দুই শিক্ষিকাকে অব্যাহতি ও পাঁচ দফা দাবি নিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুরে বিভাগের সামনে থেকে ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড হাতে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে অবস্থান নেয় তারা।
তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ভিসি অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, আগামী রোববার মনোবিজ্ঞান বিভাগের সব শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে। কোনো শিক্ষক অনুপস্থিত থাকলে তাকে ছাড়াই সীদ্ধান্ত গৃহীত হবে। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের লিখিত পাঁচটি দাবি ভিসির হাতে তুলে দেন।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো: ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ফলাফল হেরফের করা যাবে না, শিক্ষকদের মধ্যে রেষারেষি বন্ধ করতে হবে, দলীয় প্রতিহিংসার শিকার অধ্যাপক এনামুল হকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক তদন্তের মধ্য দিয়ে দুই কর্ম দিবসের মধ্যে একাডেমিক কাজে এবং পরিচ্ছন্নকর্মী শ্রী রাম হেলাকে বিভাগে ফিরিয়ে আনা।

তাদের অন্য আরেকটি দাবি হলো, বিভাগের সব শিক্ষককে এই লিখিত দিতে হবে, ওনারা বিভাগের কার্যক্রম (ক্লাস, পরীক্ষা এবং রেজাল্ট) রুটিন মাফিক করবে।
এ বিষয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী বাসেত জানান, আমরা প্রথমে ১২ দফা দাবি নিয়ে বিভাগে গেলে আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সদুত্তর আমরা পাইনি। পরে এই দাবিগুলোর মধ্য থেকে ৫ দফা দাবি নিয়ে আমরা প্রশাসনিক ভবনে গিয়েছিলাম। ভিসি স্যার আমাদের সাথে কথা বলেছেন। আগামী রোববার বিভাগের ১২ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি এবং শিক্ষকদের নিয়ে বসবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মনোবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিভাগের শিক্ষকদের আন্তঃকোন্দল, ঠিকমতো ক্লাস না নেওয়া, নম্বর টেম্পারিং, এক শিক্ষককে ষড়যন্ত্রমূলক অব্যহতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছি আমরা। কিন্তু বিভাগের সভাপতি এ বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করায় আমরা ভিসির কাছে এসেছি। তিনি আমাদের সমস্যা শুনেছেন এবং সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

অভিযুক্ত অধ্যাপক নাজমা আফরোজ দাবি জানান, সবই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ড. এনামুল হক যেহেতু শাস্তিপ্রাপ্ত তাই তিনি এসব করে যাচ্ছেন। তিনি চান না আমি বিভাগে আসি। কিন্তু কেনো এমন হচ্ছে বা শিক্ষার্থীরা এমন কেনো করছে তা আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে ড. এনামুল হকের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
চলতি মাসের গত ৮ ও ১১ সেপ্টেম্বর ১২ দফা দাবিতে বিভাগের শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে শিক্ষার্থীদের একাংশ। এর প্রেক্ষিতে ১৫ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক নাজমা আফরোজ নিজের নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বরাবর একটি আবেদনপত্র জমা দেয়।