‘টাকা-রুপি’ : সেপ্টেম্বরে চালু হবে ডুয়েল কারেন্সি কার্ড: গভর্নর
১১ জুলাই ২০২৩, ০৬:০৯ পিএম | আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৩, ০৮:০৯ পিএম
বাংলাদেশ-ভারত অমদানি-রফতানি বাণিজ্য টাকা ও রুপিতে করার আলোচনা দীর্ঘ এক দশক পর অবশেষে সফল হলো। দেশে রিজার্ভ সংকটের মধ্যে বিষয়টি সামনে আসলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে দুই দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেন করার প্রস্তাব করে ভারত। এরপর চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (একনেক) বৈঠকে বিষয়টি উত্থাপিত হয়। পরের মাসে ভারতের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে টাকা ও রুপিতে বাণিজ্যিক লেনদেনের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু সাম্প্রতিক ডলার সংকটের কারণে ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবার সরাসরি রুপি ব্যবহার করে আমদানি-রফতানির মূল্য লেনদেনের কথা জানিয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১১ জুলাই) থেকে ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রুপির ব্যবহার শুরু করেছে বাংলাদেশ। যা ব্যবসার খরচ কমাবে। বাড়াবে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা। ঢাকায় দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন। একটি পাইলট কর্মসূচি হিসেবে এই লেনদেন চালু হচ্ছে। আপাতত শুধুমাত্র রূপিতে লেনদেন হবে, পর্যায়ক্রমে টাকায়ও লেনদেন চালু হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এখন বাংলাদেশের কোনও ব্যবসায়ী ভারতের সাথে আমদানি বা রফতানির ক্ষেত্রে রুপিতে এলসি খুলতে চাইলে তা করতে পারবেন। এতদিন বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের পুরোটাই হতো মার্কিন ডলারে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ও বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল) ব্যাংক এবং ভারতের স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই) ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্রেডিট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব ইন্ডিয়া (আইসিআইসিআই) ব্যাংক রুপিতে বাণিজ্য লেনদেনের নিষ্পত্তিতে অংশ নিচ্ছে। পরবর্তীতে দুই দেশের আরও ব্যাংক ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়ায় যোগ দেবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়। বাংলাদেশী ব্যাংকগুলো ভারতের দুই ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলেছে। এখন বাংলাদেশের আয় করা রুপী ওই অ্যাকাউন্টে জমা হবে। আবার সেখান থেকেই আমদানির খরচ মেটানো হবে। এক্ষেত্রে, ক্রয় আদেশে মুদ্রা হিসেবে রুপি উল্লেখ করতে হবে। আর টাকা-রুপির বিনিময় মূল্য নির্ধারিত হবে, ডলারের বিপরীতে দুই মুদ্রার দর বিবেচনায় নিয়ে।
কিন্তু ডলারের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর লক্ষ্য নিয়ে যে লেনদেন শুরু হচ্ছে, তার ফলে কার্যত ডলার কতটা সাশ্রয় হবে? এ প্রশ্নে ব্যবসায়ী ও আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। ব্যবসায়ীরা সাশ্রয়ের কথা বললেও, বিশ্লেষকেরা সে বক্তব্যের সাথে একমত নন। তারা বলছেন, সেটি হওয়ার সম্ভাবনা কম, বরং এর ফলে ডলার সংকট বেড়ে যেতে পারে বলেও আশংকা করছেন কেউ কেউ।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ভারতীয় রুপির ব্যবহারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ‘টাকা-রুপি’ ডুয়েল কারেন্সি কার্ড চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। গর্ভনর বলেন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ‘টাকা-রুপি’ ডুয়েল কারেন্সি কার্ড চালু করা হবে। বর্তমানে ডুয়েল কারেন্সি কার্ড চালুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। মূলত ডলার সাশ্রয়ের অংশ হিসেবে কার্ড চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, আমরা সবাই জানি, ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। স্বাধীনতায় তাদের গভীর অবদান। ভারত বাংলাদেশের অন্যতম বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। ১৪+২ বিলিয়ন। সেটেলমেন্ট হয় আকু’র মাধ্যমে রিজার্ভ থেকে ডলার ব্যয় করে। বর্তমানে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় চাপ বেড়েছে। এমন অবস্থায় জি ২০ সম্মেলনে সাম্প্রতিক ভারত সফরে ভারতের গভর্নরে সাথে আলোচনায় ডুয়েল কারেন্সিতে বাণিজ্য চালুর বিষয়টি উঠে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় রুপিতে বাণিজ্য চালু হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারবে রুপিতে। বিল সেটেল করতে পারবে। ২ বিলিয়ন ডলার রফতানি হয়, ১৪০ কোটি মানুষের ভারতের বড় বাজারে আমাদের সম্ভাবনা আছে। তা কাজে লাগাতে হবে। রুপির বাণিজ্য চালু, বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমাতে সহায়তা করবে। আমরা ডুয়েল কারেন্সি কার্ড করছি সেপ্টেম্বরে। আমরা আশা করবো তারাও ডিসেম্বরের মধ্যে চালু করবে।
এর আগে চলতি বছরের ১৮ জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় আব্দুর রউফ তালুকদার জানিয়েছিলেন, এখনও কোনো ধরনের কারেন্সি সোয়াপে যায়নি বাংলাদেশ। ভারতের সঙ্গে রুপি দিয়ে বাণিজ্য করার চেষ্টা চলছে। এখন কেউ ভারত যেতে চাইলে শুরুতে টাকাকে ডলারে রূপান্তর করতে হয়, পরে ভারতে গিয়ে আবার ডলারকে রুপিতে আনতে হয়। পরপর দুবার মুদ্রা ভাঙানোর ফলে মুদ্রার মান কমে যায়।
এতে ভারত ভ্রমণে মুদ্রা বিনিময়ের ঝামেলা কমাতে চলতি বছরের জুলাই-আগস্টের দিকে একটি ক্রেডিট কার্ড চালু করা হবে বলে জানিয়েছিলেন আবদুর রউফ তালুকদার।
সূত্র মতে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্যে রুপিতে লেনদেন গতকাল শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে এ সুবিধা মিলবে টাকাতেও। এতে একদিকে যেমন চাপ কমবে মার্কিন ডলার নির্ভর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর, তেমনি বাড়বে প্রতিবেশি দেশ দুটির আমদানি-রফতানি, যা কমাবে বিদ্যমান বড় অংকের বাণিজ্য ঘাটতিও।
একই অনুষ্ঠানে দুই দেশের অর্থনৈতিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশই ভারতের সবচেয়ে বড় রফতানি গন্তব্য। নতুন এ উদ্যোগে একদিকে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে, তেমনি বাড়বে আমদানি-রফতানি।
প্রনয় ভার্মা বলেন, রুপিতে আমদানি-রফতানি চালুর বিষয়ে ব্যবসায়ীদের দাবি ছিলো। গত ৫ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ হয়েছে। ভারত এশিয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার। আমরাও চাই বাংলাদেশের রফতানি বাড়ুক ভারতে। আশাকরি সেপা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে অল্প সময়ে মধ্যে। রুপির মাধ্যমে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হলো। এতে ব্যবসায় খরচ কমবে, সময় বাচবে, প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে।
ভারতের সাথে বাংলাদেশের রুপিতে বাণিজ্য শুরু হয়েছে তামিম এগ্রো নামের বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ভারতে ১ কোটি ৬০ লাখ রুপির পণ্য রফতানি করে। আর সেখান থেকে এক কোটি ২০ লাখ রুপি ব্যবহার করে পন্য আমদানির ক্রয় আদেশ দিয়েছে ঢাকার আরেকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়ী শাহজাহান মিয়া। ১ রুপির বিপরীতে ১.৩১ টাকায় এদিন লেনদেন হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সামনের দিনে এই কার্যক্রম আরো গতিশীল হবে।
হিসাব বলছে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ভারত থেকে ১ হাজার ৩৬৯ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ, যা চীনের পরেই সর্বোচ্চ (মোট আমদানি ব্যয়ের ১৮ দশমিক ১০ শতাংশ)। এর বিপরীতে দেশটিতে রফতানি করা হয়েছে মাত্র ১৯৯ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য। বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, এবার সুযোগ এসেছে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান বিশাল এ অংকের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর।
অনুষ্ঠানে দু’দেশের প্রতিনিধিরা বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির ৫ম শীর্ষ দেশ ভারত বাংলাদেশের দ্বিতীয় শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদার। তাই বাণিজ্যিক লেনদেন সহজ হওয়ায় আগামীতে বাণিজ্য ঘাটতিও কমিয়ে আনার নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।
রুপির ব্যবহারের উদ্বোধনী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আফজাল করিম, ইস্টার্ন ব্যাংকের এমডি আলি রেজা ইফতেখার, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মো. সলিমুল্লাহ, বিডার চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিঞা, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমেদ ও বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
সূত্র মতে, বিশ্ব বাণিজ্যে একক শক্তিশালী মুদ্রা মার্কিন ডলার। করোনাকালীন ও করোনা পরবর্তী সময়েও লেনদেনে মার্কিন ডলারের ওপর নির্ভরতা ভোগাচ্ছে বিভিন্ন দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে। ডলার সংকটে কোনো কোনো দেশ বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রার ব্যবহার করে লেনদেন শুরু করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশও উদ্যোগ নেয় ভারতের সঙ্গে টাকা-রুপি বিনিময়ের। বেশ কিছুদিন আগে থেকে হাল না ছাড়া এ উদ্যোগ অবেশেষে মুখ দেখেছে আলোর।
প্রাথমিকভাবে একপক্ষীয়ভাবে রুপির মাধ্যমে আমদানি-রফতানি শুরু হবে। পরবর্তীতে এ সুবিধা মিলবে টাকাতেও। এতে বৈদেশিক মুদ্রার চাপ কমবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এই কার্যক্রম আরো গতিশীল ও ব্যবসায়ীদের সহায়তা দিতে, ঢাকায় সোনালী আর ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পৃথক হেল্প ডেস্ক স্থাপনও করা হয়েছ।
গতকাল সোনালী ব্যাংক পিএলসির স্থানীয় কার্যালয়ে প্রধান অতিথি হিসেবে বিশেষ সেবা কাউন্টার ও হেল্প ডেস্কের উদ্বোধন করেন ব্যাংকের সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আফজাল করিম। উদ্বোধন করে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানিতে টাকা-রুপির ব্যবহার চালু হওয়ায় বাংলাদেশের একটি বড় অংকের ডলার সাশ্রয় হবে এবং তাতে রফতানিকারক ও আমদানিকারকসহ বড় একটি গ্রুপ লেনদেনে লাভবান হবেন।
আফজাল করিম বলছেন, সরাসরি রুপিতে লেনদেনের ফলে অন্তত ৪-৬ শতাংশ খরচ সাশ্রয় হবে ব্যবসায়ীদের। একই সঙ্গে প্রথম দিনে লেনদেনে ১ রুপির বিপরীতে ১.২৮ টাকা থেকে ১.৩১ টাকায় লেনদেন হয়েছে।
পোশাক রফতানিকারকদের অন্যতম সংগঠন বিকেএমইএ’র নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেছেন, ভারতের সাথে বাণিজ্যের সময় একবার টাকা থেকে ডলারে, আবার ওদিকে রুপি থেকে ডলারে রূপান্তর করতে হয়। এই রূপান্তর করতে গিয়ে আমরা হিসেব করে দেখেছি ছয় শতাংশের মতো গ্যাপ বা লস হয়। অর্থাৎ ১০০ ডলারে ছয় ডলারের মতো। দুই দেশ নিজস্ব মুদ্রায় লেনদেন করলে ব্যাংক ও ব্যবসায়ীরা এই লস থেকে রেহাই পাবে। একই সঙ্গে একটি মাত্র মুদ্রার ওপর আমদানি-রফতানির নির্ভরশীলতা কিছুটা কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
ব্যবসায়ীরা সাশ্রয়ের কথা বললেও, বিশ্লেষকেরা সে বক্তব্যের সাথে একমত নন। তারা বলছেন, সেটি হওয়ার সম্ভাবনা কম, বরং এর ফলে ডলার সংকট বেড়ে যেতে পারে বলেও আশংকা করছেন কেউ কেউ। পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলছেন, যেহেতু বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বড় ধরণের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, সেজন্য রুপিতে লেনদেনে ডলার-সংকট কমবে না, বরং বাড়বে। তিনি বলেছেন, নতুন ব্যবস্থায় এই বাণিজ্যের ফলে বাংলাদেশ আগে যে দুইশো কোটি ডলার পেতো, সেটা এখন ভারত রুপিতে পরিশোধ করবে। ফলে বাংলাদেশ ওই পরিমাণ ডলার আর পাচ্ছে না। এতে ডলারের সরবরাহ কমে যাচ্ছে।
ড. আহসান এইচ মনসুর বলছেন, রুপিতে বাণিজ্যের সুযোগ আবার সব রফতানিকারকদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। যে ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র ভারত থেকে কাঁচামাল আমদানি করে এবং ভারতেই রফতানি করে তারা হয়তো এই লেনদেনে কিছুটা সুবিধা পাবেন। কিন্তু এতে ব্যবসায়ীদের যে লাভ হবে সেই লাভের অর্থ ডলারে রূপান্তর করা এবং সেখানে প্রকৃত দাম পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি। কেননা রুপির দাম ডলারের দামের মতো স্থিতিশীল নয়।
এদিকে, এ ব্যবস্থার সাফল্যের অনেকটাই রুপি এবং টাকার দর নির্ধারণের ওপর নির্ভর করবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ সিপিডির বিশেষ ফেলো প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, টাকা ও ভারতের মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণে দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। এই পদক্ষেপে বাংলাদেশের কোনও লাভ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ভারত চাইছে, তাদের মুদ্রাকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্তিশালী করতে। ভারতীয় মুদ্রা রুপি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনও রিজার্ভ মুদ্রা নয়। তবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ মুদ্রার ব্যবহার বাড়লে ভারতীয় মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে এবং বাংলাদেশে ভারতীয় রুপির চাহিদা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সূত্র মতে, ভারত মার্কিন ডলারের পাশাপাশি নিজস্ব মুদ্রা রুপিতে নেপাল, ভুটানসহ ১৮টি দেশের সাথে সীমিত পরিসরে বাণিজ্য করছে। তবে দেশটি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের সঙ্গে রুপিতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য শুরু করতে যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বৈদেশিক মুদ্রায় দায়-দেনা পরিশোধের জন্য বিদেশের ব্যাংকগুলোয় বাংলাদেশি ব্যাংকগুলোর চালু করা হিসাবকে ‘নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট’ বলে। এ ধরনের হিসাবের মাধ্যমে গ্রাহকের পক্ষ থেকে বিদেশি ব্যাংকের আমদানি দায় পরিশোধ করা হয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন
রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন
আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী
নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ
বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭
মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল
মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি
উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা
ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের