দেশ ছাড়ার আগে পরে কোন বিবৃতি দেন নি শেখ হাসিনা: জয়
১২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪৮ পিএম | আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৪৮ পিএম
শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ঢাকা ছাড়ার আগে ও তার পরে কোন বিবৃতি দেন নি বলে জানিয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ। রোববার রাতে নিজের এক্স (সাবেক টুইটারে) বার্তায় তিনি এই ঘোষণা দেন।
ক্ষমতা ছাড়ার পরে শেখ হাসিনা একটি বিবৃতি দিয়েছেন বলে রোববার ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়। ওই খবরে বলা হয়েছিল, ক্ষমতা ছাড়ার পর নীরবতা ভেঙে একটি বিবৃতি দিয়েছেন শেখ হাসিনা। যে বিবৃতিতে বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। শেখ হাসিনার বিবৃতির বরাত দিয়ে ওইসব খবরে বলা হয়েছিল ‘আমি যদি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে সেন্ট মার্টিন ও বঙ্গোপসাগর ছেড়ে দিতাম, তাহলে ক্ষমতায় থাকতে পারতাম’।
এই নিয়ে বাংলাদেশ ও গণমাধ্যমে খবরের প্রেক্ষিতেই রোববার রাতে এই টুইট বার্তা দেন ওয়াজেদ। এর কিছুক্ষণ আগে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তায় ওয়াজেদ আগামী ১৫ অগাস্ট ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন।
রোববারে দুপুরে বাংলাদেশের কয়েকটি পত্রিকায় হঠাৎই একটি খবর প্রকাশ করে শেখ হাসিনার বিবৃতি নিয়ে। ভারতের একটি পত্রিকার বরাত দিয়ে ওই রিপোর্টে বলা হয়, ক্ষমতা ছাড়ার পর নীরবতা ভেঙেছেন শেখ হাসিনা। যেখানে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছে বলেও বলা হয় ওই সব খবরে। এছাড়াও ওই খবরে দাবি করা হয়েছিল শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যেও কথা বলেছেন বিবৃতিতে। শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে সে সব খবরে বলা হয়েছিল, লাশের মিছিল যাতে দেখতে না হয়, সে জন্য তিনি পদত্যাগ করেছেন।
মূলত ভারতের ‘দ্যা প্রিন্ট’ পত্রিকার বরাত দিয়েই বাংলাদেশের প্রথম সারির কয়েকটি গণমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করে। তবে, ঠিক হুবহু একই বক্তব্য শেখ হাসিনা পদত্যাগের পরদিন থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ফেসবুক পোস্টে দেখতে পেয়েছে বিবিসি বাংলা। যে কারণে ওই খবরের সত্যতা নিয়েও সারাদিন বাংলাদেশে নানা ধরনের আলোচনা চলতে থাকে।
পরে রাতে এক্স হ্যান্ডেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এটি সত্য নয় বলে দাবি করেন। যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার মায়ের পদত্যাগের বিষয়ে একটি বিবৃতি এক সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে, যা পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি একটু আগে তার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি। তিনি ঢাকা ছাড়ার আগে বা ঢাকা ছাড়ার পরে এ পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেননি।’
শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর এখন পর্যন্ত দুই বার ফেসবুকে ভিডিও বার্তা দেন সজীব ওয়াজেদ। রোববার রাতে ভিডিও বার্তায় ওয়াজেদ আগামী ১৫ অগাস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে দলীয় নেতাকর্মীদের ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর অনুরোধ জানান। যেখানে তিনি বলেন, “আপনারা জানেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর বাড়িকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এই মব, জাতির পিতার সেই বাসাকে পুড়িয়ে ফেলেছে যে বাসায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও আমাদের পরিবারকে হত্যা করা হয়”।
ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাসাটি ধ্বংস করা হয়েছে দাবি করে ভিডিও বার্তায় ওয়াজেদ বলেন, “যেই বাসা ১৯৭৫ সালের খুনিরাও ধংস করার সাহস পাইনি, যেই বাসা এতদিন মিউজিয়াম ছিলো। সেই বাসাকে তারা পুড়িয়ে ফেলেছে”। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু না থাকলে আজকে বাংলাদেশ পাকিস্তান হয়ে থাকতো। সামনে ১৫ আগস্ট। এই ১৫ অগাস্ট আমার আহবান আপনাদের প্রতি, শান্তিপূর্ণভাবে ৩২ নম্বরে গিয়ে ফুল দিয়ে আসবেন। বঙ্গবন্ধুর জন্য, স্বাধীনতার চেতনার জন্য এবং আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।''
গত সোমবার শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শীর্ষ কোন নেতার বক্তব্য পায় নি বাংলাদেশের গণমাধ্যম। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত শেখ হাসিনার ছেলে জয়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছে বিবিসি, ডয়চে ভেলে, এনডিটিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম। শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরদিন বিবিসি ওয়ার্ড সার্ভিসে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ বলেছিলেন এই ঘটনায় শেখ হাসিনা হতাশ। তিনি আর রাজনীতিতে ফিরবে না।
বিবিসি’র প্রশ্নের জবাবে ওয়াজেদ বলেছিলেন, “তিনি এতটাই অসন্তুষ্ট যে দেশের উন্নয়নের জন্য এতো কঠোর পরিশ্রম করেছেন যেটাকে সবাই মিরাকল বলে। এরপরও একটা ছোট্ট অংশ তার বিরুদ্ধে গিয়েছে, এমন বিক্ষোভ করলো...। আমি মনে করি তিনি আর এসবে নেই। আমার পরিবার ও আমিও নেই, যথেষ্ট হয়েছে।”
পরবর্তীতে গত শুক্রবার আবারো রয়র্টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকার দেন সজীব ওয়াজেদ। যেখানে তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন নি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেই দেশে ফিরবেন। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'আমার মা আনুষ্ঠানিকভাবে কখনোই পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেননি। তিনি সেই সময় পাননি''। যদিও ৫ অগাস্ট একটি সংবাদ সম্মেলনে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারউজ-জামান বলেছিলেন, ''মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন।
শনিবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে বিচারপতিদের পদত্যাগ নিয়ে ওয়াজেদ বলেন, দেশে সংস্কার নয়, ‘গণ-অরাজকতা’ চলছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার তীব্র আন্দোলনের পর ব্যাপক অস্থিরতা তৈরি হলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো বলছে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহের বিক্ষোভে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই মারা গেছে গুলিতে। সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশনে আছেন যারা
‘বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন’-এ বারের অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রস্তাব
সোনারগাঁওয়ে বাস-অ্যাম্বুলেন্সের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ১০
মামলা রেকর্ড করতে ঘুষ গ্রহণ, কুষ্টিয়ায় ওসি ও এসআই ক্লোজ
কুমিল্লায় বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় জামায়াতের ২ কর্মী বহিষ্কার
পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক
পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত
পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ
ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি
এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!
ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র
স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?
চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১
পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি
যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত
১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান
জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা