জাতির প্রত্যাশা দ্রুত নির্বাচন : ড. ইউনূসের ভাষণ প্রসঙ্গে
১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ পিএম | আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান ‘দ্রুত সংস্কার এবং দ্রুত নির্বাচনে’র যে কথা ৫ আগস্ট(২০২৪) থেকে বলে চলেছেন, তারই ধারাবাহিক ভাবনা প্রকাশিত হয়েছে সরকারের ১০০ দিনের মাথায় এসে। ৬ আগস্ট তিনি বলেছিলেন- ‘জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে যথাসম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে।
জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সব রকমের সহযোগিতা করবে।’ পুনরায় বললেন-‘বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সেটি হচ্ছে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের, গণতান্ত্রিক সমাজের- সেটি বাস্তবায়িত করতে আমাদের যে সমস্যাগুলো সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলো দূর করতে হবে। নির্বাচন কেন্দ্রিক যে সমস্যাগুলো আছে এগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। আমি আশা করবো আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা, আমাদের নির্বাচন কেন্দ্রিক প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার ব্যবস্থা এগুলো সংস্কার করেই আমাদের অতিদ্রুত নির্বাচনে যাওয়াটাই হবে এদেশের মানুষের জন্য সবচেয়ে কল্যাণের।’ (১৬/১১/২০২৪)
দেশনায়কের মতো দেশপ্রেম ও মানবকল্যাণের ভাবনা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ক্ষুদ্রঋণের প্রবর্তক ও শান্তিতে নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসেরও আছে। কিন্তু গত তিন মাস জুড়ে দেশের ভেতরে নানাবিধ ঘটনা, শঙ্কা-আশঙ্কা, ভয় ও আতঙ্ক জনমনে বিভিন্ন প্রশ্ন জাগ্রত করেছে। পুরানো উপদেষ্টা এবং নয়া উপদেষ্টাদের গণবিচ্ছিন্নতাও চোখে পড়ার মতো। কেবল দৃষ্টিগ্রাহ্য অকাজ নয় বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাছাড়া তরুণ সমাজকে পুঁজি করে দ্রুত সংস্কারের দিকে মনোনিবেশ না করে উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড দিয়ে জাতিকে অন্যদিকে দৃষ্টি দিতে অগ্রহণযোগ্য কাজের সারণি বৃদ্ধি পেতে দেখা যাচ্ছে। অন্যদিকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার ত্বরান্বিত হওয়া দরকার। ড. ইউনূসের জনপ্রিয়তা আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা গেলে। অবশ্যই এটি নির্বাচিত সরকারের জন্য ঝুলিয়ে রাখা ঠিক হবে না। অবশ্য নির্বাচন নিয়ে ড. ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিয়ে জানিয়েছেন সংস্কারের পরই নির্বাচন দেওয়া হবে।
১৭ নভেম্বর (২০২৪) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ‘নির্বাচনী সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপও পেয়ে যাবেন।...নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। এটা আর থামবে না। কিন্তু যেতে যেতে আমাদের অনেকগুলি কাজ সেরে ফেলতে হবে। এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছাবে সেটা নির্ভর করবে কত তাড়াতাড়ি আমরা তার জন্য রেল লাইনগুলি বসিয়ে দিতে পারি আর তা হবে রাজনৈতিক দলসমূহের ঐক্যমত্যের মাধ্যমে।’ ভাষণের তাৎক্ষণিক প\তিক্রিয়ায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘একটি শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যে কাজ করা দরকার, তিনি (ড. ইউনূস) সেটা করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি। জাতির আশা আকাক্সক্ষার সঙ্গে মিল রেখেই তিনি কাজ করবেন বলে আমার বিশ্বাস; যাতে গণতন্ত্রকে আরও বেশি শক্তিশালী করা যায়।’(দৈনিক যুগান্তর, ১৮/১১/২০২৪) অবশ্য তিনিও গত তিন মাস ধরে বলে চলেছেন- দ্রুত সংস্কার, দ্রুত নির্বাচন। নির্বাচনি ট্রেনের কথা কাতারভিত্তিক মিডিয়া আল জাজিরাকেও এক সাক্ষাৎকারের সময় ড. ইউনূস বলেছেন, “The train will reach its final station depending on how quickly we can lay down the railway tracks, and this will happen through consensus among the political parties.” Bangladesh’s Yunus seeks time, says election roadmap after reforms. (Al Jazeera, 17/11/2024)
এই নির্বাচনি ট্রেনের যাত্রাপথের বিলম্ব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন এসেছে। সংস্কার ও নির্বাচনের ইস্যু নিয়ে বিদেশি গণমাধ্যমও বেশ সচেতন। ১৩ নভেম্বর (২০২৪) ইকোনমিস্টের রিপোর্ট-©-`After the revolution, Bangladesh is stable. For the moment/Muhammad Yunus, the interim leader, needs to set a date for elections.’ (The Economist, ১৩/১১/২০২৪) লন্ডনের বিখ্যাত এই ম্যাগাজিন লিখেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক ভিত্তি নেই কিন্তু ছাǎ-জনতার আন্দোলনের পর দেশের মানুষের নির্ভরতার প\তীকে পরিণত হন তিনি।
ড. ইউনূসের বৈধতা নির্ভর করে তার নৈতিক কর্তৃত্ব ও জনপ্রিয়তার ওপর। এর ভিত্তি ঝুঁকিপূর্ণ।কোনো ভোটে এর সমর্থন আদায় করা হয়নি। দ্য ইকোনমিস্ট রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ড. ইউনূসের কাছে দ্রæত নির্বাচন দাবি করছে, সম্ভবত যতটা সম্ভব জুনে। তিনি সেটা না দেওয়া পর্যন্ত তারা গণআন্দোলন করতে পারে। ড. ইউনূসের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ, ক্ষমতায় থাকার তিন মাস পরে নির্বাচনের জন্য তাকে একটি টাইমটেবিল ঘোষণা করা উচিত। সেটা হতে পারে এক বছর বা তেমন সময়ে। আইনি এবং নির্বাচনী সংস্কারের জন্য কেন সময় প্রয়োজন তা ব্যাখ্যা করার জন্য তাকে আরও কিছু করতে হবে। এই সংস্কার দীর্ঘমেয়াদে গণতন্ত্রকে সমৃদ্ধ করবে। ড. ইউনূস দেশের তত্ত্বাবধায়ক হওয়ায় বহু মানুষ উল্লাস করেছে। কিন্তু কীভাবে তিনি শাসন করবেন এবং কীভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন তার একটি পরিষ্কার পরিকল্পনা দেয়া উচিত। এক্ষেত্রে অনেক দেরি হলে বাংলাদেশের বিপ্লব অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়তে পারে।’
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট বাংলাদেশ সফরে এসে ১৭ নভেম্বর সাংবাদিকদের বলেছেন-‘গণতন্ত্র ফেরাতে রূপরেখা ঘোষণা করবেন ড. ইউনূস’।(দৈনিক ইনকিলাব, ১৭/১১/২০২৪) সেইসঙ্গে জানিয়েছেন-রাজনীতিতে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রত্যাশা করে যুক্তরাজ্য। সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশের মিডিয়া কেবল নয় Bout de Papier-মতোও ঘটনা ঘটছে। অর্থাৎ ‘পিস অফ পেপার’ দিয়েও বিভিন্ন পরিস্থতিতে অনানুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি উত্থাপিত হচ্ছে।
ফ্যাসিবাদী হাসিনার বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার বিজয় ড. ইউনূসকে ক্ষমতাসীন করেছে। কিন্তু সেই বিজয়ের প্রকাশ্য ও নেপথ্যের নেতা-কর্মীরা আজ অবহেলিত বলেই কি নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের জন্ম হয়েছে? অবহেলার প্রসঙ্গে বলতে হয়-আহতদের দীর্ঘমেয়াদি এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসা এবং শহিদদের পরিবারের দেখা-শোনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করার কথা থাকলেও তা সম্পন্ন হয়নি। প\তিটি শহিদ পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি করা হলেও তার পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যায়নি। এমনকি যারা বুলেটের আঘাতে তাদের দৃষ্টি শক্তি হারিয়েছেন তাদের চিকিৎসার জন্য নেপাল থেকে কর্নিয়া আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে- বলা হলেও কার্যকর উদ্যোগ এখনো অনেক দূরে। গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ এবং আহত ছাত্র শ্রমিক-চিকিৎসা সেবা এবং পুনর্বাসন পরিকল্পনা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকার থাকলেও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন বলে জনগণ মনে করেন। ১৬ নভেম্বর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই জন-আকাক্সক্ষার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সরকারের কিছু কিছু সিদ্ধান্তের কারণে মনে হয় তারা গণমানুষের প্রতি মনোযোগ দিতে চাইছে না; বরং তারা যেটা ভালো মনে করছে, সেটাই হয়তো তারা চাপিয়ে দিতে চাইছে।’
প্রকৃতপক্ষে অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় অদক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে বলে জনমনে নানা প্রশ্ন এসেছে। একথাও ঠিক ১৬ বছরের জঞ্জাল ৩ মাসে দূর করা সম্ভব নয়। কিন্তু এটাও তো ঠিক বিরাজমান নানা প্রসঙ্গ জনগণকে অস্থির করে তুলেছে। তিন মাসে অনেক অপ্রাপ্তি থাকার পরও জনগণ কিন্তু এখনো এই সরকারের ওপর আস্থা রাখতে চাইছে, তারা আস্থা হারাতে চাইছে না। তবে একটা প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার কি আদৌ জনগণের ওপর আস্থা রাখতে চায়? কারণ, জনগণের সঙ্গে সরকারের আস্থার সম্পর্ক নিবিড় থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা ডালপালা বিস্তারের সুযোগ পাবে না। মনে রাখতে হবে, ষড়যন্ত্রকারীরা ওত পেতে আছে, কীভাবে সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়া যায়। সেটা দেশের ভেতরে হোক, বাইরে হোক; প্রশাসনের ভেতরে হোক বা বাইরে হোক; ওরা কিন্তু ওত পেতে আছে। সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়া গেলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ব্যর্থ করে দেওয়া যাবে-বলেছেন তারেক রহমান।
অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বিষয়ে মনে রাখা দরকার, সরকার পরিচালনায় যদি অদক্ষতা পরিলক্ষিত হয় বা জনগণ দেখতে পায়, সেটা জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না। এজন্য এই সরকারের অগ্রাধিকার নির্ধারণে ভুল হওয়া চলবে না। অথচ দেখা গেছে, জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, অঙ্গহানি হয়েছে, তারা স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সামনে যেভাবে হাসপাতাল থেকে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন, এটা দেশবাসীর জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা ছিল। গণমানুষের মনে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক, গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, নিরাপত্তা অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারে নেই কেন? আহতরা চিকিৎসার জন্য আন্দোলন করছে। ফলে দেশ-জাতির বিবেক আবার জাগ্রত হচ্ছে। ইউনূস সরকার কি ক্ষমতা ইনজয় করছেন। তারা গত তিন মাসে কি করেছেন? শহীদ পরিবারগুলো দৃশ্যত সহযোগিতা পায়নি। নির্দিষ্ট সংখ্যক শহিদের লিস্ট বানাতে পারেননি কেন? এমনকি বাজার সিন্ডিকেট ভাঙা সরকারের অগ্রাধিকারে থাকাও জরুরি ছিল- তাও নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
মনে রাখতে হবে এদেশের ইতিহাসে ড. ইউনূস সরকারই প্রথম শাসক যারা ৯৭ শতাংশ মানুষের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করেছেন। তবে তার সরকার অন্তর্বর্তীকালীন; অনন্তকালীন নয়। যদিও এ সরকার জনপ্রিয় ও শক্তিশালী সরকার। যেখানে বিরোধিতা করার কেউ নেই, যেখানে ডাক দিলেই যুবসমাজ এগিয়ে আসে। সেখানে ব্যর্থ হওয়ার কথা নয় উপদেষ্টা পরিষদের। এজন্য দ্রুত সংস্কার শেষে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ১৭ নভেম্বরে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে নির্বাচনের রোডম্যাপ নেই। এটি গতানুগতিক সরকারের বক্তব্যের মতো ছিল। অথচ এদেশের মানুষের আস্থা ড. ইউনূসের উপর। কারণ তিনি অনন্য। কিন্তু তার উপদেষ্টাদের কেউ কেউ ভুল পথে হাঁটছেন। কিছু আছেন যারা প্রধান উপদেষ্টাকে ঘিরে আছেন, ব্যর্থ করতে চাচ্ছেন সরকারকে। আপাত দৃষ্টিতে তারাই দেশ চালাচ্ছেন। মনে হচ্ছে ড. ইউনূস নামক গ্রহকে রাহু গ্রাস করেছে।
ড. ইউনূস সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে দুএকজন ব্যতীত কাজে-কর্মে জনমানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন নেই, গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট নেই তাদের আচরণে। আন্দোলনে কোনো ভ‚মিকা রাখেননি উপদেষ্টা পরিষদে তাদের সংখ্যাই অনেক বেশি। সেখানে আঞ্চলিকতার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষত চট্টগ্রাম থেকে ১৩ জন কেন দায়িত্বে থাকবেন? কথা উঠেছে পক্ষপাতদুষ্ট এই পরিষদ। জনমনে প্রশ্নের বিষয়ে ড. ইউনূসকে ভাবতে হবে। তিনি প্রধান হিসেবে ভালো টিম এখনও করতে পারেন। কিছুদিন আগে দায়িত্ব গ্রহণকারী উপদেষ্টাদের কার নির্দেশে নিয়েছেন তিনি? ফারুকী বা আরো যারা আছেন তাদের কারণে আন্দোলনের স্পিরিট নষ্ট হয়েছে। ইউনূস সরকারের উপর আস্থা নষ্ট হওয়াটা দুঃখজনক। আসলে জাতির প্রত্যাশা অনুসারে দ্রুত নির্বাচন হলে ড. ইউনূস সরকারের সফলতা আসবে।
তবে বলা দরকার, বিএনপি দ্রুত নির্বাচন চায় ক্ষমতায় যাবার জন্য-একথা ঠিক নয়। এজন্যই দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন এ সরকারকে ব্যর্থ হওয়া যাবে না। নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় পৌঁছানোর প্রক্রিয়া। খুনি হাসিনার বিচার করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। উপদেষ্টাদের প্রতি অনুরোধ জাতিকে আশা দিন। দ্রুত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হবে। তা না হলে ড. ইউনূস জবাবদিহি করবেন কার কাছে?
তারেক রহমান বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণ আশা করে, তারা একটা নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ পরিবেশে, নির্ভয়ে ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে।’(১৫/১১/২০২৪) দেশের বেশির ভাগ মানুষের আকাঙ্ক্ষা হলো বিরাজমান সমস্যাগুলো দূর করে খুব দ্রুত নির্বাচন দেওয়া। জনতার দাবি-নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার দ্রুত করতে হবে। নির্বাচনব্যবস্থা, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলার সংস্কাার করে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন সম্ভব। তার চেয়ে বেশি কিছু করতে গেলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে। উল্লেখ্য, গণ-আন্দোলনে স্বৈরাচারী শাসকের পতন শেষে দ্রুত এবং কম সময়ের মধ্যে নির্বাচন হয়েছে তিউনিসিয়া, মিশর, লিবিয়া, ইয়েমেন, সুদান, ইরাক, জর্ডান এবং কুয়েতে। এসব দেশের কথাও ড. ইউনূসকে মনে রাখতে হবে। আরো মনে রাখতে হবে অন্তর্বর্তী যাত্রা, অনন্ত যাত্রা নয়।
(লেখক: সাবেক চেয়ারম্যান এবং অধ্যাপক, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কলকাতায় বাড়ির ছাদ ভেঙে দুই ভাইয়ের মৃত্যু
লালমনিরহাটে মামার কোদালের কোপে ভাগিনার মৃত্যু , আটক-২
জকিগঞ্জে অর্থনৈতিক শুমারি উপলক্ষে অবহিতকরণ সভা
কোকেন সেবন করে নিষিদ্ধ ব্রেসওয়েল
পার্বতীপুরে গলায় রশি দিয়ে কৃষকের আত্মহত্যা
আরিচা-কাজিরহাট নৌরুট: ফেরি চালু হলেও কাটছে না শঙ্কা
পাবনায় পরিত্যক্ত অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ গুলি জব্দ
তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি, সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা
প্রাক-২০৩০ উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য অর্জনের আহ্বান জানালো বাংলাদেশ
পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেই ছাড়ল অস্ট্রেলিয়া
সৈয়দ ফজলুল করীম রহ. ছিলেন সকল বাতিলের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর -অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান
স্বৈরাচার পতনের পর মানুষ ভালো কিছু আশা করে- চরমোনাই পীর
গিলেস্পিই থাকছেন পাকিস্তানের কোচ: পিসিবি
ঈশ্বরগঞ্জে চোরাই মোটর সাইকেলসহ দুই চোর আটক
নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতকে ধসিয়ে দেওয়ার সুযোগ নাই: এবি পার্টি
তারেক রহমানের বার্তা পৌঁছানো হলো নাসিরনগরের শিক্ষার্থীদের কাছে
গাজায় আরও ৩ ইসরায়েলি সেনা নিহত
রাস্তাঘাটে দেখা হলে সমস্যার কথা বলবেন- শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে চবি ভিসি
স্কাউট গ্রুপের সহায়তায় ইউক্রেনীয় শরণার্থী শিশুদের নতুন জীবন
কুয়েটকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে শিক্ষার্থী-এলাকাবাসীর হুঁশিয়ারি