দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুলিশের বুটের তলায় পিষ্ট : ইউট্যাব

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম | আপডেট: ০১ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৫৫ পিএম

 

 

 

বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনকালে বুধবার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রফেসর ড. নুসরাত জাহান চৌধুরী এবং একই বিভাগের প্রভাষক শেহরীন আমিন ভুঁইয়াসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারী ছাত্র-শিক্ষক এবং অভিভাবকদের সঙ্গে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্ব্যাবহার এবং বর্বর আচরণের নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো দল বা সরকারের অনুগত বাহিনী না হয়ে পেশাদার আচরণ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব প্রফেসর ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, বাংলাদেশের জন্মই হয়েছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং মানবাধিকার, সাম্য ও গণতন্ত্রের জন্য। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পরই দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করেছে। ফলে দেশের কাঠামোগত বৈশিষ্ট্য হারিয়ে গেছে। স্বাধীন বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুলিশের বুটের তলায় পিষ্ট।

নেতৃদ্বয় বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী যারা জনগণের সেবক হওয়ার কথা তারা এখন ভক্ষক ও নিপীড়কের ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। গতকাল বুধবার (৩১ জুলাই) ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি পালনকালে ছাত্রছাত্রীদেরকে পুলিশের হাত থেকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হতে রক্ষার জন্য ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক নুসরাত জাহান চৌধুরী এবং প্রভাষক শেহরীন আমিন ভুঁইয়া এগিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের পোশাক পরিহিতি পুরুষ সদস্যরা তাকে ধাক্কা দিয়ে কিভাবে ফেলে দিয়েছে। এমনকি বুট দিয়ে একজন ছাত্রকে পাড়া দিয়ে গলা চেপে টেনে হিঁচড়ে আটক করে নিয়ে গেছে। এ ধরনের অমানবিক ও নির্মম আচরণ অসভ্য ও বর্বর ব্যক্তি ছাড়া কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। আমরা এহেন ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এহেন ঘৃণ্য আচরণের জন্য সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাই।

ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা পুলিশ প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা জনগণের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত হন। কোনো দলের হয়ে অপেশাদার আচরণ করবেন না। কোনো একটি দলের অন্যায়-দুর্নীতির অংশীজন হবেন না। আপনারা জনগণকে সম্মান করুন। তাহলে আপনারাও সম্মান পাবেন। তা না হলে এই অবৈধ ও বিনাভোটের সরকারের সেবক হতে গিয়ে জনগণের যে ক্ষোভ এবং রুদ্র রোষ সেখান থেকে কেউই নিস্তার পাবেন না। ইতিমধ্যে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে গুলি চালিয়ে আড়াই শতাধিক ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছেন। যা বহির্বিশে^ বাংলাদেশের সুনাম ও ভাবমূতি ক্ষুন্ন করেছে। এর দায় অবৈধ আওয়ামী সরকারের পাশাপাশি তাদের অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও এড়াতে পারে না। আমরা বলবো, দেশের জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ কখনও লাভবান হয়নি। আপনারা জনগণের বিরুদ্ধে অংশ নেবেন না। সুতরাং আপনারা অন্যায়ভাবে কাউকে সমর্থন দিয়ে নিজেদের বিপদ ডেকে আনবেন না এবং জনগণের কাছে ঘৃণার পাত্র হবেন না।

তারা বলেন, সর্বোচ্চ আদালত সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ মেধা ও ৭ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশনা দেওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট কিছু দাবিনামা পেশ করেছেন। এর মধ্যে কোটা সংস্কারের পাশাপাশি অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল খুলে দেওয়া, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়া ও তাদের হয়রানি না করা, আটক ৬জন সমন্বয়ককে দ্রুত ছেড়ে দেওয়া, প্রতিটি খুনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া, সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস এবং নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়টি অন্যতম। আমরাও শিক্ষার্থীদের এসব দাবিকে যৌক্তিক মনে করি। সুতরাং চলমান সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের এসব দাবির ব্যাপারে সরকারকে অবশ্যই দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

মধ্যরাতে অনশনে যোগ দিলেন জবির অর্ধশতাধিক ছাত্রী

মধ্যরাতে অনশনে যোগ দিলেন জবির অর্ধশতাধিক ছাত্রী

রিয়ালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সা

রিয়ালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়ন বার্সা

গোলরক্ষক বীরত্বে ১০ জনের ইউনাইটেড হারাল আর্সেনালকে

গোলরক্ষক বীরত্বে ১০ জনের ইউনাইটেড হারাল আর্সেনালকে

৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?

৯ দফা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ কতদূর?

মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,

মর্গের দুই লাশের দাবিদার দুই পরিবার,

আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ

আইনজীবীকে হত্যার হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনা-জয়সহ ৯৩ জনের মামলা এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ

তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!

তথ্য থাকলেও সন্দেহজনক লেনদেনে দেরিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএফআইইউ!

সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,

সাবেক এমপি হেনরীর ৫৬ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ,

গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা

গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগে উৎকণ্ঠায় নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ীরা

দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

দেশে এইচএমপি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত

শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে আইনি নোটিশ

শাহজালাল বিমানবন্দরে বিমান বাহিনীর সদস্যদের অপসারণে আইনি নোটিশ

চকরিয়ায় পুলিশ-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি: বসতবাতিতে আগুন, ওয়ার্ড মেম্বারসহ আহত ২

চকরিয়ায় পুলিশ-সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলি: বসতবাতিতে আগুন, ওয়ার্ড মেম্বারসহ আহত ২

স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব

স্বাধীন সামরিক বাহিনী সংস্কার কমিশন গঠনের প্রস্তাব

শেখ হাসিনার চোখ ছিল শুধু ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত : সারজিস

শেখ হাসিনার চোখ ছিল শুধু ঢাকা থেকে টুঙ্গীপাড়া পর্যন্ত : সারজিস

শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বৈষম্যমৃলক চূক্তি করেছিলেন-মৌলভীবাজারে সারজিস আলম

শেখ হাসিনা ভারতের সাথে বৈষম্যমৃলক চূক্তি করেছিলেন-মৌলভীবাজারে সারজিস আলম

ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ

ব্র্যাক ব্যাংকের টপ টেন রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড জয় ২০২৪ সালে ১.৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স সংগ্রহ

ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন

ওসি মুহিবুল্লাহকে বাঁচাতে স্বজনদের মানববন্ধন

পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১

পাটগ্রাম সীমান্তে বাংলাদেশিকে লক্ষ্য করে বিএসএফের গুলি, আহত ১

ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ

ওয়ান টাইম প্লাস্টিক বন্ধে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ৬ হাজার প্রতিষ্ঠান: বিপিজিএমইএ

চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না

চলমান সংস্কার গতিশীল করতে হবে, যাতে কেউ প্রশ্ন তুলতে না পারে : মান্না