ভারতীয়রা বাংলাদেশ থেকে ১০ মাসে ৫০ মিলিয়ন ডলার নিয়ে গেছে : অর্থমন্ত্রী
২৫ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১২:০৪ এএম
চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জুলাই থেকে এপ্রিল (১০ মাস) পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে বিদেশে রেমিট্যান্স গেছে ১৩ কোটি ৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। এর প্রায় ৪০ শতাংশই অর্থাৎ ৫ কোটি ৬ লাখ ডলার নিয়েগেছে ভারতীয়রা। দেশের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সরকারি ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৫১ হাজার ৩৯১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের (একে) আজাদের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের বছরের আয় সংশ্লিষ্ট তথ্য বাংলাদেশে ব্যাংকে সংরক্ষিত নেই। চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকেরা তাঁদের আয় থেকে ১৩০ দশমিক ৫৮ মিলিয়ন ডলার নিজ দেশে নিয়ে গেছেন। কোন দেশের নাগরিকেরা কত ডলার নিয়েছেন সেই তথ্য জানিয়ে সংসদে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত ৫০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন ডলার, চীন ১৪ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন ডলার, শ্রীলঙ্কা ১২ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার, জাপান ৬ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার, কোরিয়া ৬ দশমিক ২১ মিলিয়ন ডলার, থাইল্যান্ড ৫ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাজ্য ৩ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলার, পাকিস্তান ৩ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ৩ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়া ২ দশমিক ৪০ মিলিয়ন ডলার, অন্যান্য দেশের নাগরিকেরা ২১ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলার নিজ দেশে নিয়ে গেছেন। চট্টগ্রাম-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে কর্মরত কোনো ব্যাংকেই আর্থিক সংকট নেই। তবে কিছু ব্যাংকে উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি এবং তারল্য সমস্যা বিদ্যমান আছে। এ সকল সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন করে কর্মকর্তা ৯টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পর্যবেক্ষক হিসেবে এবং সাতটি ব্যাংকে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি, খাদ্যপণ্য ও সারের মূল্য কমে আসা, খাদ্য ও সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য উদ্যোগ এবং অসহায় গরিব মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য যে সকল কার্যক্রম চলছে, এর প্রভাবে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আমরা মনে করছি। আব্দুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অর্থ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। মূল্যস্ফীতির চলমান সংকটের মূলে যে কারণগুলো রয়েছে তা হলো বৈশ্বিক পণ্য বাজারে সরবরাহে অনিশ্চয়তা, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং দেশের বাজারে সরবরাহ শৃঙ্খলে ত্রæটি। অর্থনৈতিক এ সংকট কাটিয়ে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সরকার বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’ এম আবদুল লতিফের আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় আমানতকারীগণ এ সকল নানাবিধ স্কীম, ক্ষুদ্র শিল্পখাতসহ আয়-উৎসারী বিভিন্ন খাতে সরাসরি বিনিয়োগ করছেন। ফলে আস্থাহীনতা ও মূল্যস্ফীতির কারণে নয় বরং বিবিধ বিনিয়োগ প্রকল্পসমূহ আকর্ষণীয় হওয়ায় ও সরাসরি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির আমানত কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ কেলেঙ্কারি বন্ধে খেলাপি ঋণগ্রহীতা ও ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণকরত চিহ্নিতকরণ এবং উক্ত ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন নিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে খেলাপি ঋণ গ্রহীতা ও ইচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণ গ্রহীতা সম্পর্কিত বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং সে মোতাবেক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করে সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এছাড়াও ঋণের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণের নিমিত্তে বিতরণকৃত ঋণের অর্থ উদ্দিষ্ট খাতের পরিবর্তে যাতে অন্য খাতে ব্যবহৃত না হয় এবং অর্থের সঠিক ব্যবহার হয় তা নিয়মিত তদারকির জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ব্যাংকগুলোর সবচেয়ে বেশি ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা পাওনা আছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেনের (বিএডিসি) কাছে। এছাড়া বড় অংকের টাকার মধ্যে চিনি কলগুলোর কাছে পাওনা প্রায় ৭ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা, সার, রাসায়নিক ও ওষুধ শিল্পের কাছে পাওনা ৭ হাজার ২৫০ কোটি টাকা, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কাছে পাওনা ৫ হাজার ১৮ কোটি টাকা, বাংলাদেশ বিমানের কাছে পাওনা ৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। সরকারি দলের সংসদ সদস্য মাহবুব উর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশে কোনো ব্যাংকে আর্থিক সংকট নেই। তবে কতিপয় ব্যাংকে উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি ও তারল্য সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন করে কর্মকর্তা নয়টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পর্যবেক্ষক হিসেবে এবং সাতটি ব্যাংকে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কালিয়াকৈর পুকুর থেকে নারী ও শিশুর লাশ উদ্ধার
চেয়ারে দাঁড়িয়ে ইয়ানসেনের ইন্টারভিউ নিলেন দুই সঞ্চালক!
আজ নায়ক রাজ রাজ্জাকের ৮৩ তম জন্মদিন
ভর্তির টাকা নেই মেডিকেলে চান্স পাওয়া প্রান্তির
খুলনায় হিফজ এ্যাওয়ার্ড ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
বিএনপিতে চাঁদাবাজ অত্যাচারী ও দখলবাজের কোন জায়গা নেই -আমান উল্লাহ আমান
কুষ্টিয়ায় যুবদল কর্মীকে হুমকি দিয়ে আলোচনায় হাবলু মোল্লা
কুষ্টিয়ায় সেনা অভিযানে অস্ত্র-গুলি-ককটেল উদ্ধার
কুষ্টিয়ায় ইউসুফ শেখ হত্যা মামলার পলাতক আসামী পুলিশের হাতে আটক
ঈশ্বরগঞ্জে ইউএনও’র সরকারি মোবাইল নাম্বার ক্লোন করে টাকা দাবি
পটুয়াখালীতে ড.মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিল নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়
উত্তরা রাজউক জোনাল অফিস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন
বড় বড় কোম্পানি বাংলাদেশে ইনভেস্ট করতে চায়: প্রেস সচিব
দেশের স্বার্থে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের
বিপ্লবী ছাত্রদের স্বপ্ন ভেঙে পড়ছে বেকারত্বে
মেম্বারকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
রংপুরকে মাটিতে নামাল রাজশাহী
দাম কমল রিয়েলমি সি৬৩ স্মার্টফোনের
দোয়ারাবাজারে রাস্তা নির্মান কাজে বালু ব্যবহার! কাজ বন্ধ করল এলজিইডি
ঘুমন্ত কিশোরীসহ তিন জনকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা