ঢাকা   শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১

ভোটের দিন স্বেচ্ছায় লকডাউন কর্মসূচি পালন করুন : গোলটেবিল বৈঠকে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২৩ এএম | আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:২৩ এএম

৭ জানুয়ারি দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার নির্বাচন। অর্থনীতি ধ্বংস করার নির্বাচন। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণকারী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রহসনের নির্বাচনে কেউ যাবেন না। আগামীকাল ভাগবাটোয়ারার নির্বাচনের দিন স্বেচ্ছায় লক ডাউন কর্মসূচি পালন করুন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে পুরানা পল্টনস্থ বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত একতরফা প্রহসনের নির্বাচন : জনগণের করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, গণঅধিকার পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের(এনডিএম) চেয়ারম্যান ববী হাজ্জাজ,বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, গণ-ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু,বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা তাফাজ্জল হোসেন, মুফতি শরাফত হোসেন।
মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, ৭ জানুয়ারি ভোটের নামে জাতির সাথে প্রহসন করা হচ্ছে। এই প্রহসনের জবাব দিতে হবে। দেশে আগেছিল একদলীয় বাকশাল। এখন আওয়ামী লীগের অধীনে একদলীয় বাকশাল কায়েম করা হচ্ছে। এই নির্বাচন এবং পার্লামেন্ট দেশ জাতির কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। তিনি ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আগামীকাল দেশের জনগণ প্রহসনের নির্বাচনের ভোট দিতে যাবে না। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এতো বড় অন্যায় হয়েছে। জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত ২০১৮ সালের নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, মার্চে দুভিক্ষ আসতে পারে। তথাকথিত নির্বাচনে শক্তি বাড়বে না;বরং শত্রæ বাড়বে। এক মাঘে শীত যায় না। নির্বাচনী ফলাফল যাই ঘোষণা করা হোক সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, দেশে জনগণের সরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চান। বঙ্গবন্ধু একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি বাকশালের আদলে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে বাকশালী কায়দায় দেশ চলছে। বিএনপির প্রায় ২২ হাজার নেতা-কর্মীকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে এককাতারে দাঁড়করিয়েছে। পুরো দেশটাকে দখলদারিত্বে পরিণত করেছে আওয়ামী লীগ। ভোটের ভাতের ও মানুষের ইজ্জতের অধিকার হরণ করেছে এই সরকার। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দূর্বলতা ও কৌশলের অভাবে জেগে উঠা মানুষকে কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। ২০১৪-২০১৮ বিতর্কিত নির্বাচন পার করলেও ৭ জানুয়ারির নির্বাচন রাজনৈতিক বৈধতা পাবে না। ভোটারদের জবরদস্তি করে ভোট কেন্দ্রে নেয়ার প্রচেষ্টা সফল হবে না। একদলীয় শাসন পাকাপোক্ত করার নির্বাচনকে জনগণ গণঅনাস্থা দিবে। তিনি বলেন, ৩০ হাজার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে জেলে রেখে দমন নিপীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চাইছে সরকার। তারা দেশটাকে গৃহযুদ্ধের পথে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ এই সরকারকে বিদায় দিতে রাজনৈতিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশ ও জনগণকে রক্ষা করতে কঠিন লড়াই করতে হবে। জয় হবেই। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী ইসলামী বইয়ে দূর্গার ছবি ছাপানোর ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রী ডা:দিপু মনি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে মানুষকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকাÐের ঘটনায় ৬০ জন মেধাবি সেনা নিহতের দায়ে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ভারত সরকারে পরিকল্পনায় দেশে ডামি নির্বাচন হচ্ছে। খুব সহসায় এই সরকারের পতন হবে। দেশে ডলার সঙ্কটের দরুণ আমদানী বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, মোদি সরকার বাংলাদেশকে সিকিম ভুটান বানাতে সফলতার দিকে যাচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ৭ জানুয়ারি সরকারের পতন দিবস পালন করতে হবে। এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, সরকার বিরোধী যুগপথ আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে হবে। গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বিএনপির প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে কারাবন্দি রেখেছে। গত ৬ মাস যুগপথ আন্দোলন করেও ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনকে ঠেকাতে পারিনি। তাদের মাষ্টার প্লান হচ্ছে তারা ক্ষমতা ছাড়বে না। ঐক্যবদ্ধভাবে সরকার বিরোধী আন্দোলন করতে হবে। এবি পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভাইরাস। তিনি ওই দিনটিতে স্বেচ্ছায় লকডাউন কর্মসূচি পালন করার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান। তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি ফেলানি হত্যা দিবস। ওই দিবসটি ভুলাতে চায় ওরা। তিনি বলেন, ৯২ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। মাওলানা মামুনুল হক, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীসহ কারাবন্দিরা মুক্তি পায় না। ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে নির্যাতিতরা আজ এক কাতারে। প্রহসনের নির্বাচনে গেলে ৫০ কোটি টাকা পেতাম। আবার টাকা না পেয়ে অনেকেই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করছে। ফ্যাসিবাদ সরকারের দালালদের চিহ্নিত করতে হবে। নুরুল হক নুর বলেন, মাওলানা মামুনুল হককে চরিত্র হননের নাটক সাজিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, মদিনার সনদে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা বলে সরকার পশ্চিমাদের খুশি করতে সমকামিতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। নুর বলেন, ফেরাউনী শাসন চালিয়ে নূহ নবীর নৌকার সাথে তুলনা করে ভোট চাইছে। তিনি আগামীকালের নির্বাচনের ভোট বর্জনের আহবান জানান। সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, দেশ, জাতি ও মানুষের ভোটের ভাতের অধিকার রক্ষায় আগামীকালের প্রহসনের নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ফিরে আসছে: উপদেষ্টা নাহিদ

আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ফিরে আসছে: উপদেষ্টা নাহিদ

কমলা হ্যারিস জিতলে বিনিয়োগ তুলে নেয়ার হুমকি প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওয়ারেন বাফেটও: ইলন মাস্ক

কমলা হ্যারিস জিতলে বিনিয়োগ তুলে নেয়ার হুমকি প্রস্তুতি নিচ্ছেন ওয়ারেন বাফেটও: ইলন মাস্ক

বান্দরবানের রুমায় অস্ত্র গোলাবারুদ জ্যামার উদ্ধার

বান্দরবানের রুমায় অস্ত্র গোলাবারুদ জ্যামার উদ্ধার

প্রথমবারের মতো ছুটির দিনেও চলছে মেট্রো

প্রথমবারের মতো ছুটির দিনেও চলছে মেট্রো

বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ ও বিচারের দাবীতে খুলনায় মানববন্ধন

বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ ও বিচারের দাবীতে খুলনায় মানববন্ধন

শেখ হাসিনার দলবলকে আগলে রেখেছে বর্তমান প্রশাসন: সেলিমা রহমান

শেখ হাসিনার দলবলকে আগলে রেখেছে বর্তমান প্রশাসন: সেলিমা রহমান

রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০ জনে

মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০০ জনে

অনতিবিলম্বে ভিসি নিয়োগ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী ইবি শিক্ষার্থীদের

অনতিবিলম্বে ভিসি নিয়োগ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী ইবি শিক্ষার্থীদের

৩শ' আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

৩শ' আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বরিশালে রাইজিং স্কলার অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ অনুষ্ঠিত

বরিশালে রাইজিং স্কলার অ্যাওয়ার্ড ২০২৪ অনুষ্ঠিত

ঈশ্বরদীতে সাপের কামড়ে ১ ব্যাক্তির মৃত্যু

ঈশ্বরদীতে সাপের কামড়ে ১ ব্যাক্তির মৃত্যু

৭ দিনের রিমান্ডে মশিউর রহমান

৭ দিনের রিমান্ডে মশিউর রহমান

সিলেট মহানগর শ্রমিক কল্যাণের ট্রেড ইউনিয়নের দিনব্যাপী কর্মশালা সম্পন্ন

সিলেট মহানগর শ্রমিক কল্যাণের ট্রেড ইউনিয়নের দিনব্যাপী কর্মশালা সম্পন্ন

দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের ৪ ডিগ্রী বেশী মধ্য শরতের দুঃসহ গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত

দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের ৪ ডিগ্রী বেশী মধ্য শরতের দুঃসহ গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত

নামাজের আগে বায়তুল মোকাররমে নাটকীয়তা

নামাজের আগে বায়তুল মোকাররমে নাটকীয়তা

জয়সয়ালকে ফেরালেন নাহিদ

জয়সয়ালকে ফেরালেন নাহিদ

সরকারের শিক্ষা-গণমাধ্যমসহ আরও কিছু সংস্কার কমিশন করার পরিকল্পনা আছে : নাহিদ

সরকারের শিক্ষা-গণমাধ্যমসহ আরও কিছু সংস্কার কমিশন করার পরিকল্পনা আছে : নাহিদ

তাসকিনের শিকার রোহিত

তাসকিনের শিকার রোহিত

কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ফাঁসির আসামি গ্রেপ্তার হলো ধামরাইয়ে

কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ফাঁসির আসামি গ্রেপ্তার হলো ধামরাইয়ে