ফ্যাসিস্ট আমলে তুলসী গ্যাবার্ডের করা পুরানো রেজুলেশন নিয়ে এবার ভারতীয় মিডিয়ার বাংলাদেশ-বিরোধী মিথ্যাচার
১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৮ পিএম | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:০৮ পিএম
ডেমোক্রেটিক দলীয় সাবেক এমপি এবং পরে রিপাবলিকান পার্টিতে যোগ দান কারি তুলসী গ্যাবার্ডের মার্কিন কংগ্রেসে উত্থাপন করা পুরানো একটি প্রস্তাব নিয়ে এবার বাংলাদেশ বিরোধী মিথ্যা প্রচারণায় মেতে উঠেছে ভারতীয় মিডিয়া।
বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ এনে প্রস্তাবটি আনা হয় ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই। পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে ভারতীয় কিছু মিডিয়ায় পুরনো এই রেজুলেশনটি নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে। এটি এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে যেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ হয়েছে বা হিন্দুদের উপর নির্যাতনের এই অভিযোগ সম্প্রতি আনা হয়েছে। অথচ এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয় তৎকালীন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের শাসনামলে।
আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনের দীর্ঘ ১৬ বছরের বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দুদের উপর যে কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকি আসামের একটি পত্রিকায় আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে 'হিন্দুরা থাকলে ভোট পাই, আর চলে গেলে জমি পায়' শিরোনামে সে সময় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয় যা দুদেশে তোলপাড় ফেলে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারত সরকার ও ভারতীয় মিডিয়া বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতন নিয়ে বরাবরই মিথ্যাচার ও প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছে। অথচ সে দেশে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় প্রতিনিয়ত ভয়াবহ নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। যা নিয়ে মার্কিন সরকার বিভিন্ন সময় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে আসছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের আমলে হিন্দু নির্যাতন নিয়ে আনা এই প্রস্তাবকে বর্তমান ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার প্রচেষ্টা কেবলই হাস্যকর।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের ভিডিও চ্যানেল মিন্ট-এ তুলসী গ্যাবার্ডের পুরনো ভিডিওটি প্রচার করা হয়। যা নিয়ে প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ভারতীয় মিডিয়ায় এমনভাবে প্রচার করা হচ্ছে, যেন তুলসী গ্যাবার্ডে একজন আন্তর্জাতিক ইন্টেলিজেন্স। অথচ তাকে একজন অভ্যন্তরীণ ইন্টেলিজেন্স হিসেবে জানে সবাই
'বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার আহ্বান' শিরোনামে সেই প্রস্তাবনায় যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন কংগ্রেস সদস্য তুলসী বলেন, বাংলাদেশে ধর্ম ও জাতিগত পরিচয়ের কারণে নির্যাতন ভোগ করে চলেছে এই জনগোষ্ঠীগুলো।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই নির্যাতনের সূচনা ঘটে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে হিন্দু শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম আক্রমণ চালায়, যেখানে প্রথম রাতেই ৫-১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই অভিযান ১০ মাস ধরে চলে, যার ফলে দুই থেকে তিন মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু এবং ১০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। মার্কিন সিনেটর টেড কেনেডি সেসময় বাংলাদেশি শরণার্থীদের সঙ্গে দেখা করে এ পরিস্থিতিকে "সন্ত্রাসের সুনির্দিষ্ট অভিযান এবং গণহত্যার ফলাফল" হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও ইসলামি চরমপন্থীদের দ্বারা হিন্দু, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও মুক্তচিন্তকদের উপর নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক ঘটনায়, শতাধিক চরমপন্থী দল বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির আক্রমণ, ট্রেন ধ্বংস, সরকারি ভবন, প্রেস ক্লাব এবং গণপরিবহনে অগ্নিসংযোগ করেছে।
ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের এই পরিস্থিতি শুধুমাত্র বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ নয়, বরং অন্যান্য দেশেও দেখা গেছে। মার্কিন কংগ্রেস সদস্যের মতে, এই পরিস্থিতি রুখতে আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, তুলসী গ্যাবার্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স) প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম ‘হিন্দু নারী’ হিসেবে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক হলেন। যদিও তার গোয়েন্দাগিরির অভিজ্ঞতা নেই। এর আগে তিনি হাওয়াইয়ের ডেমোক্র্যাটিক দলীয় এমপি ছিলেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সদরপুরে মোটরসাইকেল-অটোরিক্সার সংঘর্ষে প্রাণ গেল কলেজ ছাত্র আসিফের
রাউজানে সমন্বয়ক রাফির ওপর হামলা, থানায় অভিযোগ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদন বিকেলে শুরু
মনোহরদীতে যুবকের বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন প্রিন্সেস রিমা
মানবতাবিরোধী অপরাধীরা যেন নির্বাচন করতে না পারে : বদিউল আলম মজুমদার
মাগুরায় ৬ ইটভাটায় অভিযান: ১৩ লাখ টাকা জরিমানা, ২টি ভাঙ্গচুর
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে মাস্কের বিতর্কিত ইশারা নিয়ে তীব্র সমালোচনা
লাখ লাখ ভারতীয় হারাতে যাচ্ছেন মার্কিন নাগরিকত্ব
শরীয়তপুর পৌরসভার খাল উদ্ধার অভিযান শুরু
কলাপাড়ায় গভীর রাতে বসত ঘরে প্রবেশ করে গৃহবধূকে হত্যা করে দুর্ধর্ষ ডাকাতি
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে ‘সুপারিশ’ নিয়ে যা বললেন বদিউল আলম মজুমদার
আমাদের একমাত্র লক্ষ্য আমেরিকার শত্রুদের পরাজিত করা: ট্রাম্প
সড়ক থেকে সরেছেন প্রবাসীরা, স্বাভাবিক হয়েছে যান চলাচল
হিজাববিহীন তাওয়াফ! কে এই পাকিস্তানি নারী?
চীনের যে অস্ত্রের ভয়ে কাঁপছে ভারত আমেরিকা
প্রথম সামাজিক অনুষ্ঠানে নাচলেন ট্রাম্প-মেলানিয়া
ফেসবুকে যা লিখলেন আলোচিত অভিনেতা জয়
শিল্পী সমিতি থেকে ফ্যাসিস্ট নিপুণের স্থায়ী বহিষ্কার
অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পের কঠোর পদক্ষেপ, সিবিপি ওয়ান অ্যাপ বাতিল