‘বিশেষ প্রার্থীদের’ জিতিয়ে আনতে হঠাৎ তৎপরতা
০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:১৩ এএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েকটি আসনে নৌকার প্রার্থীর বাইরে বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে সরকারের ঘনিষ্ঠ কোনো কোনো মহল হঠাৎ তৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি জোটের সাবেক, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির বহিস্কৃতরা। এসব প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারাও নামছে, যাদের অনেকে আগে নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে কিংবা দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলেন। কোথাও কোথাও এসব প্রার্থীর পক্ষে নামতে দলীয় চাপ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ওই আসনগুলোর স্থানীয় ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায় সূত্রে তথ্য জানা গেছে।
আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যে সব আসনের প্রার্থীদের জিতিয়ে আনার জন্য কোনো কোনো মহল তৎপরতা চালাচ্ছে, তাঁরা কেউ আওয়ামী লীগের নৌকার কিংবা দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী নন। তাঁদের বেশির ভাগই এক সময় বিএনপিতে ছিলেন। কেউ কেউ বিএনপি থেকে বেরিয়ে সরকারের প্রেসক্রিপশন মেনে নির্বাচন করছেন।
আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কয়েকটি আসনে যে দলীয় নৌকার প্রার্থী কিংবা স্বতন্ত্রের বাইরের প্রার্থীদের জেতাতে বিভিন্ন মহলের তৎপরতা রয়েছে তা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদেরও অনেকে জানেন। এসব আসনের কয়েকটি নৌকার প্রার্থী রয়েছে। আর কয়েকটিকে আসনে জাতীয় পার্টির বহিস্কৃত নেতারা প্রার্থী রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ২৬টি আসনে ছাড় দেয় আওয়ামী লীগ। তবে সেগুলোর সব আসনে নয় বরং কয়েকটি আসনে জাপার প্রার্থীর পক্ষে থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন জাতীয় পার্টি থেকে বহিস্কৃত হলেও সরকারের খুব ঘনিষ্ঠ কয়েকজন প্রার্থী। এর বাইরে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত কিংবা এক সময় বিএনপি জোটে ছিলেন এমন কয়েকজন প্রার্থী রয়েছে। এমন প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান সিলেট-৬ আসনে শমসের মুবিন চৌধুরী, ফরিদপুর-১ আসনে বিএনএমের শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর। বগুড়ার প্রার্থী বিএনপি থেকে ছেড়ে আসা জিয়াউল হক মোল্লা, বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা সরকার বাদল, বিউটি বেগম ও শোকরানা রয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন কিশোরগঞ্জে বিএনপির বহিস্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান এবং এক সময়ে বিএনপির ২০ দলীয় জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান কক্সবাজারে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। সিলেটে ফুলতলীর পীর হুছামুদ্দীন চৌধুরী, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে তৃণমূল বিএনপি থেকে নির্বাচন করা সাবেক জমিয়ত নেতা শাহীনূর পাশা চৌধুরীও সরকারের ঘনিষ্ঠ মহলের নজর পেয়েছেন বলেও আলোচনা রয়েছে। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। চট্টগ্রাম-২ সুপ্রিম পার্টির সৈয়দ সাইফুদ্দিন মাইজভান্ডারির পক্ষেও তৎপরতা রয়েছে। তবে এই তৎপরতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদেরও কেউ কেউ যুক্ত বলে জানা গেছে। শেষ পর্যন্ত তার পক্ষে থেকে সরে যাওয়ার সম্ভাবনারও কথাও আলোচনা রয়েছে। ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ), পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া), রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ), পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া), রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনেও জাতীয় পার্টির বহিস্কৃত হলেরও সরকারের ঘনিষ্ট হওয়ায় ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তবে এসব আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বাইরে দলটি থেকে মনোনয়ন না পাওয়াদের সমর্থন করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কয়েকটি আসনে জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জেতাতে মাঠে নেমেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এসব আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী নেই। এর মধ্যে কয়েকটি আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসারে কাজ করছেন বলে দলের স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। সেই আসনগুলোর মধ্যে বিএনপি থেকে বহিস্কৃত এবং ওই সাবেক এক নেতা নির্বাচন করছেন। সেগুলো হলো- কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) এবং কক্সবাজার-১। এসব আসনের স্থানীয় দলীয় সূত্রে জানিয়েছে, এসব আসনে বিএনপির বহিষ্কৃত প্রার্থীদের পক্ষে আওয়ামী লীগের অনেকে মাঠে নেমেছেন অনেকটা চাপের মুখে। কোন পর্যায়ে থেকে চাপ এসেছে, এ নিয়ে স্বনামে মন্তব্য করতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট নেতারা।
স্থানীয় ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ২৬টি আসনে আওয়ামী লীগ ছাড় দিলেও যে কয়েকটি আসনে দলটির প্রার্থীদের পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মাঠে আছেন তার মধ্যে অন্যতম চট্টগ্রাম-৫ আসন। সেখানে জাতীয় পার্টির নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে জেতাতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা নেমেছেন। সর্বশেষ আলোচনায় এসেছেন ফেনী-২ আসনে সাবেক সেনা কর্মকর্তা মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। তাঁর পক্ষে ফেনী-৩ আসনের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন হাজারীও নেমেছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে।
১৪ দলের শরিকদের ৬টি আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নৌকা প্রতীকে ভোট করছেন। কিন্তু প্রতিটিতেই আওয়ামী লীগের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এ জন্য ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও জাতীয় পার্টি (জেপি) শীর্ষ নেতাদের জিতিয়ে আনার বিষয়ে আওয়ামী লীগের কাছে বাড়তি তৎপরতা আশা করছে। চট্টগ্রাম-২ আসনে টানা দুবার নৌকা নিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছেন ১৪ দলের শরিক তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। কিন্তু এবার সমঝোতায় আসনটি ভাগে পাননি। আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দেয় প্রয়াত সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ারকে। নজিবুল বশর নিজ দলের প্রতীক ফুলের মালা নিয়ে ভোট করছেন। আরও প্রার্থী হয়েছেন ভোটের আগে নিবন্ধন পাওয়া সুপ্রিম পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ মাইজভান্ডারী। তিনি নজিবুল বশরের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে। ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এ তৈয়ব।
সর্ব শেষ গতকাল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী। সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য বলেন, ১৪ দলীয় জোটের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফটিকছড়িতে নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাঁর প্রতি সম্মান জানানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। ফটিকছড়িতে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে মাঠে থাকলে ভোটের সমীকরণ অন্য রকম হবে। আমার প্রাপ্ত ভোট নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে বাধা হতে পারে। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, প্রথমে সাইফুদ্দিনের পক্ষে কাজ করার একটা বার্তা এসেছিল। এখন তাঁরা নৌকার পক্ষে মাঠে রয়েছেন।
সিলেট-৫ আসনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমেদকে এবং সিলেট-৬ আসনে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রচার শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন জায়গা থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষ ত্যাগ করার চাপ দেওয়া শুরু হয় বলে স্থানীয় কয়েকটি সূত্র জানায়। এরপর দলের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। নুরুল ইসলাম নাহিদের আসনে নির্বাচন করছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একটা অংশ এখন তাঁর পক্ষে মাঠে। এই পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহে ঢাকায় এসে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। শমসের মুবিন চৌধুরীরও ঢাকায় বৈঠকের খবর পাওয়া যায়। স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, নুরুল ইসলাম নাহিদকে ভোটে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দল থেকে।
স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে ফুলতলী পীরের অনুসারীদের একটা প্রভাব সব সময়ই থাকে। এই আসনে এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ইসলামি চিন্তাবিদ মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী। তাঁর বাবা প্রয়াত আল্লামা আবদুল লতিফ চৌধুরী সারা দেশে ‘ফুলতলী হুজুর’ হিসেবে পরিচিত।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাসুক উদ্দিনের জন্য স্বতন্ত্র হুছাম বড় হুমকি হবেন না বলেই মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের একটা অংশ নিজ পক্ষ ত্যাগ করে হুছামুদ্দীনের পক্ষে ভিড়ছেন। এর পেছনে ‘ওপর’ থেকে চাপ আছে বলে আলোচনা রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার-১ আসনে নৌকার প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমেদ মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এক সময় বিএনপির ২০ দলীয় জোটের শরিক এবং কল্যাণ প্রার্থীর চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের পক্ষে কাজ করছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর এ জন্য একটি মত বিনিময় সভায় করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। চকরিয়া আবাসিক মহিলা কলেজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হওয়া ওই মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের পক্ষে চকরিয়া- পেকুয়ার আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের কাজ করতে হবে। তাকে জিতিয়ে চকরিয়া-পেকুয়াকে আরো উন্নত ও সমৃদ্ধ করার পথ সুগম রাখতে হবে। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগ আজ প্রকাশ্যে ঘোষণা দিতে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, নৌকা প্রতিক না থাকায় সৈয়দ ইব্রাহীমকে আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়েছে। তাকে বিজয়ী করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ দিকে গত বুধবার কক্সবাজার-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলমের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ওই আসনের কল্যাণ পার্টির সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এবং বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক। সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বরাবর এমন অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, কিশোরগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীও আছেন। এই আসনে নৌকার প্রার্থী পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ। কিশোরগঞ্জ-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুল কাহার আকন্দ। কিন্তু কয়েক দিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামানকে সমর্থন দেওয়া শুরু করেন। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিতর্কিত মন্তব্য করে কয়েক দফা দলটি থেকে বহিষ্কৃত হন আখতারুজ্জামান। তাঁকে গত রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়ে মাঠে নেমেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ। আর কিশোরগঞ্জ-২ আসনে নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীও আছেন।
স্থানীয় ও আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে, বগুড়ার তিনটি আসনে বিএনপি ছেড়ে আসা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করতে চাপ আছে বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে বিএনপি ছেড়ে আসা সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের পক্ষেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটা বড় অংশ নেমেছে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন। তাঁর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দ্ব›দ্ব রয়েছে। এই সুযোগে এই আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী কয়েকজন একরামুজ্জামানের পক্ষ নিয়েছেন। একরামকে সমর্থন দিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীও। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সমঝোতার কারণে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শাহজাহান আলম মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। তিনি গত নভেম্বরে ওই আসনে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। ফলে নৌকার প্রার্থী না থাকায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে নেমেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হলেন দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। এখানে তাঁর শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। জিয়াউল হকও জাপার নেতা ছিলেন, রওশনপন্থী হিসেবে পরিচিত। তিনি জাপা থেকে বহিষ্কৃত হন। এরপর দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন।
জাপার সঙ্গে সমঝোতার কারণে পিরোজপুর-৩ আসন থেকেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী সরিয়ে নিয়েছে। এখানে জাপার প্রার্থী দলীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. মাশরেকুল আজম। এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন জাপার বর্তমান সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি অংশ তার পক্ষে কাজ করছে বলে জানা গেছে। রুস্তম আলীর পক্ষে স্থানীয় গত ২৬ ডিসেম্বর পথসভায় বক্তব্য দেন গুলিসাখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আরিফ উল হক, সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল আলম, মঠবাড়িয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ ব্যাপারী, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আবু হানিফ খান ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। আওয়ামী লীগের ছেড়ে দেওয়া আরেকটি আসন রংপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জি এম কাদেরের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার। এই আসনের বর্তমান সংসদ সংসদ সদস্য মসিউর রহমান (রাঙ্গা) জাপার মনোনয়ন পাননি। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। রাঙ্গার পক্ষে আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ সব কর্মকান্ডে অংশ নিচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটে রিসিভার নিয়োগের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি
ভারতে অনুপ্রবেশ কালে বিজিবির হাতে আট বাংলাদেশি আটক
জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতিতে এবি পার্টি : নির্বাহী সভায় মজিবুর রহমান মঞ্জু
কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যার সরকারি হাসপাতালে পানি সরবরাহ করলো “ফায়ার সার্ভিস”
ভোক্তার অভিযোগের জন্য ওয়েব পোর্টাল চালু
রামু বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যা, তিন পুলিশ সদস্য কারাগারে
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র
আন্দোলনে আহতের দেখতে ঢাকা পঙ্গু ও চক্ষু হাসপাতালে এমপি কায়কোবাদ
চাঁদপুর মেঘনায় মাটিবহনকারী দুটি বাল্কহেডসহ আটক ৯
রামগঞ্জে নিখোঁজের চার দিন পর খাল থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
২০২৪ সালে বিলিয়নিয়ারদের সম্পদ তিনগুণ বৃদ্ধি,অক্সফামের চাঞ্চল্যকর তথ্য
দিল্লি ফ্যাসিবাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হয়ে উঠেছে: রিজভী
ভোটের অধিকার রক্ষায় জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে: সিইসি
ব্র্যান্ড প্র্যাকটিশনার্স বাংলাদেশের আয়োজনে বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস মার্কেটিং ফেস্ট অনুষ্ঠিত
বিরলে জুলাই আগষ্ট অভুত্থানে নিহত
সিআইপির খাল সমূহ পুনঃখনন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সহ সাত দফা দাবি
চীনে গাড়ি হামলা-হত্যার দায়ে দুই অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
বিজিবির জন্য সাউন্ড গ্রেনেড-টিয়ারশেল কেনা হচ্ছে
শহীদ আসাদের আত্মত্যাগেই আজকের বাংলাদেশ- খোকন