রাজধানীতে তীব্র যানজট
০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১২ এএম | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১২ এএম
আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আর নির্বাচনবিরোধী কর্মসূচিতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার পল্টন, বিজয়নগর, গুলিস্থান, শাহবাগ, কাওরানবাজার, সায়েন্স ল্যাব এলাকায় সৃষ্টি হয় এ যানজট। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তায় গাড়ি আটকে এ যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকাল ও সন্ধ্যার দিকে এ যানজট তীব্র আকার ধারণ করে।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গুলিস্তানের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে টিএসসি পর্যন্ত র্যালির কারণে চারপাশে যানজট সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে প্রেসক্লাবের সামনে নির্বাচনবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচির জন্যে পল্টন মোড় থেকে হাইকোর্ট মোড় পর্যন্ত যানজট সৃষ্টি হয়। তীব্র যানজটের কারণে রাজধানীতে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালগামী রোগীসহ সাধারণ মানুষ। নির্বাচনের পর আগামী সোমবার থেকে অফিস-আদালত খুলবে। এমন অবস্থায় ব্যস্ততা বেড়েছে রাজধানীবাসীর। দাপ্তরিকসহ প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিতে সকাল থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে ছুটছেন বিভিন্ন পেশাজীবীর মানুষ।
তবে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা বলছেন, তিনদিনের ছুটিতে অনেকেই বিকেলে ঢাকা থেকে গ্রামে বা বিভিন্ন পর্যটন গন্তব্যে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। ফলে বিকেলে ঢাকায় তীব্র যানজট হতে পারে।
এদিন সকালে রাজধানীর মহাখালী, বনানী এলাকায় প্রধান সড়কগুলোতে যান চলাচলে চাপ দেখ গেছে। তবে গুলশান-১ ও ২ এবং রামপুরা রোডে যানবাহনের কিছুটা চাপ দেখা যায়। বিশেষ করে নতুন বাজার থেকে রামপুরা পর্যন্ত সড়কে থেমে যান চলাচল করতে দেখা যায়। এদিকে সকালেও তেজগাঁও, বিজয় সরণি সিগনালে যানবাহনের চাপ বেশি দেখা যায়।
জানা যায়, বর্তমানে নগরবাসীর প্রধান সমস্যা এ যানজট। নগরজীবন যেন থমকে গেছে এ যানজটে। দিন যত যাচ্ছে, যানজট যেন তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যানজটের কারণে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি নগরবাসী। যানজটের কারণে সময়ের অনেক অপচয় হচ্ছে। স্কুল-কলেজে সময়মতো যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। অফিস-আদালতসহ নানা কাজে মানুষের অনেক দেরি হচ্ছে শুধু যানজটের জন্য। অ্যাম্বুলেন্স সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে না পারায় চিকিৎসা করতে দেরি হচ্ছে। এমনকি রোগীর কাছেও সময়মতো পৌঁছাতে পারছে না অ্যাম্বুলেন্স। বেড়েই চলছে অসহনীয় দুর্ভোগ।
যানজট একজন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি আঘাত হানতে পারে। যানজটের জন্য দীর্ঘ সময় রাস্তায় থাকতে হয়। অনেক সময় অল্প দূরত্বের রাস্তাও ঘণ্টার পর ঘণ্টায় পার হওয়া যায় না। এত দীর্ঘ সময় যানজটে থাকার কারণে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। যানজটের কারণে দেশে বায়ুদূষণ ও শব্দদূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখনো অনেক যানবাহন কালো ধোঁয়া সৃষ্টি করে। এগুলো পৃথিবীর জন্য হুমকিস্বরূপ। যানজট একদিনে সৃষ্টি হয়নি। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ফুটপাথ দখল, ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে না চলা, ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি, অপ্রস্থ সড়ক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি প্রভৃতি যানজটের অন্যতম কারণ। যেসব বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, এর জন্যও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। রাস্তাঘাটে খানাখন্দ, গর্ত, ভাঙা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা একদিকে যেমন অসহনীয়, অন্যদিকে যানজট লেগেই থাকে।
যানজট থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, যদি জনগণ ও সরকার একসঙ্গে কাজ করে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি, লাইসেন্সবিহিন গাড়ি সরিয়ে ফেলতে হবে। ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে। ফুটপাথ দখল করে যেসব হকার পসরা বসিয়েছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার প্রভৃতি বানানোর সময় রাস্তার যে ক্ষতিসাধন হয়েছে সেগুলো ঠিক করতে হবে। গাড়ির রুট পরিবর্তন করতে হবে। এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হয়, তাহলে এ যানজট দিনদিন বেড়েই যাবে এবং এ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় বলে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কামাল নামের এক যাত্রী জানান, অসুস্থ মাকে চিকিৎসক দেখিয়ে ফিরছিলাম বাসায়। দুপুর ১টা থেকে শাহবাগে গাড়িতে বসা, শোভাযাত্রা হচ্ছে। এখন আমরা রাস্তায় বসে আছি। কতক্ষণ বাসে বসে থাকতে হয় এর কোনো ঠিক নেই।
পল্টন মোড়ে একটি বাসের সহকারী বলেন, এক ঘণ্টা ধরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। কোনো নড়াচড়া নেই গাড়ির। এসবের কোন মানে আছে, রাস্তা আটক করার। যাত্রীরা আমাদের নানান ধরণের কথা বলে। আসলে সামনে রাস্তায় যানজট আমাদের কোনো কিছু করার নেই।
বৈশাখী পরিবহনের এক যাত্রী বলেন, তিনদিনের সরকারি ছুটি শুরু হচ্ছে। তাই সড়কে যানজট থাকবে। সাধারণত সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সকাল থেকে সড়কে যানজট থাকে। তবে দুপুরের পর থেকে সড়কে যাত্রীচাপ বেড়ে বিকেলে যানজট সৃষ্টি হয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
রামু বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা, তিন পুলিশ সদস্য কারাগারে
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র
আন্দোলনে আহতের দেখতে ঢাকা পঙ্গু ও চক্ষু হাসপাতালে এমপি কায়কোবাদ
চাঁদপুর মেঘনায় মাটিবহনকারী দুটি বাল্কহেডসহ আটক ৯
রামগঞ্জে নিখোঁজের চার দিন পর খাল থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
২০২৪ সালে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ তিনগুণ বৃদ্ধি,অক্সফামের চাঞ্চল্যকর তথ্য
দিল্লি ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হয়ে উঠেছে: রিজভী
ভোটের অধিকার রক্ষায় জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে: সিইসি
ব্র্যান্ড প্র্যাকটিশনার্স বাংলাদেশের আয়োজনে বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস মার্কেটিং ফেস্ট অনুষ্ঠিত
বিরলে জুলাই আগষ্ট অভুত্থানে নিহত
সিআইপির খাল সমূহ পুনঃখনন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ সাত দফা দাবি
চীনে গাড়ি হামলা-হত্যার দায়ে দুই অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
বিজিবির জন্য সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ারশেল কেনা হচ্ছে
শহীদ আসাদের আত্মত্যাগেই আজকের বাংলাদেশ- খোকন
লিটনের ব্যাটে ঢাকার বড় সংগ্রহ
পীরগঞ্জের ৯ জন শিক্ষার্থী'র চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ
জাতীয় প্রতিরক্ষা ইস্যুতে ইরানের দৃঢ় অবস্থান
বঙ্গোপসাগরে নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে মাছ আহরণ, ভেস্তে যাচ্ছে উৎপাদন
‘জুলাই বিপ্লবের’ মাধ্যমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে : সিইসি