প্রয়োজনীয় কাজ শেষে সাধারণত আমরা নষ্ট প্লাস্টিক সামগ্রী ফেলে দিই। কিন্তু এখন আর সেই প্লাস্টিকের তৈরি নষ্ট জিনিস ফেলনা নয়। পুরাতন নষ্ট প্লাস্টিক কাটিংয়ের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে সুতা, চেয়ার, টেবিল, বোতল, পানির পট সহ বিভিন্ন তৈজসপত্র। নষ্ট প্লাস্টিককে কাটিং করার জন্য সিরাজগঞ্জে গড়ে উঠেছে ‘মেসার্স জিব্রাইল ট্রেডার্স প্লাস্টিক কাটিং অ্যান্ড রিপেয়ারিং ফ্যাক্টরি। এটির মাধ্যমে কারখানার মালিক নিজের ভাগ্যবদলের পাশাপাশি তৈরি করেছেন শাতাধিক নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান।

কারখানায় গিয়ে জানা যায়, ছোট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন হাট, বাজার ও গ্রামে ঘুরে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ৪০ টাকা কেজি দরে কিনে এনে বিক্রি করেন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চক শিয়ালকোলে প্রায় তিন বিঘা জমির ওপর গড়ে ওঠা এ প্লাস্টিক কাটিং কারখানায় পুরাতন প্লাস্টিক কেনা হয়।
সিরাজগঞ্জে মেসার্স জিব্রাইল ট্রেডার্স প্লাস্টিক কাটিং অ্যান্ড রিপেয়ারিং ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখা যায়, নিজের কাজে ব্যস্ত শ্রমিকরা। এসকল শ্রমিকেরা মাসিক ৯ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২২ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন। কর্মরত শ্রমিক সোনাবি, মায়া, জোসনা বলেন তারা পুরাতন প্লাস্টিক বোতল কাটিং করার পর পানিতে ধোয়ার কাজ করে মাসে ১০ হাজার টাকা করে বেতন পান। তাদের মতো আরো অনেক মেয়ে এই কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে।

কারখানাটির টেকনিশিয়ান মায়দুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, নাজমু বলেন, কাটিং প্লাস্টিক ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয়। রাস্তায় ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দিয়ে চেয়ার, টেবিল, বোতল, পানির পট, মুরগীর পানির টবসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী আবার নতুন করে তৈরি করা হয়। কারখানার মালিক জিনহার আলী বলেন, পুরাতন বোতলের ব্যবসা বাবার কাছ থেকে শিখেছি। আগে ছোট পরিসরে ছিল। এখন আস্তে আস্তে বেশ বড় হচ্ছে। আমরা মূলত ফেলে দেয়া পুরাতন প্লাস্টিক কাটিং করি। তারপর ঢাকায় বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করি। এগুলো দেশের বাইরেও চলে যায়। তবে সরকারি সহায়তা পেলে ফেলে দেওয়া বোতলেই অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। তার নিজের কারখানাতেই শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে বলে তিনি জানান।