দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দ্বার খুলছে আজ
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৪ এএম | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৫৪ এএম
যানজট নিরসনে দেশের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দ্বার খুঁলছে আজ। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) প্রকল্পটির অংশ বিশেষের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকার বুকে নির্মিত এ উড়াল পথের প্রথম ফেজ অর্থাৎ কাওলা থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর সর্বসাধারণের জন্য তা খুলে দেওয়া হবে আগামীকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টায়। সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করছেন, এ পথ ব্যবহার করে মাত্র ১০-১২ মিনিটে কাওলা থেকে ফার্মগেটে পৌঁছানো যাবে। তবে, এজন্য গুণতে হবে নির্দিষ্ট পরিমাণ টোল। মূল এক্সপ্রেসওয়েতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার এবং র্যাম্পে ৪০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলতে পারবে।
রাজধানীর বিমানবন্দরের পাশে কাওলা থেকে চিটাগাং রোড এলাকার কুতুবখালী পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম এস আকতার বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম ফেজ কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশের নির্মাণকাজ শেষ হওয়ায় এটি এখন জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। দ্বিতীয় ফেজ তেজগাঁও থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত অংশের কাজ চলমান।
ঢাকা উড়ালসড়ক প্রকল্পটি দুই ভাগে বিভক্ত। মূল নির্মাণকাজ ও সহযোগী কাজ। মূল নির্মাণকাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা সরকার ব্যয় করছে। বাকিটা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান খরচ করছে।
এর বাইরে জমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও পরামর্শকদের পেছনে ব্যয়ে আলাদা একটি প্রকল্প আছে। এর পুরো অর্থই ব্যয় করছে সরকার। বর্তমানে এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দুটি প্রকল্পে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা।
২০০৯ সালে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। ২০১১ সালে নির্মাণের চুক্তি হয়। নির্মাণকাল ধরা ছিল সাড়ে তিন বছর। তবে সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যায়নি।
২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পটির মেয়াদকাল শেষ হবে। পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকাংশে কমে যাবে এবং ভ্রমণের সময় ও খরচ হ্রাস পাবে। সার্বিকভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থার সহজিকরণ, আধুনিকায়ন হলে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জিডিপিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী জুনে দ্বিতীয় ধাপে মালিবাগ, খিলগাঁও, কমলাপুর হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত বাকি অংশ চালুর কথা রয়েছে। তখন এক্সপ্রেসওয়ের পুরোপুরি সুবিধা পাবেন নগরবাসী।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার বিকালে কাওলাপ্রান্তে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। সেখান থেকে তিনি গাড়িতে এক্সপ্রেসওয়ে উঠবেন। টোল পরিশোধ করে যাবেন আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে। সেখানেও উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। সেখানে তিনি বক্তব্য দেবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
জানা যায়, উদ্বোধনের পর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলেও এতে সবাই চলাচল করতে পারবে না। পথচারী, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশাসহ তিন চাকার গাড়ি এতে উঠতে পারবে না। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভও রয়েছে। তবে চলাচল করতে পারবে চার চাকার গাড়ি।
এজন্য ওইসব গাড়িকে টোল গুনতে হবে। প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, পিকআপ ও হালকা ট্রাককে ৮০, বাস ও মিনিবাস ১৬০, মাঝারি ট্রাক ৩২০ এবং ভারী ট্রাক বা ট্রেইলরে ৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) ভিত্তিতে নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কারণে টোলের টাকা থেকে নির্মাণ ব্যয় তোলা হবে।
প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথম ধাপে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে উন্মুক্ত করা হচ্ছে, সেখানে ১৫টি র্যাম্প রয়েছে। এর মধ্যে এয়ারপোর্টে দুটি, কুড়িলে তিনটি, বনানীতে চারটি, মহাখালীতে তিনটি, বিজয় সরনিতে দুটি ও ফার্মগেটে একটি। এই ১৫টি র্যাম্পের মধ্যে মহাখালী ও বনানী অংশে দুটি র্যাম্প বন্ধ থাকবে। বাকি ১৩টি র্যাম্প দিয়ে এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি প্রবেশ ও বের হতে পারবে। তবে যেসব স্থানে গাড়ি নামবে, সেসব পয়েন্টে যানজটের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুয়েটের শিক্ষক গণপরিবহণ বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুল নেওয়াজ বলেন, ওইসব পয়েন্টের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে। নইলে যানজট নিরসনের লক্ষ্য পূরণ হবে না। প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের আশা, প্রথম ধাপের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে প্রতিদিন গড়ে ৮০ হাজার গাড়ি চলাচল করতে পারবে। যদিও ওই সংখ্যক গাড়ি এই এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
প্রকল্পটিতে থাইল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের ৫১ শতাংশ, চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপের ৩৪ শতাংশ এবং সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেডের ১৫ শতাংশ মালিকানা রয়েছে।
এ পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৫.৯৬ শতাংশ। বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত ৪১২.৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড় করেছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
হাসিনাকে ফেরত আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তে কমিশন গঠন
আসাদের পতন, নিজের বেঁচে থাকার গল্প বললেন এক সিরিয়ান শরণার্থী
গভীর রাতে শীতার্ত মানুষের পাশে বিএনপি নেতা আমিনুল হক
বঙ্গতে আসছে 'ফ্যামিলি ফিউড বাংলাদেশ'
সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের অভ্যন্তরীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ সম্পন্ন
পানামা খাল দখলের হুমকি ট্রাম্পের, ভর্ৎসনা পানামার প্রেসিডেন্টের
কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা
পাবনা-৩ এলাকায় অ্যাডভোকেট রবিউলের গণসংযোগ ও কম্বল বিতরণ
পান্থকুঞ্জ ও আনোয়ারা পার্ক নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়
জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া
স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭
রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ
ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা
উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন
ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল