বিজিবি-আনসার বাহিনীর প্রধান বহাল তবিয়তে
১১ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম
- সীমান্তে যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেটা পুলিশকে দেয়া হয়েছিল, যা একদমই ঠিক হয়নি-স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারাদেশে শত শত সাধারন শান্তিকামি ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। পুলিশ, বিজিবি ও আনসারের সদস্যদের নির্বিচারে চালানো গুলিতে নিহতের পাশাপাশি গুলিবিদ্ধ হয়েছে আহত হয়েছেন হাজার হাজার ছাত্র-জনতা। এদের মধ্যে অনেকেই অন্ধ ও পঙ্গু হয়ে গেছেন। পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের সাথে এ সময় সাধারন ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা। অথচ যাতের নির্দেশে পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যরা শত শত ছাত্র-জনতাকে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে পঙ্গু-অন্ধ করেছে সেই বিজিবির প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দীক ও আনসার বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হকসহ গুলির নির্দেশদাতারা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। আনসার বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক আওয়ামীলীগ নেতা এনামুল হক শামিমের ছোট ভাই। দ্রুত এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের ঘটনা ঘটনার আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই মধ্যে ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা ও আহত করার ঘটনায় পুলিশ বাহিনীর প্রধানকে চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। বিজিবি ও আনসার বাহিনীর প্রধানসহ ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা-আহত করার সাথে জড়িত বিভিন্ন সংস্থার প্রধানদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ছাত্র ও দেশের সাধারন নাগরিকরা।
সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আওয়ামীলীগ সরকারের সময় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় যারা শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন, তারাই এখনও নতুন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তায় শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। এদের বিষয়েও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করা প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ দুই বাহিনীর প্রধানের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে সব গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা ছাত্রদের গুলি করে হত্যার পাশাপাশি গ্রেফতার গ্রেফতার নির্যাতন করেছেন এবং ধরে নিয়ে নির্যাতন করতে সহায়তা করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন সময়ের জোর দাবি।
অন্যদিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় ভারতীয় সীমান্তে গত শুক্রবার অবস্থান করেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষরা। উপজেলার গোতামারী সীমান্তে জড়ো হতে থাকে তারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ককরা হয়। যেখানে দেশের সীমান্ত এলাকার জিরো পয়েন্টে সাধারন মানুষের যাতায়াত নিষিদ্ধ রয়েছে, সেখানে শত শত হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষদের জড়ো হতে দেয়া রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের চক্রান্ত বলে অনেকেই মনে করছেন। অভিযোগ রয়েছে বর্তমান সরকারকে দেশের ভেতরে ও আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচনায় ফেলতে এ চক্রান্তের নেপথ্যে কাজ করেছেন বিজিবির কথিপয় সরকার বিরোধী আওয়ামীপন্থী কিছু কর্মকর্তা। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে যে কোন সময় সীমান্তে আরো বড় ধরনের ঘটনা ঘটবে।
রোববারকেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনা বলেন, সীমান্তে যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সেটা পুলিশকে দেয়া হয়েছিল। সীমান্তে যে অস্ত্র ব্যবহার করা হয়, সেটা পুলিশকে দেয়া হয়েছিল, যা একদমই ঠিক হয়নি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ৯ আগস্ট বিকালে উপজেলার গোতামারী সীমান্তে ভারতীয় কাঁটাতার এলাকায় ভীর জমিয়েছিলেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। তারা কাঁটাতারের বেড়া অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধা দেয়। এরপরও ভারতে যেতে কাঁটাতারের পাশে অবস্থান করেন তারা। এদিকে তাদের ঘরে ফেরাতে চেষ্টা করেন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্কলা বহিনী ও বিএনপি জামাতের নেতারা। এ সময় বিজিবির তেমন কোন উদ্যোগ লক্ষ করেননি স্থানীয়রা।
রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত মাসুদ ও মঞ্জুরুল হকসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র ইনকিলাবকে বলেন, বিজিবির প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দীক ও আনসার বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হকসহ এ দুই বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশে যেভাবে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হতাহত করা হয়েছে তা কোন সভ্য সমাজে সম্ভব নয়। এরা নিজেদের পদ পদবি বাড়াতে এবং বিগত সরকারকে খুশি করতে নিষ্ঠুরভাবে আন্দোলনের সাথে জড়িত ছাত্রদের খুন করেছে। একই সাথে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দিয়েও গুলি করে ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। পুলিশ বাহিনীর মতো এরা (বিজিবি ও আনসার) ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে সরকার বিরোধী আন্দোলন বন্ধ করতে চেয়েছেন। পুলিশ বাহিনীর প্রধানকে যেভাবে চুক্তিভিক্তিক নিয়োগ বাতিল করে নতুন কর্মকর্তার নিয়োগ দেয়া হয়েছে ঠিক সেভাবে বিজিবি ও আনসার বাহিনীর প্রধানকে দ্রুত সরানো হউক।
ওই ছাত্ররা আরও বলেন, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন এবং ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়দের আটক করে নিয়ে গেছেন বা নিতে সহযোগিতা করেছেন তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত
টিকটক-এ ৭ কোটি বারের বেশি দেখা হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ওয়েব সিরিজ ‘প্রেমের বিকাশ’
'সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নগরীর যানজট নিরসন করা হবে' ---বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ
অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন
রাজশাহী সীমান্তে গভীর রাতে বিএসএফের দফায় দফায় গুলি বর্ষন
আজীবন সন্মাননা পাচ্ছেন আবদুল হাদি-খুরশিদ আলম
প্রকৌশলীর দুর্নীতির ৮ প্রকল্পের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছে দুদক
পদ্মা সেতু হয়ে বেনাপোল-ঢাকা রুটে আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু: যাত্রীদের মাঝে ব্যপক সাড়া
বাংলাদেশের কাছে ২০০ কোটি রুপি পায় ত্রিপুরা, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা
লক্ষ্মীপুরে দুই নারীকে পিটুনি, অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার
নওগাঁর রাণীনগরে জাতীয়তাবাদী প্রবাসী ঐক্য পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
বিনিয়োগ ‘ধ্বংসের’ অভিযোগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি এস আলমের
বাতিল হলো মৌলভীবাজারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রকল্প
সাভারে বাস চাপায় সিআরপি শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পদক পেলেন ৭২ বিজিবি সদস্য
শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা জনজীবন স্থবির
খুবির নির্মাণকাজের গুণগতমান নিশ্চিত ও তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ উপাচার্যের
নওগাঁ শহরের দেয়াল থেকে মুছে ফেলা হলো জয় বাংলা
জাহাজে ছিল ৫ জনের লাশ, হাসপাতালে মারা গেলেন আরও ২ জন
বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালইজড হাসপাতালে পুনরায় শুরু হলো বহুল প্রতীক্ষিত কিডনি প্রতিস্থাপন