ঢাকা   মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১০ পৌষ ১৪৩১

বাংলাদেশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করব : বিবিসিকে ড. ইউনূস

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৩ আগস্ট ২০২৪, ১০:১২ এএম | আপডেট: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ১০:১২ এএম

শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণ-আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশের নতুন এই নেতা স্পষ্ট করেছেন, এটি তার বিপ্লব ছিল না। তবে শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করতে তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তার কার্যালয়ে নির্বাচিত কয়েকজন সাংবাদিককে ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। খবর বিবিসির।

৮৪ বছর বয়সী ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি এটা (প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব) করছি, কারণ দেশের তরুণরা এটাই চেয়েছিল এবং আমি তাদের সাহায্য করতে চেয়েছি।’

‘এমনটা আমার স্বপ্ন ছিল না, এটা তাদের (তরুণদের) স্বপ্ন। তাই আমি তাদের স্বপ্নকে সত্যি করতে সাহায্য করছি’, বলেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘সবার আগে আইনশৃঙ্খলা, যাতে মানুষ স্বস্তিতে থাকতে পারে বা কাজ যেতে পারে।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তার সরকারের লোকেরা সম্পূর্ণভাবে ‘লাপাত্তা’ হয়ে গেছেন। ১৫ বছরের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণে যা হয়েছে, তা হলো ‘বিশৃঙ্খলা, সম্পূর্ণ জগাখিচুড়ি’।

‘এমনকি সরকার (শেখ হাসিনা সরকার), তারা যা করেছে, তারা যা যা করেছে, আমার কাছে সেসবের কোনো অর্থ নেই…। প্রশাসন আসলে কী, তা তাদের কোনো ধারণাই ছিল না’, বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

এত বিশৃঙ্খলার মধ্যেও ‘অনেক আশার’ কথা জানান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে তাদের (শিক্ষার্থী) জন্য, দেশের জন্য নতুন মুখ। কারণ অবশেষে, এই মুহূর্তে, দানব চলে গেছে। তাই এই উত্তেজনা।’

অধ্যাপক ইউনূসের মতে, সংস্কারই মুখ্য। বাকস্বাধীনতার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, সংস্কার একান্ত প্রয়োজন।

শেখ হাসিনার সরকারের আমলে বাকস্বাধীনতা ব্যাপকভাবে সীমাবদ্ধ ছিল, যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চেয়েছিল, তাদের দিয়ে কারাগারগুলো ভরা ছিল। ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, তিনি নিজেও বাকস্বাধীনতায় দমনের শিকার হয়েছেন।

শেখ হাসিনার সরকারের একজন স্পষ্টবাদী সমালোচক অধ্যাপক ইউনূস ক্ষুদ্র ঋণের অগ্রগামী হিসেবে সর্বত্র প্রশংসিত। কিন্তু, তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ‘জনশত্রু’ হিসেবে গণ্য করেছেন। শুধু তাই নয়, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ড. ইউনূস জানান, তার অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের তালিকায় অবশ্য আরও অনেক কিছু রয়েছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে শিক্ষার্থীদের একটি আসন থাকবে, যা পূর্ববর্তী প্রশাসনের অবসান ঘটাতে তাদের ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ। সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ ইতোমধ্যে তার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হয়েছেন।

 

এরপরই রয়েছে বিচার বিভাগের সংস্কার। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। পক্ষান্তরে তাদের বিরুদ্ধে ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ আদেশে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। ড. ইউনূস বলেন, ‘আক্ষরিক অর্থে যিনি প্রধান বিচারপতি ছিলেন, প্রকৃতপক্ষে তিনি ছিলেন জল্লাদ।’

নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম প্রসঙ্গে ড. ইউনূস বলেন, এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, যার সঙ্গে সবাই একমত হবে না। তবে তিনি আশা করেন, আগে যা হয়েছে, তার চেয়ে ভালো কিছু হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমার কাজের অভিজ্ঞতা যা-ই থাক না কেন। আমি বলছি না, আমি সরকার চালাতে পারব। আমি বলছি, আমার কিছু প্রতিষ্ঠান চালানোর অভিজ্ঞতা আছে। আমি যতটা পারি তা ব্যবহার করব। এমন লোক থাকবে যারা এটি পছন্দ করবে, আবার এমনও থাকবে যারা তা অপছন্দ করবে। তবে আমাদের এর মধ্য দিয়েই যেতে হবে।’


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত
‘বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন’-এ বারের অন্তর্ভুক্তিকরণ প্রস্তাব
বিডিআর হত্যাকাণ্ড তদন্তে ৭ সদস্যের কমিশনে আছেন যারা
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরের সাক্ষাৎ
আরও

আরও পড়ুন

রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন

রানার অটোমোবাইলস পিএলসির এজিএম সম্পন্ন

আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ  কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী

আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ  কাজের আহ্বান: এমরান আহমদ চৌধুরী

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি  বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন

নকল পণ্য প্রতিরোধে আমদানির উপর শুল্ক কমানোর দাবি বাজারের ২০ শতাংশ খাদ্য মানহীন

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত

লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে জনসম্মুখে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন, নাকে খত

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ

বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি

বিশ্বে বছরজুড়ে আলোচনায় যুদ্ধ, নির্বাচন ও মূল্যস্ফীতি

যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন

যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে : চীন

আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই  আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই  আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন

মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭

মেক্সিকোতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ৭

মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি

মাথাপিছু ১৪০০ ডলারের চেক পাচ্ছেন ১০ লাখ মার্কিনি

৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল

৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরাইল

মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪

মোজাম্বিকে ঘূর্ণিঝড় চিডোরে নিহত ৯৪

মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী

মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী

রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি

রাফালের আগমনে ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধি

উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা

উত্তর প্রদেশে নিহত ৩ খলিস্তানি নেতা

ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০

ভারতে বাল্যবিবাহবিরোধী অভিযানে আটক ৫০০০

মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান

মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান

গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু

গ্রেফতার ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু

পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের

পানামা খাল দখলের হুমকিকে ভর্ৎসনা পানামা প্রেসিডেন্টের

স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা