সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১১ এএম | আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১১ এএম
মন্ত্রীত্বের প্রভাবে শ^শুরবাড়ির লোকজনও হয়ে ওঠে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ, রেলের নিয়োগেও হস্তক্ষেপ করতেন স্ত্রী হনুফা
‘কৃষকের পুত্র এমপি-মন্ত্রী হলে জনগণকে কখনো ঠকায় না।’ সভা, সেমিনারে বক্তব্যের শুরুতেই নিজেকে কৃষকের পুত্র তকমা লাগিয়ে পরিচয় দিয়ে গর্ব করার এই মানুষটিই ক্ষমতা খাটিয়ে নামে-বেনামে এবং স্বজনদের নামে হাজার কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। গাড়ি, বাড়ি, প্লট, ফ্ল্যাট, কৃষি-অকৃষি জমি, সিএনজি ফিলিং স্টেশন, হোটেল, ইন্সুরেন্সসহ বিশাল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ইতোমধ্যে দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে অভিধা পাওয়া এই মানুষটি হচ্ছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মুজিবুল হক।
আওয়ামী লীগের শাসনামলের সাড়ে ১৬ বছরে তিনি জাতীয় সংসদের হুইপ ও রেলপথমন্ত্রীর দায়িত্বেও ছিলেন। হুইপ এবং মন্ত্রী থাকাকালীন সময়েই ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে চৌদ্দগ্রামের বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টির অসংখ্য নেতাকর্মী মুজিবুল হকের নিজস্ব বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছে। মুজিবুল হকের নির্দেশে হয়েছে মামলার আসামি। এমনকি ক্ষমতা যেনো হাতছাড়া না হয় এজন্য মুজিবুল হক ও তার পরিবারের সদস্যদের অত্যাচারে অসংখ্য তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে এলাকা ছাড়তে হয়েছে। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পথ আঁকড়ে ধরে দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদেরও কোনঠাসা করে রাখতেন।
দুর্নীতির বরপুত্র খ্যাত মুজিবুল হক ৬৭ বছর বয়সে চিরকুমার জীবনের অবসান ঘটিয়ে ২০১৪ সালে কুমিল্লার চান্দিনায় হনুফা আক্তার রিক্তাকে বিয়ে করেন। মন্ত্রীত্বের প্রভাবে শ^শুরবাড়ির লোকজনও হয়ে ওঠে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। রেলের নিয়োগেও হস্তক্ষেপ করতেন স্ত্রী হনুফা। চৌদ্দগ্রামের সব ফ্যাক্টরি ইটভাটাসহ বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়মিত চাঁদা তোলা হতো মুজিবুল হকের নামে। তার ভাতিজা তোফায়েল হোসেন চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন। থানা, উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতেন মুজিবুল হকের লোকজন। চৌদ্দগ্রামে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের এমনকি তার দলের যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো তাদের ওপর অত্যাচার, হয়রানি চালিয়ে এলাকা ছাড়া করে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন মুজিবুল হক।
স্থানীয়রা জানান, টিআর কাবিখা বরাদ্দের নামে সব অর্থ লুটপাট করা হতো। টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, অনিয়ম-দুর্নীতি, দখলবাজি, ড্রেজার পরিচালনা, সরকারি সম্পদ দখলসহ সব ধরনের অনিয়মের সঙ্গে সরাসরি জড়িত মুজিবুল হক এবং তার পরিবার। মাদক চোরাচালান এবং অস্ত্র কারবারেও জড়িত মুজিবুল হকের ভাতিজারা। তিনি রেলপথমন্ত্রী থাকাকালীন খালাসি পদে জনবল নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। শত শত কোটি টাকা তিনি বিদেশে পাচার করেছেন। দুর্নীতির বরপুত্র খ্যাত সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ে তার নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে জানাগেছে, মুজিবুল হক পেশায় ছিলেন আয়কর উপদেষ্টা। আওয়ামী লীগের নমিনেশন পেয়ে এমপি ও রেলমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি কুমিল্লা নগরীর কর ভবন এলাকায় নির্মাণ করেছেন আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি। নগরীর নজরুল এভিনিউ এলাকায় নির্মাণ করেছেন বাণিজ্যিক ভবন। নগরীতে নিজের বাড়িসংলগ্ন দারুস সাফিদ ও সিলভার ক্রিসেন্ট নামের দুটি ভবনে নিজের এবং ভাতিজার নামে কিনেছেন কয়েকটি ফ্ল্যাট। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ৮ হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট, তিনটি বিলাসবহুল জিপগাড়ি, ঢাকা উদ্যান এলাকায় চারতলা ও আগারগাঁও শাপলা হাউজিংয়ে রয়েছে তিনতলা বাড়ি। কুমিল্লার কোটবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসংলগ্ন স্থানে হোটেল ও ফিলিং স্টেশন রয়েছে। চৌদ্দগ্রামের মিয়ার বাজারে নির্মাণ করেছেন কাকরি টাওয়ার নামে বাণিজ্যিক ভবন।
ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের শেষের দিকে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরলেও মুজিবুল হককে কুমিল্লায় দেখা যায়নি। শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। অনেকেই বলছেন মুজিবুল হক দুবাই চলে গেছেন। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে নিশ্চিত হতে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পয়েন্ট হারিয়েও শীর্ষে আর্জেন্টিনা,অবনতি বাংলাদেশের
বিদেশে সাবেক ভুমিমন্ত্রীর আট হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি
ইউনূস গুড উইলের প্রতিফলন দেখতে চায় জনগণ: রিজভী
সময় থাকতে হাসিনাকে ফেরত পাঠান : ভারতকে দুদু
রুশ সেনা কুরস্কের দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে
বিমানবন্দর এলাকা হবে শব্দদূষণ মুক্ত
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান ৭ দিনের রিমান্ডে
বিচার শুরু হলে হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে : আইন উপদেষ্টা
লোহাগড়ায় দিনে-দুপুরে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই
রাষ্ট্রীয় কল্যাণে অবদান রাখার সুযোগ দিন আলেমদেরকে
দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্টের ওপর হামলার ঘটনায় বিএমটিএর নিন্দা
জিএম কাদের ও মজিবুল হক চুন্নুকে অবিলম্বে আটক করতে হবে : আবু হানিফ
উপদেষ্টাদের আয় ও সম্পদ বিবরণী প্রকাশের নীতিমালা অনুমোদন
সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল-এমপি হেনরিসহ ৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিকে একবছর ,সাধারন সম্পাদককে দুই বছর একাডেমীক কার্যক্রম থেকে বহিস্কারসহ উভয়কে হোস্টেল থেকে আজীবন বহিস্কার।
ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৫ শিক্ষার্থী গ্রেফতার
রাজউক চেয়ারম্যানের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল
‘স্পেন্ড অ্যান্ড উইন’ ক্যাম্পেইনের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করেছে মাস্টারকার্ড
সিটি ব্যাংক আনল অভূতপূর্ব ভিসা ইনফিনিট ক্রেডিট কার্ড
শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমা নেই, জবাব তাকে দিতেই হবে : মির্জা ফখরুল