ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ | ২ মাঘ ১৪৩১

‘প্রতিবন্ধী শিশুদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে বিশেষ ভূমিকায় মুনফ্লাওয়ার অটিজম’

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:২৫ পিএম | আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:২৫ পিএম

 

প্রতিবন্ধী শিশুদের বিশেষ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে মুনফ্লাওয়ার অটিজম ফাউন্ডেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর মফিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২০২২ সালে অভিভাবকদের সম্মিলিত উদ্যোগে মুনফ্লাওয়ার অটিজম ফাউন্ডেশন কার্যক্রম শুরু করলেও অত্র ফাউন্ডেশনের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ ১৯৯৮ সাল থেকে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিদের উন্নয়নে বাংলাদেশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। বর্তমানে নকীব খান, চেয়ারম্যান, ও ডাঃ সিরাজী মুনিরা চৌধুরী, সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

রোববার (৩ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এসব কথা বলেন। মফিজুল ইসলাম বলেন, অটিজম রোগটির সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি। উন্নত দেশগুলোতে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক গঠন, বৃদ্ধি বা ফাংশনের অস্বাভাবিকতার কারনে অটিজম হয়ে থাকে। জন্মের সময়, পূর্বে, বা পরে মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার ফলে অটিজম হতে পারে। জেনিটিক ফ্যাক্টরও খুব গুরুত্বপূর্ণ। লালন পালনে অভিভাবকের অবহেলা, অভিভাবকের মানসিক অবস্থা, আদর স্নেহের অভাব থেকে অটিজম হতে পারেনা । আবার পরিবারের আর্থিক অবস্থা, শিক্ষাগত যোগ্যতা বা জীবন যাপনের ধারার উপর নির্ভর করে অটিজম হয় না।

তিনি আরও বলেন, পরিবেশ জনিত কারনে যেমন এম এম আর ভ্যাকসিন, খাবারের গ্লুটেন, ক্যাসিন, ক্যান্ডিডা এলবিকানস নামক ছত্রাক,বিষাক্ত কেমিক্যাল, যেমন মার্কারী, কীটনাশক, শিল্পকারখানার বর্জ্য ইত্যাদিকে দায়ী করা হলেও বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় প্রমান করা যায়নি। অটিজমের কোনো যাদুকরী চিকিৎসা নেই। অটিজম ডায়াগনসিসের কোন বায়োলজিক্যাল মার্কার বা মেডিকেল ডিটেকশন নেই। বিভিন্ন বৈশিষ্ট ও লক্ষণ দেখে অটিজম সনাক্ত করা সম্ভব। আমেরিকান সাইকিয়্যাট্রিক এসোসিয়েশন এর ডিএসএম-৫ বৈশিষ্টের মাধ্যমে সুনির্দিষ্টভাবে অটিজম ডায়াগনসিস করা সম্ভব। অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুর ডায়াগনসিস ও ইন্টারভেনশন যত ছোট বয়সে শুরু করা যায় তত বেশি উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ইন্টারভেনশন বলতে শিশুর সাথে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া, তার উপযোগী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বোঝায়।

তিনি জানান, মুনফ্লাওয়ার অটিজম ফাউন্ডেশনে একদল দক্ষ ও দেশে বিদেশে অটিজম বিষয়ে দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত। অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুদের প্রয়োজন, আগ্রহ ও দক্ষতাকে বিবেচনায় নিয়ে তারা যাতে ভবিষ্যতে আত্মনির্ভরশীল জীবন যাপন করতে পারে সে লক্ষ্যেই তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

মুনফ্লাওয়ার অটিজম ফাউন্ডেশনের কার্যক্রমের বিষয়ে তিনি বলেন, মুনফ্লাওয়ার অটিজম ফাউন্ডেশন যে সমস্ত কার্যক্রম পারিচালনা করছে তার মধ্যে রয়েছে ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ, এ্যাসেসমেন্ট ও মূল্যায়ণ এবং সে অনুযায়ী প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা প্রণয়ন, ঢাকার বাইরের অভিভাবকদেও জন্য প্যাকেজ প্রোগ্রাম, হোম রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রাম, নিয়মিত অভিভাবক ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ, অকুপেশনাল ও সেনসরি প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ ও সেমিনার এর আয়োজন করা, জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কর্মরত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করে অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশু ও ব্যক্তিদের কল্যাণে উপযোগী কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, দরিদ্র ছাত্রদের জন্য যাকাত তহবিল ইত্যাদি।

সংস্থাটির ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, মুনফ্লাওয়ার অটিজম ফাউন্ডেশনের বেশ কিছু পরিকল্পান রয়েছে, যার মধ্যে রেসপাইট কেয়ার ও ডেকেয়ার সার্ভিস চালু করা, ভবিষ্যত পুনর্বাসনের জন্য সম্বনিত উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, অ্যাডভোকেসি, নীতি সংস্কার এবং সচেতনতামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে অটিজম ও অন্যান্য বিশেষ ব্যক্তিদের অধিকার সমুন্নত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।

মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুর প্রতিভা ও সীমাবদ্ধতাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে একটি যথোপযোগী শিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে পারলে এরা বিশেষভাবে উপকৃত হতে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে পরিবারে, সমাজে এই সব শিশুদের গ্রহণযোগ্যতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। একটি বন্ধূসুলভ অনুকূল পরিবেশ পেলে অটিজম বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন শিশুরা সমাজের বোঝা না হয়ে আত্মনির্ভরশীল হতে পারে এবং দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে সর্ম্পক্ত হয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ
সাবেক প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
আরও

আরও পড়ুন

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

ধূমপানকে না বলুন

ধূমপানকে না বলুন

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

জালিমের পরিণতি ভালো হয় না

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

অখণ্ড ভারতের নীলনকশা এবং মুখোশপরা গণশত্রুদের দাস্যবৃত্তি

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

মাজারে হামলা ও উগ্রপন্থা কাম্য নয়

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত

১২ কোটি জনসংখ্যার ৭ কোটি আক্রান্ত