বিএনপির অবস্থানেই ১২ দলীয় জোট

১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠক

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০ পিএম | আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০ পিএম

১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। রোববার মালিবাগে ১২ দলীয় জোটের একটি দলের কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনকে অপসারণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, প্রেসিডেন্টকে চলে যেতে হবে, এ বিষয়ে সবাই নীতিগতভাবে একমত। তবে চলে যাওয়া বা অপসারণের প্রক্রিয়া কী হবে সে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিকভাবে ঐকমত্যের দরকার আছে।

তিনি বলেন, বিএনপি, ১২ দলীয় জোট, জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আমরা চাই সবাই একমত হয়ে একটি সিদ্ধান্ত যেন আসে। আমরা এ বিষয়ে জনমত তৈরিতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

সাংবিধানিক সংকট তৈরির পাঁয়তারা চলছে বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ইস্যুতে বিএনপি'র সাংগঠনিক বক্তব্যের জন্য অপেক্ষা করব।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, বিএনপিকে আহ্বান জানাব জনগণের পাল্‌স বুঝুন। প্রেসিডেন্ট হাউজে যে গোখরা সাপ বসে আছে, তাকে বিদায় করতে সহযোগিতা করুন। গত তিনটি নির্বাচন অবৈধ ঘোষণার বিষয়ে ১২ দলীয় জোট একমত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

বৈঠকের বিষয়ে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ও জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, নৈতিকভাবে আমরা প্রেসিডেন্টের অপসারণ চাই। তবে এর প্রক্রিয়া কি হবে? এর ফলে দেশে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হবে কিনা? তৃতীয় পক্ষ সুবিধা গ্রহণ করবে কিনা? সে বিষয়গুলো আমরা ছাত্র নেতাদের কাছে জানতে চেয়েছি।

তিনি বলেন, যে বিষয়টি নিয়ে তারা আলোচনা করছে সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক ঐক্যমতের বিষয় আছে। বিএনপি এই মুহূর্তে দেশেল ৮০ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করছে। তাদেরকে পাশ কাটিয়ে বা তাদেরকে বাদ দিয়ে দেশে রাজনৈতিক ঐক্য সম্ভব হবে না। আমরা ছাত্রদের বলেছি, তোমরা সকলের সঙ্গে আলোচনা কর, সকলে যদি ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারে তখন আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত জানাবো।

১২ দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, ১২ দল দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির সঙ্গে আছে। আমরা আমরা বিএনপির সঙ্গেই আছি।

১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র শাহাদাত হোসেন বলেন, এ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট পদে শূন্যতা হলে সাংবিধানিক সংকট তৈরি হবে এবং বিলম্বিত হবে নির্বাচন। বৈঠকে তাঁরা তাঁদের এ অবস্থান জানিয়েছেন।

জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, নীতিগতভাবে প্রেসিডেন্টের অপসারণের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি। কত দ্রুত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। পুরো জাতি এক হয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেন উপনীত হওয়া যায়, সেটি আমরা চাই। রাজনৈতিক দল এবং শক্তিগুলোর মধ্যে যেন এ নিয়ে কোনো সংশয় না থাকে, সেটা আমরা চাই। সবাই এক হয়ে আমরা যেন এ বিষয়ে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারি, সে জন্য সময় লাগলেও তা করতে হবে।

এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সরকারের ব্যর্থতা সমগ্র দেশের জন্য ভয়াবহ পরিণত ডেকে আনবে। এই সরকারের সাফল্য চাই। যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার শেষ করে নির্বাচন চাই আমরা। গণতন্ত্র মুক্তির আন্দোলনে বিএনপিসহ যারা মাঠে ছিল, তাদের সবার মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠারও আহ্বান জানান তিনি।

বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, আরিফ সোহেল, উমামা ফাতেমা ও আবদুল হান্নান মাসউদ। আর জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী, সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব।

১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার, শাহাদাত হোসেন সেলিম, সৈয়দ এহ্সানুল হুদা, মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, মো. ফারুক রহমান, শামসুদ্দিন পারভেজ ও এ এস এম শামীম।


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ
১০০ টাকা ঘুষ খেলেও চাকরি থাকবে না: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
আরও

আরও পড়ুন

গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ

গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ

এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ

এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ

আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?

আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?

হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে

হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে

ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন

ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন

দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা

দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা

নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই

নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই

ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে

ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে

বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম

বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম

সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা

সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা

সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ

সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার

৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার

সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী

সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার

বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক

জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

জমকালো আয়োজনে পালিত হলো বান্দরবান সেনাবাহিনীর ৬৯ ব্রিগেডের ৪৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ

বিহারীরা কেমন আছে

বিহারীরা কেমন আছে

ব্রাহ্মণপাড়ায় ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর সন্তান প্রসব! আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার

ব্রাহ্মণপাড়ায় ধর্ষণের শিকার হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী যুবতীর সন্তান প্রসব! আতংকে ভুক্তভোগী পরিবার