ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাথে নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছে নয়াদিল্লি। প্রথমদিকে শোনা যাচ্ছিল, বাংলাদেশের গণতন্ত্র হরণকারী ভারত স্বেরাচার হাসিনাকে আশ্রয় দেবে না। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে তাকে সাথে নিয়ে নতুন খেলায় মেতে উঠেছে মোদি সরকার।

গত সোমবার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালায়ন করেন। তার সাথে সাক্ষাৎ করেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা। এদিন রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে ক্যাবিনেটের নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা করতে জরুরি বৈঠকেও বসে। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনসহ সিনিয়র কর্মকর্তারা সবাই উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে সব দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের কী অবস্থান, তা দেশটির সব সংসদ সদস্যকে জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তার বক্তব্য অনুযায়ী, আপাতত শেখ হাসিনাকে কিছু দিন সময় দিতে চায় ভারত। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, তা তিনি ভারত সরকারকে জানাবেন। সেই ভাবনাচিন্তার জন্য সময় নিচ্ছেন। শেখ হাসিনার পরিকল্পনা জানার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে নয়াদিল্লি।

জয়শঙ্করের এই মন্তব্যের মধ্যে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, বাংলাদেশ নিয়ে হয়তো নতুন কোনো খেলা শুরু করেছে দেশটি। বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন অভ্যুত্থান ও শত শত মানুষের ঐতিহাসিক আত্মত্যাগকে যখন বিশ্বের বড় গণতান্ত্রিক শক্তিগুলি স্বাগত জানাচ্ছে তখনও ভারত রক্তাক্ত এই আন্দোলনকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবেই দেখছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও ফলাওভাবে গণঅভ্যুত্থানকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরছে। ধারণা করা হয়েছিল, দিল্লি তাদের অবস্থান পাল্টাবে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানের একটুও পরিবর্তন হয়নি।

গভীর উদ্বেগ জানিয়ে নেটিজেনরা বলছেন, ডামি সরকার গঠনের পর জুন মাসে সর্বশেষ ভারত সফরে গিয়ে শেখ হাসিনা দেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই দেশটির হাতে একতরফাভাবে তুলে দিয়েছেন। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রানজিট, গোয়েন্দা ও সামরিক ক্ষেত্রে স্পর্ষকাতর কয়েকটি বিষয়ে দেশের জনমত ও স্বার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে গিয়ে নয়াদিল্লিকে দিয়ে দেন তিনি। এনিয়ে ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সর্বমহলে। তাই ভারত শেখ হাসিনার কাছ থেকে অন্যায্যভাবে সবই আদায় করে নিয়েছে। নতুন করে নেওয়ার আর কিছুই নেই। তাই পরবর্তিত পরিস্থিতিতেও গণহত্যার দায় নিয়ে দেশত্যাগী এই দোষরকে ছাড়তে পারছে না দেশটি।

ফেসবুকে ভারতের ষড়যন্ত্রনীতির সমালোচনা করে শিহাব উদ্দীন লিখেছেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতি প্রশ্নবিদ্ধ এরা প্রতিবেশী কারো সাথেই ভালো আচরণ করে না। যার জন্য আফগানিস্তান, নেপাল, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ অবশেষে সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী বাংলাদেশেও লাথি খয়েছে। ওরা সময়িক নিজের ষোলকলা মজানিয়ে বেশী আগ্রহী। কাউকে তোয়াক্কা করে না। ভারত!! বন্ধু বদল করা যায় প্রতিবেশী না।তাই প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার কর সুপার পাওয়ার হও।

দেলোয়ার হোসেন লিখেছেন, ভারতে বসে দেশ-বিরোধী ষড়যন্ত্র করতেছে এবং তার ছেলে উগ্রভাবে গুজব ছড়াচ্ছে।
অনতিবিলম্বে এদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনা হউক।

জিল্লুর রহমান লিখেছেন, ভারতীয় দাদারা বলতো আমাদের ৭১ এর স্বাধীনতা তাদের করুনার ফল। এরপর তারা কারণে অকারণে তাদের আধিপত্যবাদ চাপিয়ে রেখেছিল। বিনাভোটের হাসিনা সরকারকে একচ্ছত্র সমর্থন দিয়ে টিকিয়ে রেখেছিল। মজার বিষয় তিনি পালিয়ে সেই দাদাদের কাছেই ফেরৎ গেল। তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দাদাদের অবদান শূন্য এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয়বার স্বাধীন।

এম জাফর ইকবাল ভুইয়া লিখেছেন, এদেশের মাঠিতে কোনো ভারতীয় দালালের মাতুব্বরি চলবেনা, ভারতের মাতুব্বরি তো দূরের কথা, কোনো দেশের দালালিই চলবেনা। আমরা নিজেরাই নিজেদের দেশের ভালোমন্দ বুঝবো, যে বা যারাই দালালি করতে আসবে তাদেরকে আমরা জনগণ নির্মুল করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।

মোঃ কাওছার অমিদ লিখেছেন, আমরা আর ভারতের দাসত্ব চাই না। বাংলাদেশ থেকে ‘র’ কে উচ্ছেদ করতে হবে।
তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক থাকবে বন্ধুর মতো।আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে তারা নাক গলাতে পারবে না।

মোঃ হোসাইন লিখেছেন, ভারতের চক্ষু রাঙানো কিংবা আমাদের দেশে অভ্যন্তরীণ বিষয় কোন প্রকার ইন্টারফেয়ার করলে সাথে সাথে বিদ্যা আঙ্গুল দেখানো হবে। ইনশাআল্লাহ।

নোমান এইচএস লিখেছেন, সে শুধু ভারত নয় বাংলাদেশকে ও সংকটের মধ্যে ফেলে পালিয়ে গিয়েছে সে যেখানেই যাক না কেন সমন্বয়করা কথা দিয়েছে তাকে বাংলাদেশের এনে তার বিচার করা হবে। মানুষের উপর কত নির্যাতন করছে ও আল্লাহ্‌ আল্লাহু আকবার নির্যাতনের নিম্নতর স্থান থেকে নিম্নতর স্থান পর্যন্ত সে পার করেছে। তাকে দ্রুত দেশে আনা হোক।