জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদেও বাণিজ্য
২৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪, ১২:০৭ এএম
জন্ম-সনদ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে দেশের ইউনিয়ন পরিষদ এবং ওয়ার্ড কাউন্সিল অফিসগুলোতে। বিক্রি হচ্ছে মৃত্যু-সনদও। প্রার্থীর চাহিদা অনুযায়ী মিলছে সনদগুলো। ঝক্কি-ঝামেল মুক্ত সনদ পাইয়ে দিতে সৃষ্টি হয়েছে শক্তিশালী দালাল সিন্ডিকেট। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন ডিজিটাল হলেও অর্থের বিনিময়ে নেয়া সনদে থাকছে বহু ভুল ও বিভ্রান্তি। যার একতরফা মাশুল গুণতে হচ্ছে ভুক্তভোগীকেই। ফলে দুর্নীতি, জালিয়াতি, ভোগান্তি, হয়রানি ও নৈরাজ্যের আরেক নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ’। সচেতন সমাজ মনে করছেন, নাগরিকের কেন্দ্রীয় তথ্য সম্ভার (সেন্ট্রাল ডাটাবেজ) থাকা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ে কেন এতো নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি জিইয়ে রাখা হয়েছে, সেটির কারণ উদঘাটন জরুরি।
প্রাপ্ত তথ্যে জানাযায়, সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাতে লাগে জন্ম-নিবন্ধন সনদ। এনআইডি, পাসপোর্ট করাতেও লাগছে এটি। চাকরির দরখাস্ত, সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, নাম জারি, ভিজিএফ কার্ড, বয়ষ্কভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, করোনা টিকাসহ নাগরিকের অনেক মৌলিক অধিকার লাভের ক্ষেত্রেও জুড়ে দেয়া হয়েছে জন্ম-সনদ শর্ত। এছাড়া ওয়ারিশ নির্ধারণ, সম্পত্তির ভাগ-ভাটোরাসহ নানা ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়ছে মৃত্যু নিবন্ধন সনদও। নাগরিকের জন্য এখন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে উঠেছে জন্ম এবং মৃত্যু নিবন্ধন সনদ। এই সনদ নিতে ইউনিয়ন এবং পৌর পরিষদে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। এই সুযোগে ইউপি চেয়ারম্যান এবং পৌর মেয়রদের দফতর হয়ে উঠেছে দুর্নীতির আখড়া। নিবন্ধন প্রত্যাশীর নানা ভুল-ত্রæটি ধরে চলছে হয়রানি। নিবন্ধন ডিজিটাল হলেও দুর্নীতিটি হচ্ছে অ্যানালগ। চেয়ারম্যান ও মেয়রের অধীনস্থ কর্মচারিরা প্রায় প্রতিটি জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন থেকেই নিচ্ছেন অর্থ। সর্বনিম্ন দেড়শ’ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। বিপরীতে দেয়া হচ্ছে না কোনো রশিদ। ঘুষের বিনিময়ে কেনা জন্ম-মৃত্যু সনদে পরবর্তীতে ধরা পড়ছে নানা ভুল-ত্রæটি। এসব সংশোধনে ফের ছুটতে হয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কিংবা পৌর মেয়র দফতরে। আবারও গুণতে হয় অর্থ। পুরো কাজ নির্বিঘেœ সেরে দেয়ার ‘প্যাকেজ’ নিয়ে সক্রিয় রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট বা দালাল চক্র। স্থানীয় টাউট, প্রতারক, জালিয়াতের সমন্বয়ে গঠিত এই সিন্ডিকেটের ওপর রয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক ছত্র ছায়া। ফলে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ প্রাপ্তির ভোগান্তি, দুর্নীতি ও জালিয়াতিকে ‘নিয়তি’ বলেই মেনে নিতে হচ্ছে নাগরিককে।
দালালদের দৌরাত্ম্য : জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় সূত্র জানায়, শিশু জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। ২ বছরের মধ্যে নিবন্ধন না করালে অভিভাবকদের জন্য অর্থদÐের বিধান রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করালে কোনো ফি নেয়ার বিধান নেই। তবে জন্ম-মৃত্যুর ২ বছরের মধ্যে নিবন্ধন না করালে প্রতিবছরের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ৫ টাকা এবং পৌর বা সিটি করপোরেশন এলাকায় ১০ টাকা হারে ফি নেয়া যাবে। জন্ম বা মৃত্যু সনদের মূল বাংলা এবং ইংরেজি কপি সরবরাহের সরকারি কোনো খরচ নেই। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণই ভিন্ন। বিশেষত করোনা টিকা কার্যক্রম চলাকালে এই বাস্তবতা উৎকট চিত্রই ফুটে ওঠে। করোনা টিকার রেজিস্ট্রেশনের জন্য জন্ম নিবন্ধন থাকার শর্ত জুড়ে দেয়া হয়। তখন ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌর মেয়র কার্যালয় থেকে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ-শিশুর জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহের হিড়িক পড়ে। তখন নিবন্ধ প্রতি দেড়শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি নেয়া হয় কোনো প্রকার মানি রিসিপ্ট ছাড়া। কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদ ইচ্ছে মতো কিছু বিধানও প্রণয়ন করে নিযেছে। নিবন্ধন প্রার্থীর বাড়ির চৌকিদারি খাজনার রশিদ, হোল্ডিং ট্যাক্স রিটার্ন সনদ এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় আয়কর রিটার্নের হালনাগাদ সনদ প্রদর্শনও বাধ্যতামূলক করা হয়। এ প্রেক্ষাপটে সৃষ্টি হচ্ছে নিত্য নতুন দালাল চক্র। চক্রের সদস্যদের হাতে নগদ টাকা গুঁজে দিলে কোনো প্রশ্ন করা হতো না। ঘরে বসেই মিলতো চাহিদানুগ জন্ম-নিবন্ধন সনদ। তবে এতে পরবর্তীতে পরে ভুয়া প্রমাণিত হয়। কম্পিউটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রæত নিবন্ধন সনদ তৈরি করে দেয় চক্রের সদস্যরা। ভুয়া সনদ পরবর্তীতে অন্য কাজে ব্যবহারের জন্য দাখিল করলে পড়তে হয় নতুন হয়রানিতে।
ভুলের দায় কার?
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অরূয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়ার সময় ধরা পড়ে অনেক ভুয়া সনদ। কম্পিউটার দোকান থেকে অন্যজনের জন্ম সনদ স্ক্যান করে তৈরি করা হয় সনদ। সনদগুলো অনলাইনে যাচাই করলে নাম ও জন্ম তারিখে গরমিল পাওয়া যায়। একজনের নামে সার্চ দিলে অন্যজনের তথ্য চলে আসে। ওই স্কুলের শিক্ষার্থী শাপলা আক্তার বলেন, আমার ভাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম সনদ এনেছেন। টিকার নিবন্ধন করতে গেলে অনলাইনে আমার ওই সনদ পায়নি। তাই টিকার নিবন্ধন করতে পারছিলাম না। তবে এ ঘটনার দায়িত্ব নিচ্ছেন না অরূয়াইল ইউপি’র তৎকালিন সচিব নারায়ণ চন্দ্র দাস। তিনি বলেন, সরাইল উপজেলার বেশ কয়েকটি কম্পিউটার দোকানে গ্রাফিক্স সফট্ওয়্যার ফটোশপ ব্যবহার করে এসব জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করছে একটি সিন্ডিকেট। তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের স্বাক্ষর জাল করছে। এছাড়া জন্ম নিবন্ধনের গুরুত্বপূর্ণ ত্রæটি সংশোধনের জন্য ওই চক্রটি ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকিয়েছে। চেয়ারম্যান ও সচিবের সই ও সিল নকল করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করছে।
ঢাকার সরকারি চাকরিজীবী আতাউল্লাহ খান নিজ অভিজ্ঞতার বর্ণনায় বলেন, মেয়ের জন্ম নিবন্ধন করাতে গিয়ে পড়েছি বিপাকে। ইউপি সচিব মেয়ের মা-বাবার জন্ম নিবন্ধনের কপি চাইলেন। ওটা দিলাম। কম্পিউটারে সচিব ওটা ভেরিফাই করতে গিয়ে দেখলেন, নিবন্ধন নম্বর এবং আমার নাম ছাড়া সব তথ্যই ভুল। বাধ্য হয়ে পরে নিজের জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে হলো।
বেসরকারি ব্যাংকের কাস্টমার রিলেশন্স অফিসার অমৃতা ইসলাম পাসপোর্ট করাতে গিয়ে পড়লেন দারুণ বিপাকে। নিজের সার্টিফিকেটে বাবা-মায়ের নাম এক, এনআইডি কার্ডে আরেক। মায়ের জন্ম-নিবন্ধনে নাম এক রকম। পিতার আরেক রকম। জন্ম নিবন্ধনের ভিত্তিতে মায়ের নামে কেনা সম্পত্তির সাফকবলা দলিলে যেসব তথ্যের উল্লেখ রয়েছে সেটির সঙ্গে বাবার এনআইডি’র তথ্যের ব্যাপক গরমিল। বাবা-মায়ের এনআইডি এবং জন্ম নিবন্ধন তথ্যের মিল না থাকায় অমৃতার সব ভাই- বোন সরকারি চাকরির জন্য আবেদন, পাসপোর্ট ও ভিসা আবেদন এমন কি বিসিএস এ আবেদন করতে পারছেন না। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়েও পড়েন বিপাকে। এ অবস্থায় কোত্থেকে সংশোধন শুরু করবেন, কারটা সংশোধন আগে করবেন-বুঝে উঠতে পারছেন না।
টাকা যায় কার পকেটে? জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০১ সালে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন প্রকল্প চালু করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ব্যক্তির নাম আর একটি নিবন্ধন নম্বর দিয়ে তখন ইস্যু করা হয় জন্ম সনদ। প্রকল্পের আওতায় ২০১০ সালের অক্টোবর থেকে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অন্তত ৫ শতাধিক নিবন্ধক অফিস এবং ২৪টি দূতাবাস থেকে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন শুরু হয়। এর পর থেকে একের পর এক বেরিয়ে আসছে ভুল-ত্রæটি। কারো নাম ঠিক আছে তো বাবার নাম ঠিক নেই। কারো ঠিকানা ভুল। কারো নিজের নামে রয়েছে বানান বিভ্রাট। তথ্য দ্রæত কম্পিউটারে অন্তর্ভুক্ত করতে গিয়ে এসব বিভ্রাট হয়েছে বলে জানায় রেজিস্ট্রার দফতর। প্রথম ডাটা এন্ট্রির জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত কর্মী মিলছিলো না। ফলে দেখা যায়, একই পরিবারের সবার জন্ম নিবন্ধনে কোনো না কোনো ভুল রয়েছে। সাধারণ নাগরিককে যার মাশুল টানতে হচ্ছে এখনও।
সূত্রটি জানায়, গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ মাসে নতুন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন পড়ে ৭৫ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৫টি। আর সংশোধনের আবেদন পড়ে ৩৬ লাখ ৯৩ হাজার ৪৮৯টি।
সূত্রমতে, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়ে ১৯ কোটি ৯ লাখ ৯১ হাজার ৩২৫ জনের জন্ম নিবন্ধনের তথ্য রয়েছে। মৃত্যু নিবন্ধন রয়েছে ২০ লাখ ২২ হাজার ৯২৭ জনের। অথচ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সর্বশেষ জনশুমারি বলছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের মোট জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১ হাজার। তাহলে বাড়তি প্রায় ২ কোটি মানুষ কোথায় গেলো ? সরকারি দুই প্রতিষ্ঠানের কোনটির তথ্যটি সঠিক ? বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিষয়টি রহস্যজনক। তাদের মতে, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন দফতরের ২ কোটি জনসংখ্যাটি ভুতুড়ে।
কারণ, সামাজিক নিরাপত্তামূলক অন্তত: ১২০ ধরণের সরকারি ভাতাদি রয়েছে নাগরিকের জন্য। বয়ষ্ক ও বিধাব ভাতার মতো নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হয় ৯টি খাতে। খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানমূলক কার্যক্রম চালু রয়েছে ১১ ধরণের। ভিজিডি, ভিজিএফ, জিআর (খাদ্য), টিআর, কাবিখা, কাবিটার মতো কর্মসূচি রয়েছে এর মধ্যে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপবৃত্তি কার্যক্রম রয়েছে ৬ ধরণের। নগদ/উপকরণ হস্তান্তর (বিশেষ কার্যক্রম) রয়েছে ১৭ ধরণের। গৃহ নির্মাণ, গৃহ অনুদান, নদী ভাঙন কবলিত মানুষ, যোদ্ধাহত পরিবারের রেশন, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদানের মতো বিশেষ কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত। মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ঋণ, সামাজিক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের মতো ঋণ সহায়তা কার্যক্রম রয়েছে ৪ প্রকার। বিশেষ জনগোষ্ঠির জন্য সহায়তা রয়েছে ১২ প্রকার। বিবিধ তহবিল ও কার্যক্রম রয়েছে ৯ ধরনের। উন্নয়ন খাতের কার্যক্রম (চলমান উন্নয়ন প্রকল্প) রয়েছে ৩৫ প্রকার। উন্নয়ন খাতের কার্যক্রম (নতুন প্রকল্প) রয়েছে ১৭ ধরণের। স্থানীয় সরকার, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, সমাজ কল্যাণ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করছে। প্রতিটি কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রয়োজন সুবিধাভোগীদের বিষয়ে মৌলিক তথ্য। এ তথ্যের ভিত্তি হচ্ছে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন। সরকারি সুবিধাদি গ্রহণে ব্যবহৃত হচ্ছে অস্তিত্বহীন মানুষের নামে করা ভুয়া জন্ম-মৃত্যু সনদ। ভুয়া সনদ দেখিয়ে নানা সরকারি আর্থিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া যায় প্রায়ই। আত্মীয়-স্বজনকে ‘দু:স্থ ও প্রতিবন্ধী’ দেখিয়ে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন অনেক স্বচ্ছল ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার। সরকারদলীয় স্থানীয় রাজনীতিক, কর্মী ও প্রভাবশালীরা একাধিক ব্যক্তির নামে ভুয়া জন্ম নিবন্ধনের ভিত্তিতে ও কার্ড তৈরি করে সরকারি ভাতা তুলে খাচ্ছেন-এমন ঘটনা রয়েছে ভুরি ভুরি।
বিশ্লেষকরা আরও একটি আশঙ্কার কথাও উল্লেখ করেন। ভুয়া জন্ম নিবন্ধনের ভিত্তিতে ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি। রাজনৈতিক দল বিশেষের প্রার্থীকে ভোটে এগিয়ে রাখতেও ব্যবহৃত হতে পারে ভুয়া জন্ম নিবন্ধন ভিত্তিক ভোটার তালিকা।
‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)’র প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ইনকিলাবকে বলেন, নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে তথ্য ভান্ডার থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। নাগরিকেরও উচিৎ তার নাম-ঠিকানা-পরিচয়, জন্ম তারিখ-যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ হলো কি না নিশ্চিত হওয়া। নিবন্ধিত জনগোষ্ঠির সংখ্যা সর্বশেষ জনশুমারি থেকে বেশি হওয়া সম্পর্কে বলেন, জন শুমারির ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ। যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ না করে নামকাওয়াস্তে এই শুমারি করা হয়েছে বলে নাগরিকের প্রকৃত তথ্য উঠে আসেনি। নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ যদি শুমারিলব্ধ জনসংখ্যা থেকে নিবন্ধিত মানুষের সংখ্যা অতিরিক্ত প্রদর্শন করে থাকে সেটি কিভাবে হলো-তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শতাধিক অসহায় হতদরিদ্র প্রতিবন্ধীদের মাঝে কম্বল বিতরণ
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
কুষ্টিয়ায় চালের বাজার মনিটরিংয়ে ডিসি
১৯ জানুয়ারি ইসলামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় সম্মেলন সফলের আহ্বান
ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে যেন ফাটল সৃষ্টি না হয় : সালাহউদ্দিন
জুলাই-আগস্ট নৃশংসতা: জাতিসংঘে পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাঠিয়েছে সরকার
ইসলামি আদর্শের প্রতি বিদ্বেষ রেখে কোন দল ক্ষমতার চিন্তা করতে পারবে না: এএমএম বাহাউদ্দীন
দুদকের মহাপরিচালক ও পরিচালক পদে পদোন্নতি
বর্ধিত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে সৈয়দপুরে রেস্তোরাঁ মালিকদের মানববন্ধন
ব্যর্থ ও দুর্নীতিবাজদের ক্ষমতায় চায় না: ইসলামী আন্দোলন
কুষ্টিয়ায় প্লাইউড বোর্ড কারখানায় আগুন
চাঁদাবাজির তকমা থেকে পরিবহন সেক্টরকে বের হতে হবে : শিমুল বিশ্বাস
ফরিদপুরের শ্রেষ্ঠ পুলিশ পরিদর্শক হলেন জাফর ইকবাল
প্রথম ম্যাচের অর্থ পুরস্কার দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের দিলেন ফ্রিটজ
শুধু ঘোষণাপত্র নয়, ১৬ বছরের আন্দোলনের স্বীকৃতি চায় ১২ দলীয় জোট
‘আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস’ হতে হবে সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি - খেলাফত মজলিস
পাহাড় কাটা মনিটরিংয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার : রিজওয়ানা হাসান
মেট্রোরেলের শুক্রবারের সময়সূচি পরিবর্তন
লৌহজংয়ে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
নবাব সলিমুল্লাহ অসংখ্য নেতা তৈরির মৌলিকক্ষেত্র সৃষ্টি করেছেন : বাংলাদেশ মুসলিম লীগ