সচিব বললেন ‘রেগুলার এক্টিভিটিস’
০৬ আগস্ট ২০২৩, ০৭:২৭ পিএম | আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২৩, ১২:০২ এএম
বৈশ্বিক দুর্নীতির ইনডেক্সে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৭ তম। বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)র তথ্য এটি। ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটি (জিএফআই)র তথ্যমতে, বিশ্ব বাণিজ্যের মাধ্যমে মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাচার হয়। টাকার অঙ্কে এটি প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা।
বিগত দেড় দশকে অব্যাহত দুর্নীতি এবং লাগামহীন অর্থ পাচারের ঘটনা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক আলোচনার বিষয়বস্তুতে পরিণত করেছে। তাই আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় ইস্যু হতে চলেছে বর্তমান সরকার আমলে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার। উন্নয়ন অংশীদার ও দাতাদেশ গুলোর মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুও সুশাসন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও দুর্নীতি। মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘের মতো সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে সম্প্রতি উচ্চপর্যায়ের যেসব প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করে গেছেন-ঘুরেফিরে তাদের আলোচনায়ও গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পাশাপাশি প্রাসঙ্গিকতা পেয়েছে সুশাসন, দুর্নীতি ও অর্থপাচার। দুর্নীতিকে বলা হয় সুষ্ঠু নির্বাচন এবং সুশাসনের প্রধান অন্তরায়। আসন্ন নির্বাচনে তাই পশ্চিমা দেশগুলো জোর দিচ্ছে দুর্র্নীতির প্রতি। পরপর উচ্চপর্যায়ের কয়েকটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করে যাওয়ার পরপরই অনেকটা আকস্মিকভাবে ঢাকা সফরে এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিষয়ক সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ’র নেতৃত্বে ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল।
আজ (রোববার) বিকেলে তারা বাংলাদেশের দুর্নীতি বিরোধী একমাত্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পরিদর্শন করেন। বিকেল পৌনে ৪টায় রিচার্ড নেফিউ’র নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি দুদকে আসেন। অপর দুই সদস্য হলেন, স্টেট ডির্পামেন্টের এন্টিকরাপশন অ্যানালিস্ট ডিলান এইক্যানস এবং মার্কিন হাইকমিশনের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ম্যাক্স মার্টিন। দুদক পরিদর্শনকালে তারা দুদক সচিব মো: মাহবুব হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
দুদকের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, স্টেট ডিপার্টমেন্টের এ ধরণের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল দুদকে প্রথম। কারণ এর আগে গতবছর ১৪ সেপ্টেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস দুদক পরিদর্শন করেন। এ সময় সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহর সঙ্গে বৈঠক হয়। গতকালও তিন সদস্যের মার্কিন প্রতিনিধি দল আসেন দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। সরকারি অফিস সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টা পর্যন্ত সেগুনবাগিচাস্থ দুদক কার্যালয় খোলা থাকে। এর পর কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দুদকের নি¤œস্তরের কর্মকর্তাদের প্রায় সবাই অফিস ত্যাগ করেন। এ হিসেব কষে প্রতিনিধি দল বিকেল পৌনে ৪টায় দুদকে পৌঁছান। কিন্তু তাদেরকে রেখেই দফতর ত্যাগ করেন দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দী আবদুল্লাহ ও কমিশনার (তদন্ত) মো: জহিরুল হক। পরে রিচার্ড নেফিউকে কমিশনে স্বাগত জানান দুদক মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন। প্রতিনিধি দলটি পরে দুদক সচিব মো: মাহবুব হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ঘন্টাব্যাপি বৈঠকের পর বিকেল ৫টার দিকে দলটি দুদক কার্যালয় ত্যাগ করেন। তবে এ সময় তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেন নি।
পরে দুদক সচিব মো: মাহবুব হোসেন ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তারা মূলত এসেছেন দুদক কিভাবে কাজ করে সেটি দেখতে। এখানকার আইন, বিধি-বিধান সম্পর্কে ধারণা নিয়েছেন। রিচার্ড নেফিউর দায়িত্ব হলো স্টেট ডিপার্টমেন্টের সমন্বয়কারী। পুরো পৃথিবীতে দুর্নীতি বিষয়ক তথ্য আদান-প্রদান, সংগ্রহ ও এ জাতীয় কার্যক্রমের সমন্বয়কারী। এই টিম দুদক কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা নিলেন। তিনি বলেন, দুর্নীতি এখন শুধু একটি দেশের নয়। এটি গ্লোবাল ইস্যু। গ্লোবালি কিভাবে তথ্য আদান-প্রদান করা যায় সে বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে।
‘পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে তথ্য চেয়ে দুদক অনেক সময় বিভিন্ন দেশে এমএলএআর পাঠান। সেটির উত্তরও আসে না। এমন কোনো তথ্যগত কোনো সহযোগিতা চেয়েছেন কি না-জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, এ ধরণের সুনির্দিষ্ট কিছুতো হবে না। এখানে দুর্নীতি প্রিভেনশনের ক্ষেত্রে পারষ্পরিক সহযোগিতা এবং কিভাবে তথ্য আদান-প্রদান করা যায় তার ভেতর এমএলএআর বলেন কিংবা আরও যা যা তথ্য আছে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে হয়তো আরও অগ্রগতি হবে।
জানতে চাওয়া হয়, দুর্নীতি দমন এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে তারা কোনো দিক নির্দেশনা দিয়েছেন কি না। জবাবে দুদক সচিব বলেন, এখানে ২টি বিষয়। একটি হচ্ছে তারা কিন্তু শুধুমাত্র বাংলাদেশের দুর্নীতির বিষয়ে আলোচনার জন্য আসেননি। দুই নম্বর হচ্ছে, কোনো ধরণের নির্দেশনা বা সহযোগিতার বিষয়েও কথা বলেননি। ওনার দায়িত্বই হচ্ছে পৃথিবীতে যে দেশসমুহ রয়েছে এসব দেশে দুর্নীতি সংক্রান্ত যে তথ্য এবং যেভাবে দুর্নীতি সংঘটন হয়ে থাকে পারষ্পরিক তথ্য-উপাত্ত আদান প্রদানের বিষয়ে কথা হয়েছে।
‘তারাতো বাংলাদেশে এসেছেন । দুদকের কাছে এসেছেন। আপনি বললেন, দুর্নীতি গ্লোবাল ইস্যু। কিন্তু বাংলাদেশের দুর্নীতির মাত্রাগত পার্থক্য রয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের দুর্নীতির বিষয়ে তাদের আলাদা মনযোগ থাকার কথা। তাদের কথা-বার্তায় এমন কোনো মনযোগ পরিলক্ষিত হয়েছে কি না-ইনকিলাব প্রতিবেদকের এ প্রশ্নের জবাবে মো: মাহবুব হোসেন বলেন, মিস্টার নেফিউ কিন্তু বাংলাদেশকে টার্গেট করে আসেননি। তিনি বলেন, মানুষকে বার্তা দেয়ার মতো কিছু এখানে নেই। এটি রেগুলার অ্যাক্টিভিটিস।
নির্বাচনের ৪ মাস আগে মার্কিন প্রতিনিধি দল দুদকে বৈঠক করলেন। দুর্নীতি নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। সাধারণভাবেই জনমনে একটি প্রশ্ন রয়েছে, তারা কি এমনি এমনি দুদকে এসেছেন ? জবাবে দুদক সচিব বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে এই বৈঠকের কোনো সম্পর্ক নেই।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে- কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের নেতা ইয়াকুব চৌধুরী
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত