নীলফামারী সৈয়দপুর বাজারে উঠতে শুরু করেছে উত্তরের জনপদ রংপুর অঞ্চলের অত্যন্ত জনপ্রিয় নাপা শাক। সিদল তৈরিতে বড় অনুষঙ্গ এই নাপা শাক। তবে রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী জেলায় বাসিন্দাদের প্রিয় খাবার নাপা শাক দিয়ে তৈরি পেলকা। ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয় এই শাক।

দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের লোক এই শাকের নামই হয়ত জানেন না। অথচ রংপুর অঞ্চলের লোকদের কাছে এটা এমনই একটা শীতকালীন খাবার, যার সঙ্গে জড়িত আছে আনন্দের স্বাদ। একটা উৎসবের আমেজ।
এ শাক খাওয়ার সময় সাধারণত মানুষ একটা কাঁচা আকালিও চিবায়। রংপুর অঞ্চলের মানুষ কাঁচা মরিচকে আকালি বলে। এ শাক রান্না করা খুবই সহজ, সময়ও লাগে খুব কম। ফুটন্ত তেলে পরিমাণ মতো লবণ, কয়েকটা কাঁচামরিচ, কিছু পেঁয়াজ, হয়তোবা এক কোয়া রসুন দিয়ে পরিমাণ মতো পানি ঢেলে দেওয়া হয়। ফুটন্ত সেই পানিতে নাপা শাক ছেড়ে দিয়ে ঢাকনা দিলেই হয়। খাওয়ার জন্য নাপা শাক প্রস্তুত।

পানির ওপর নাপা শাকের পাতা ভেসে থাকে। খেতে পিচ্ছিল লাগে। দেখতে গোল! ছোট পানের পাতার সমান। এছাড়া এ শাকের সঙ্গে বথুয়া শাক মিশিয়ে তৈরি করা হয় পিচ্ছিল পেলকা। এটিও সমান জনপ্রিয় এই জনপদের মানুষের কাছে।

জেলার সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের শ্রমিক তহিদুল ইসলাম জানান, আমরা মূলত মানুষের বাড়িতে কাজ করে থাকি। অন্যের বাড়ির রান্না খাওয়া হয় অনেক। নাপা শাকের মৌসুমে এ শাক না খাওয়ালে তৃপ্তি হয় না। তাই কারো বাড়িতে কাজ করলে আবদার থাকে নাপা শাক বা পেলকার।

তিনি বলেন, নাপা শাক নীলফামারী জেলাসহ আশপাশের এলাকায় খুবই জনপ্রিয়। মৌসুমে এই শাক পাতে না থাকলে তৃপ্তি মেলে না যেন। তবে রংপুরের কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও বগুড়া জেলাতে এই নাপা শাকের চাহিদা কম। অনেক জায়গায় খান না কেউ কেউ। এ জনপদের কোনো নারীর বিয়ে ওইসব এলাকায় হলে বাপের বাড়ি থেকে নাপা শাক আনার বায়না থাকে। এভাবে চলছে বছরের পর বছর।