‘নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে’
২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৬ এএম
এবারের নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এবার যেহেতু নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা চক্রান্ত চলছে, সেকারণে নির্বাচনের পরিবেশটা যাতে সুন্দর হয়, উৎসবমুখর হয় এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। একটা অনুরোধ থাকবে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আপনারা বজায় রাখবেন। যার যার ভোট সে চাইবেন। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দেবে সেটাই মেনে নেবেন। সেইভাবেই এই নির্বাচন পরিচালিত হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ছয়টি জেলায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনি জনসভায় যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে এসব জেলার সঙ্গে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি। ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর ও শেরপুর জেলা, ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুর ও বান্দরবান জেলায় নির্বাচনি জনসভা হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের বিজয় নিয়ে আসেছে জনগণ। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা এবং ১৫ আগস্টে নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন তিনি।
বিদেশে শরণার্থী হিসেবে থাকার কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি। ১৯৮১ সালে (আওয়ামী লীগের) সম্মেলনে আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেন তারা। দেশে ফিরে দায়িত্ব নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করি এবং জনগণের ম্যানডেট নিয়ে ২১ বছর পর সরকারে আসি। দেশের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে সরকার জনগণের সেবক, জনগণের কল্যাণে কাজ করি। নিজের সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরে তিনি বলেন, শুধু ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। আমি গ্যাস বিক্রি করবো না এ কথা বলেছিলাম বলেই। খালেদা জিয়া গ্যাস বিক্রি করবে, দেশের সম্পদ বিক্রি করার চক্রান্ত করেই ক্ষমতায় এসেছিল। তারা মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। ২০০৮ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট জয়লাভ করি আর বিএনপি জোট মাত্র ৩০টি সিট পায়। তারপর থেকেই বিএনপির কাজ হচ্ছে নির্বাচনবিরোধী কার্যক্রম। তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন বানচাল করতে ২০১৩ সাল থেকে বিএনপি অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করে। কত মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে এখনও মানবেতর জীবনযাপন করছে। কত মানুষ স্বজনহারাদের বেদনা নিয়ে বেঁচে আছে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দকল করে হত্যা, খুন গিম শুরু করেছি। একই কায়দায় খালেদা জিয়াও একই কাজ শুরু করে। সে কারণে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করে।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা রাজনৈতিক দল বিএনপি, সন্ত্রাসী দল। আরেকটা দল হচ্ছে জামায়াত, যুদ্ধাপরাধীর দল। এরা নির্বাচনে না আসলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ হবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। জনগণের সমাবেশ হলে, ভোটারদের আগমনে এবং ভোটারদের অংশগ্রহণে এখানে নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক— আমরা সেটাই চাই। আর সন্ত্রাসী দল, ওরা নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। ওদের দিয়ে দেশের কোনও কল্যাণ হবে না। দুর্নীতি করা ছাড়া কিছুই দিতে পারবে না। সে কারণে আমরা কিন্তু এটা (নির্বাচন) উন্মুক্ত করে দিয়েছি। নৌকা মার্কা দিয়েছি। পাশাপাশি আরও যারা দাঁড়াতে চায়, তারাও দাঁড়াবে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাজই মানুষ পোড়ানো আর ধ্বংস করা। নির্বাচিত সরকার, গণতান্ত্রিক সরকার ধারাবাহিকভাবে ২০০৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আছে বলেই দেশ উন্নত হয়েছে। আগে যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা তো এক কদমও আগাতে পারেনি। দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিল।
দেশের বর্তমান অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় আসলে এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে পারবে। নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য আপনারা ঘরে ঘরে যাবেন, দুয়ারে দুয়ারে যাবেন, ভোট চাইবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে যেন আমাদের দেশ সেবা করার সুযোগ দেয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দেওয়া ইশতেহার নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের পড়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেই লক্ষ্য নিয়ে মানুষের কাছে গিয়ে নৌকায় ভোট চাওয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, এটা তো আমাদেরই সেøাগান আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো। এই সেøাগান দিয়েই আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি, সংগ্রাম করেছি। সেই কথাটা মনে রেখে যার যার ভোট সে সে চান। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেটাই মেনে নেবেন। সেইভাবেই এই নির্বাচন পরিচালিত হবে।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় তাকলে এ দেশের দরিদ্র থেকে শুরু করে সব মানুষের মুক্তি আসবে এবং এই দেশটা উন্নত-সমৃদ্ধ হবে। ইনশাআল্লাহ, আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে আবার জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে। জনগণের কাছে সেটাই আমাদের দাবি, সেটাই আমাদের আকাক্সক্ষা। জাতির পিতার সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবো।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎ
এর আগে গত ২৮ অক্টোবর নৃশংস হামলায় আহত সাংবাদিকদের একটি দল সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২৮ অক্টোবর সাংবাদিকদের ওপর অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের রেহাই দেয়া হবে না। তিনি বলেন, দেশ অনেক আন্দোলন ও সংগ্রাম দেখেছে। কিন্তু, সাংবাদিকদের কোনো সময় টার্গেট করা হয়নি। হামলাকারীরা সাংবাদিকদের মাথায় আঘাত করে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমার দুঃখ প্রকাশ করার কোনো ভাষা নেই। যারা এ ধরনের জঘন্য কর্মকা-ে জড়িত তারা পার পাবে না। ঘটনার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতির বাড়ি, জজ কোয়ার্টার এবং কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে। এর আগে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলার কোনো নজির নেই। তিনি আরো বলেন, এই ধরনের জঘন্য কাজের আদেশ প্রদানকারীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
শেখ হাসিনা আসন্ন সাধারণ নির্বাচন বানচাল করতে দেশে-বিদেশে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী আহত সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।
গত ২৮ অক্টোবর আহত সাংবাদিকদের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে আহত সাংবাদিকরা তাদের ওপর বর্বর নির্যাতনের বর্ননা দেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবু ও একাত্তর টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদও বক্তব্য রাখেন। এসময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সরকারি দল সমর্থক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভারতের কাছে হারানো ২০০ একর জমি ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ
সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার
যৌথ বাহিনীর অভিযানে ১৩দিনে ১৫৫ অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৭২
ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবীতে বালাগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের মিছিল
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর সাথে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সৌজন্য সাক্ষাৎ
গুলশানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক
যশোরে ৪ দিনের বৃষ্টিপাতে নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, বিপর্যস্ত জনজীবন
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার
৪ ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমালো পাকিস্তান
তারাকান্দায় সাবেক এমপি শরীফসহ ৫৯ আ’লীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা
শার্শায় বাবার কোদালের আঘাতে ছেলে নিহত
গোলাপগঞ্জে ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক
কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর র্যালিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, মসজিদ-মাজার ভাঙচুর, নিহত- ১
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাবিব-বিপ্লব গংদের নির্দেশে পুলিশ নেতা সেজে বিভ্রান্ত করেছিলেন কনস্টেবল জয়
ইসলামের বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠা হলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য জগতবাসী দেখতে পাবে -মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম
যানজটের সমাধান খুঁজতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
মহানবী (সঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করা হলে কোন রাষ্ট্র প্রধানকে পালাতে হবেনা-মিলাদুন্নবী (সঃ) এর আলোচনা সভায় বক্তারা
মসজিদ-মাদরাসা কমিটি থেকে ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীদের বিতাড়িত করতে হবে: আজিজুল হক ইসলামাবাদী
প্রশাসক হতে চান শিক্ষকরা, ঠেকাতে একাট্টা ৪ সংগঠন
বাংলাদেশের এই দলকে সেরা বললেন হার্শা