একটি বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সেনা হত্যা করেন প্রধানমন্ত্রী

Daily Inqilab নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ আগস্ট ২০২৪, ০৬:২৯ পিএম | আপডেট: ১৭ আগস্ট ২০২৪, ০৭:১৯ পিএম

 

 

বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে একজন সিটিং প্রধানমন্ত্রী একটি বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সেনা অফিসারদের হত্যা করেন। এ জন্যই আমরা শহীদ দিবস দাবি করছি।

 

শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় সাত দফা দাবি জানান তারা।

রাজধানীর পিলখানায় ২০০৯ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) বিদ্রোহের সময় হত্যাকাণ্ডের মামলায় যেসব তদন্ত হয়েছে, সেসব তদন্তের প্রতিবেদন পাবলিক করা এবং ২৫ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ সেনা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার করার দাবি জানিয়েছেন নিহত সেনা সদস্যদের স্বজনরা।

সংবাদ সম্মেলনে বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) জেনারেল শাকিল আহমেদের ছেলে রাকিন বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে একজন সিটিং প্রধানমন্ত্রী একটি বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে সেনা অফিসারদের হত্যা করেন। এ জন্যই আমরা শহীদ দিবস দাবি করছি। ১৫ বছর যেভাবে তদন্ত হয়েছে, তা আমরা মানি না। কারণ প্রধান হত্যাকারী (যিনি নির্দেশ দিয়েছেন) তিনি তখন গণভবনে। এ ঘটনায় যারা নির্দোষ, এখনও জেল খাটছেন, তাদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মুক্তি দেয়ার দাবি জানাই।

মেজর কাজী মোসাদ্দেক হোসেনের মেয়ে নাজিয়া বলেন, আমাদের কষ্টের কথা যদি বলি, একই পরিস্থিতিতে এখনও যাচ্ছি। কষ্ট দূরে হয়ে যায়নি। এর পেছনে অনেক ঘটনা ছিল। আমরা তো আমাদের স্বজনদের হারিয়ে ফেলেছি। মানুষ জানুক এই হত্যাকাণ্ড কারা করেছে। কেন এত বছর পরও আমাদের মুভমেন্টে বাধা হয়।

লে. কর্নেল এনায়েতুল হকের মেয়ে নাবিলা বলেন, এটা আন্তর্জাতিক চক্রের কাজ। আন্তর্জাতিক শক্তির দ্বারাই কাজটি করা হয়েছে। আপনারা বের করবেন আসল কারণ। এটা বিদ্রোহ নয়, এটা হত্যাকাণ্ড, পরিষ্কার হত্যাকাণ্ড। আমার বাবা মারা যাননি। হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। কিছু অপপ্রচারের জন্য আমরা হেনস্তা হয়েছি। এত দিন ভয়ে কথা বলিনি, আজ নির্ভয়ে কথা বলছি।

নিহত সেনা সদস্যদের স্বজনরা আরও বলেন, ১৫ বছর ধরে আমাদের একটাই দাবি, বিচার চাই। একটা স্বচ্ছ বিচার হোক। আমরা এ বিষয়ে আর লুকোচুরি চাই না। চাপ দিয়ে আমাদের মুখ বন্ধ করা হয়েছিল। বাধার মধ্যে ১৬ বছর পার করেছি।

 

পরিবারগুলোর সাত দাবি:

১. সত্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে আগে যেসব তদন্ত হয়েছে, সেসব তদন্তের প্রতিবেদন পাবলিক করতে হবে।

২. হাইকোর্ট ডিভিশনের রায় মোতাবেক তিন বিচারক যে ইনকোয়ারি কমিশনের কথা বলেছেন অবিলম্বে সেই ইনকোয়ারি কমিশন গঠন করতে হবে। এতে পর্দার আড়ালে রয়ে যাওয়া ষড়যন্ত্রকারীদের নাম বেরিয়ে আসবে।

৩. অফিসিয়াল গ্যাজেট করে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে এবং গ্যাজেটে নিহতদের সবাইকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে।

৪. ২৫ ফেব্রুয়ারি শোক দিবসকে ঘিরে দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হবে।

৫. পিলখানা ট্র্যাজেডিকে স্কুলের পাঠ্যবইয়ের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৬. এ ঘটনাকে ঘিরে যেসব সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন, তাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে অথবা যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৭. নির্দোষ কোনও বিডিআর জওয়ানকে যেন কোনোভাবেই সাজা না দেয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত এক সেনা কর্মকর্তার ছেলে সাকিব ও মেজর শাকিলের ছেলে রাকিন ছাড়াও অন্য নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্বজনরাও বক্তব্য দেন।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বেস্ট হোল্ডিংসের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের তদন্তে দুদক
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে যৌথ বাহিনী মাঠে নামছে
বিদেশে উন্নত চিকিৎসাপ্রত্যাশীদের জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ
ডা. জুবাইদা রহমানের জামিন
সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ
আরও
X
  

আরও পড়ুন

শেষ মিনিটের নাটকীয়তায় জিতে বার্সার অপেক্ষা বাড়ালো রিয়াল

শেষ মিনিটের নাটকীয়তায় জিতে বার্সার অপেক্ষা বাড়ালো রিয়াল

পিএসএলে দল পেলেন সাকিব

পিএসএলে দল পেলেন সাকিব

বেস্ট হোল্ডিংসের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের তদন্তে দুদক

বেস্ট হোল্ডিংসের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের তদন্তে দুদক

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে যৌথ বাহিনী মাঠে নামছে

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে যৌথ বাহিনী মাঠে নামছে

বিদেশে উন্নত চিকিৎসাপ্রত্যাশীদের জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ

বিদেশে উন্নত চিকিৎসাপ্রত্যাশীদের জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ

নতুন ‘স্ট্যান্ডার্ড’ স্থানের নামের তালিকা প্রকাশ করল চীন

নতুন ‘স্ট্যান্ডার্ড’ স্থানের নামের তালিকা প্রকাশ করল চীন

ডা. জুবাইদা রহমানের জামিন

ডা. জুবাইদা রহমানের জামিন

থানা ম্যানেজ করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি লুৎফর

থানা ম্যানেজ করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি লুৎফর

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সউদীতে ঐতিহাসিক ও বিলাসবহুল অভ্যর্থনা

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সউদীতে ঐতিহাসিক ও বিলাসবহুল অভ্যর্থনা

নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত পাওয়ার আপিলের রায় ১ জুন

নিবন্ধন ও প্রতীক ফেরত পাওয়ার আপিলের রায় ১ জুন

সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ

সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা পাচ্ছে বাংলাদেশ

ছাত্রদল নেতা হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি

ছাত্রদল নেতা হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল ঢাবি

চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বমানের হলে অর্থনীতি দ্রুতবেগে পরিবর্তন হবে : ড. মুহাম্মদ ইউনূস

চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বমানের হলে অর্থনীতি দ্রুতবেগে পরিবর্তন হবে : ড. মুহাম্মদ ইউনূস

নির্বাচনের দেখা নেই!

নির্বাচনের দেখা নেই!

আদর্শ ইসলামী মিশন মহিলা কামিল মাদরাসা ফাজিল (ডিগ্রীতে) শতভাগ পাশের ধারা অক্ষুণ্ন

আদর্শ ইসলামী মিশন মহিলা কামিল মাদরাসা ফাজিল (ডিগ্রীতে) শতভাগ পাশের ধারা অক্ষুণ্ন

গাজীপুরে মহিলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার

গাজীপুরে মহিলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার

আইজিপির সঙ্গে রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

আইজিপির সঙ্গে রবার্ট এফ কেনেডি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

আদালতে ‘হেল্পলাইন’ সেবা চালু

আদালতে ‘হেল্পলাইন’ সেবা চালু

উকিল দম্পতির ১৪ ফ্ল্যাট, ৫ দোকান দেখভালে রিসিভার নিয়োগ

উকিল দম্পতির ১৪ ফ্ল্যাট, ৫ দোকান দেখভালে রিসিভার নিয়োগ

রাশিয়া বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার : খাদ্য উপদেষ্টা

রাশিয়া বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার : খাদ্য উপদেষ্টা