানুষ ছিলেন। আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন আমিন।
সাখাওয়াত প্রিন্স নামে একজন লিখেছেন, এই দেশে এমন কোনো ব্যক্তি জন্ম নেবেন কিনা, যথেষ্ট সন্দেহ আছে। যে যাই বলুক না কেনো সাধারণ মানুষ আপনাকে আজীবন মনে রাখবে। বিশেষ করে ওষুধ খাতে আপনার অবদানের জন্য। বিদায় জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
বিল্লাল হোসাইন সাগর নামে একজন লিখেছেন, আপনাকে নিয়ে দুই কলম লেখার যোগ্যতা আমার নেই। মহান আল্লাহ যেন আপনাকে জান্নাত দান করেন আমিন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঈশ্বরগঞ্জে জামিয়াতুল মোদার্রেছীনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশকে বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দিল ভারত
বিষ প্রয়োগ ও শিল্প দূষণ বন্ধ করে পশুর নদী ও সুন্দরবন বাঁচাতে হবে
রাশিয়ায় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি
ইসলামের বিধি-বিধান নিয়ে কটুক্তিকারী ড. সৈয়দ জামিল আহমেদকে অপসারণ করতে হবে
সাইবারট্রাক ‘অচল’ করে দেয়ার জন্য মাস্ককে দুষলেন কাদিরভ
ফিরেই পান্তের সেঞ্চুরি, তিন অঙ্কে গিলও
মুখে সুন্নী বললে সুন্নী হওয়া যায়না, আমলের মাধ্যমে সুন্নী হতে হয় -ছারছীনার পীর ছাহেব
রাঙামাটি পৌঁছেছে তিন উপদেষ্টাসহ সরকারের প্রতিনিধি দল
'কাজ না করলে বেতন বন্ধ’, ধর্মঘটকারী ভারতীয় কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিল স্যামসাং
অফ-স্পিনে ৩৯ বার আউট: কোহলিকে যে দাওয়াই দিলেন শাস্ত্রী
মাগুরায় ৮ বছর আগে কেড়ে নেয়া মাইক্রো উদ্ধার মালিককে ফেরত দিলেন যুবদল নেতা
পার্বত্য এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করা হয়নি: নাহিদ
যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তার রহস্যজনক মৃত্যু
সুনামগঞ্জে ২২ লাখ টাকার ইলিশ জব্দ
ছাত্রজনতা হত্যার নির্দেশদাতা বিতর্কিত পুলিশ সদস্যরা এখনো লাপাত্তা
রোগীদের সুস্থ করে তুলতে ‘রোবটের মতো’ কাজ করেছে লেবাননের যে চিকিৎসক
মোদীর সফরের আগে ভারত সরকারের নামে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা পান্নুনের
মিয়ানমার থেকে মণিপুরে অনুপ্রবেশ ৯০০ জঙ্গির, দাবি ভারতের
৪৩ দিন পর কাজে ফিরলেন আর জি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা