ছাত্রদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেপ্তার সকল ছাত্রকে অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি

এমন স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন আমরা অতীতে কখনো দেখিনি : জাপা মহাসচিব

Daily Inqilab ইনকিলাব

২৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৭ পিএম | আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৭ পিএম

 

 

 জাতীয় পার্টি (জাপা) মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে। স্বাধীনতার পর দেশের মানুষ ভেবেছিল শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত একটি দেশ হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। কোটা সংস্কার আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক ও অধিকার আদায়ের আন্দোলন হলেও এটি আর ছাত্রদের মধ্যে সীমাবদ্ধ আন্দোলন ছিল না। এক পর্যায়ে এটি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রুপ নিয়েছে।’

রোববার (২৮ জুলাই) বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের সভাপতিত্বে জাপার জরুরি যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। চুন্নু বলেন, ‘দীর্ঘদিনের শোষণ, বঞ্চনা, গণতন্ত্রহীনতায় মানুষের মধ্যে একটি চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনের ওপর অত্যাচার শুরুর পর থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য জনগণও তাদের সাথে নেমে পড়ে। ছাত্রদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন, অসংখ্য ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। আহত করা হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি। এমন স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন আমরা অতীতে কখনো দেখিনি।’

তিনি বলেন, ‘এমন বর্বর ও নিপীড়নমূলক হত্যাকাণ্ড জাতি কখনও প্রত্যক্ষ করেনি, যার কারণে এ আন্দোলনে স্কুলের ছাত্র থেকে শুরু করে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ দেখা যায়।’ পার্টির যৌথ সভায় নয়টি সিদ্ধান্ত হয় বলে জানান চুন্নু। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, জাতীয় পার্টির এই যৌথ সভা সর্বসম্মতভাবে ছাত্রদের অধিকার আদায়ের বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জ্ঞাপন করে। সেই সঙ্গে চলমান অহিংস্র ছাত্র আন্দোলনের প্রতি জাতীয় পার্টির সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

এছাড়া, সভায় ছাত্রদের অহিংস্র আন্দোলনে নিহত ছাত্র-জনতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়। ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের মামলার এজাহারে প্রকৃত মৃত্যুর কারণ না দিয়ে মিথ্যা এজাহার দাখিলের বিষয়ে নিন্দা জানানো হয়। নিহত ছাত্র/ছাত্রীরা ‘বীর মুক্তিসেনা’ হিসেবে আখ্যায়িত হবে এবং একটি নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের মাধ্যমে প্রকৃত নিহতের তালিকা প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়। সভায় ছাত্র হত্যার সঙ্গে জড়িত সব সরকারি কর্মকর্তা ও উসকানিদাতাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হয়রানি/নির্যাতন না করার আহ্বান জানানো হয়। ছাত্রদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তার সকল ছাত্রদের অনতিবিলম্বে মুক্তির দাবি জানানো হয়। সভা মনে করে কেপিআইভুক্ত স্থাপনাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব সরকারের। সরকার এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এই দায় সরকার এড়াতে পারে না। এক প্রশ্নের জবাবে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘সহিংসতার নামে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের দায় স্বীকার করে চলে যাওয়া উচিত।’

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কোন মন্ত্রী বা এমপির বাড়িতে তো হামলা হয়নি। সেখানে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারি স্থাপনাগুলো রক্ষায় তাদের কোনো উদ্যোগ ছিল না। আন্দোলনরতদের গ্রেপ্তারের নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার বাণিজ্য চালাচ্ছে।’

যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া ও আলমগীর সিকদার লোটন প্রমুখ।

 


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ
রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় ড. ইউনূসের নেতৃত্বে কমিশন গঠন
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার সুপারিশ
আরও

আরও পড়ুন

মাগুরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কল্লোল সভাপতি, টগর সাধারণ সম্পদক নির্বাচিত

মাগুরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে কল্লোল সভাপতি, টগর সাধারণ সম্পদক নির্বাচিত

পেকুয়ায় ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ কারবারি আটক

পেকুয়ায় ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ কারবারি আটক

দেশকে বিভাজনের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

দেশকে বিভাজনের জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র হচ্ছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ

ঈশ্বরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ

ঈশ্বরগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ

দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ

দেশের সাংবিধানিক নাম ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ

ইউক্রেনে আরও ৬০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে জার্মানি

ইউক্রেনে আরও ৬০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে জার্মানি

দেশের ইতিহাসে প্রথম গোয়েন্দা জাহাজ উন্মোচন ইরানের

দেশের ইতিহাসে প্রথম গোয়েন্দা জাহাজ উন্মোচন ইরানের

বিয়ে না করেও ৩২ বছর বয়সে ৮৭ সন্তানের পিতা!

বিয়ে না করেও ৩২ বছর বয়সে ৮৭ সন্তানের পিতা!

৮ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারে আসছেন জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান

৮ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজারে আসছেন জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমান

মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে চিনি খেতে বাধা দেওয়াই মারামারি : আহত-১, আটক-২

মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে চিনি খেতে বাধা দেওয়াই মারামারি : আহত-১, আটক-২

বিরলে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ ফেন্সিডিল উদ্ধার

বিরলে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ ফেন্সিডিল উদ্ধার

বিএসএফের হাতে আটক যুবক ফেরত আনলো বিজিবি

বিএসএফের হাতে আটক যুবক ফেরত আনলো বিজিবি

নিজেকে আ.লীগের চক্রান্তের শিকার দাবি এনবিআরের সেই মতিউরের

নিজেকে আ.লীগের চক্রান্তের শিকার দাবি এনবিআরের সেই মতিউরের

হিলিতে দিনব্যাপী ৪৬ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ

হিলিতে দিনব্যাপী ৪৬ তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ

মহিলাদের জন্য সংসদে কোন সংরক্ষিত আসন চাই না  : মুফতি ফয়জুল করীম

মহিলাদের জন্য সংসদে কোন সংরক্ষিত আসন চাই না : মুফতি ফয়জুল করীম

কারামুক্ত ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন

কারামুক্ত ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী তারুণ্য উৎসব উদযাপন

ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী তারুণ্য উৎসব উদযাপন

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

রাষ্ট্রের কল্যাণে উপসচিব পদে কাকে প্রয়োজন: নীতি ও ন্যায্যতা কী

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু

আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু