সিন্ডিকেটের কাছে দেশের অর্থনীতি আক্রান্ত : জোনায়েদ সাকী

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:২৩ পিএম | আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:২৩ পিএম

 

 গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেছেন, রাতের আঁধারে যখন বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের সরকার ধরতে আসে তখন তারা পরাক্রমশালী। আর বাজার সিন্ডিকেটকে যখন ধরতে বলা হয় সরকার বলে তাদের ধরা যাবে না। তাদের ধরলে বাজারে নাকি দাম আরো বেড়ে যাবে। এর অর্থ কী দাঁড়ায়, সরকার নিজেই সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট গ্রাম থেকে শুরু করে সমস্ত দেশে বিস্তৃত। দেশের পুরো অর্থনীতি সিন্ডিকেটের কাছে আক্রান্ত।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোল, একরতফা নির্বাচন ও পরিকল্পিত সহিংসতার প্রতিবাদে’ গণতন্ত্র মঞ্চ আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সাকি বলেন, এই অবৈধ সরকারকে কেউ ভোট দিতে যাবে না। আমরা আর এই অবৈধ সরকারকে কোনোভাবে সাহায্য সহযোগিতা করব না। লড়াই চলছে, লড়াই চলবে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা বাংলাদেশের জনগণ মানবে না। ফলে বাংলাদেশের মর্যাদা রক্ষার জন্য, নাগরিকের অধিকার রক্ষার জন্য, এই সিন্ডিকেট উৎখাত করব। এই একতরফা নির্বাচন উৎখাত করব। পরিকল্পিত সহিংসতা করে জনগণকে পুড়িয়ে মারার যে ষড়যন্ত্র, এগুলোকে আমরা উৎখাত করব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রতি প্রশ্ন রেখে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ যদি আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে থাকে তাহলে কেন ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর মানুষের ভোটের অধিকারকে আপনারা ভয় পাচ্ছেন? ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ এনে সাইফুল হক বলেন, গতকালকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন ৭০ শতাংশ মানুষ নাকি শেখ হাসিনার সরকারকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। আমি ওবায়দুল কাদেরকে জিজ্ঞেস করতে চাই— দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ যদি আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে থাকে তাহলে কেন ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে মানুষের ভোটের অধিকারকে আপনারা ভয় পাচ্ছেন? কেন একটা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনকে আপনারা ভয় পাচ্ছেন?

তিনি বলেন, একজন উন্মত্ত জুয়াড়ি যখন জুয়া খেলতে খেলতে সব হারিয়ে ফেলে তখন শেষ পর্যন্ত জুয়ার নেশায় সে তার নিজের পরিবারকেও বাজি ধরে। এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে যেয়ে নানা ধরনের নাশকতা, সহিংসতা করে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপিয়ে তাদের দমন করতে গিয়ে পুরো দেশকে নিয়ে তারা বাজি ধরেছে। জনগণকে নিয়ে বাজি ধরেছে। এই জুয়াড়ির কাছে মানুষ নিরাপদ না, জনগণ নিরাপদ না। দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ কোনোভাবেই নিরাপদ না। সেজন্যই আজকে রাজপথে বিরোধী দলগুলোর ঐক্য গড়ে উঠেছে।

গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা বলেন, আপনারা জানেন কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে দেশ একটা দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়বে। তিনি সে ব্যাপারে একটা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, অগ্রীম ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। পরিস্থিতি খুবই শোচনীয়, সরকার যে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সাধারণ মানুষ বলে বাজারে গেলে মনে হয় না দেশে কোনো সরকার রয়েছে। পরিকল্পিত নৈরাজ্যের মধ্যে দিয়ে এখানে বাজার চলছে। বাজার সিন্ডিকেট এবং সরকার এখন মিলেমিশে একাকার। এদের থেকে পার্থক্য করার কোনো সুযোগ নাই। তিনি বলেন, আমাদের চলমান যে আন্দোলন সেটা আগামীকাল থেকে চলবে। আমাদের যে কর্মসূচি সেটাও চলবে। আমাদের সভা-সমাবেশ-গণমিছিল আমরা অব্যাহত রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশ এমন একটা বিপর্যয়ের মধ্যে আছে সেটাকে একটা যুদ্ধ বলা যায়। ট্রেনে আগুনের ঘটনা আমাদের দেশের পুলিশ প্রধান বলেছেন এটা আন্দোলনকারীরা করেছে। বাংলাদেশের পথে পথে অগ্নিসংযোগ হচ্ছে। বাসে হচ্ছে, ট্রেনেও এর আগে হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রকৃত দোষীকে চিহ্নিত করার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এটা খুবই দুঃখের বিষয়, এই ধরনের ঘটনা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করবে তেমন কোনো প্রতিষ্ঠান নাই। সরকার এমন কোনো প্রতিষ্ঠান রাখে নাই।

এসময় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনসহ গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যান্য নেতারা


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মাঘের শুরুতে আবার আসছে শৈত্যপ্রবাহ
আজ ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, শীর্ষে করাচিতে
টঙ্গীতে ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেফতার ১৩
যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর অভিমত চেয়েছে সরকার
আরও

আরও পড়ুন

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি: দোয়া চাইলেন তারেক রহমান

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি: দোয়া চাইলেন তারেক রহমান

মাঘের শুরুতে আবার আসছে শৈত্যপ্রবাহ

মাঘের শুরুতে আবার আসছে শৈত্যপ্রবাহ

আজহারীর মাহফিলের আগের রাতেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ

আজহারীর মাহফিলের আগের রাতেই মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ

আজ ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, শীর্ষে করাচিতে

আজ ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, শীর্ষে করাচিতে

পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে বিদেশি অস্ত্রসহ ছাত্রলীগ নেতা আটক

পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাইকালে বিদেশি অস্ত্রসহ ছাত্রলীগ নেতা আটক

ফ্যাসিস্টের দোসর সোহানা সাবা পেল ভারতে বড় দায়িত্ব

ফ্যাসিস্টের দোসর সোহানা সাবা পেল ভারতে বড় দায়িত্ব

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে অসন্তোষ বিএনপির

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে অসন্তোষ বিএনপির

মাগুরার শ্রীপুরে কৃষক দলের বিশাল কৃষক সমাবেশ

মাগুরার শ্রীপুরে কৃষক দলের বিশাল কৃষক সমাবেশ

ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?

ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড কানাডার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?

টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা কমল

টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা কমল

নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ড্রেজারসহ ৬ জন গ্রেফতার

নদীতে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় ড্রেজারসহ ৬ জন গ্রেফতার

টিউলিপের পতন, এক রাজনৈতিক অধ্যায়ের অবসান

টিউলিপের পতন, এক রাজনৈতিক অধ্যায়ের অবসান

অভিষেকের আগে শি জিনপিংকে ট্রাম্পের ফোন

অভিষেকের আগে শি জিনপিংকে ট্রাম্পের ফোন

সিরিয়ায় আটক নাগরিকদের দেশে বিচার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ফ্রান্স

সিরিয়ায় আটক নাগরিকদের দেশে বিচার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ফ্রান্স

বিশ্ব ইজতেমার ৭০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন : ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার

বিশ্ব ইজতেমার ৭০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন : ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার

আখাউড়া কালন্দি খালে বইবে জলধারা

আখাউড়া কালন্দি খালে বইবে জলধারা

টঙ্গীতে ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেফতার ১৩

টঙ্গীতে ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেফতার ১৩

৩৩ জিম্মির বিনিময়ে ১ হাজার ৯৭৭ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল

৩৩ জিম্মির বিনিময়ে ১ হাজার ৯৭৭ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল

যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল

যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পদ বাগিয়ে নেন পুতুল

আল-শারা ও শেখ মোহাম্মদের  ঐতিহাসিক টেলি-আলোচনা

আল-শারা ও শেখ মোহাম্মদের ঐতিহাসিক টেলি-আলোচনা