জামিনে বেরিয়ে এসে সরকারবিরোধী আন্দোলনে সংঘবদ্ধ হচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতারা

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা

০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পিএম | আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পিএম

৫ আগস্টের পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যার ঘটনায় থানায় দায়ের করা মামলায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে থাকা আসামিরা জামিনে বেরিয়ে এসে সরকার বিরোধী আন্দোলনে সঙ্গবদ্ধ হচ্ছেন বলে একাধিক প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে। এরই মধ্যে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা শ্রমিক লীগের সভাপতি ও গাজীপুর কাঁচামাল আরৎদার মালিক গ্রুপের সভাপতি আব্দুস সোবাহানকে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের পর তাকে বাসন থানায় দায়ের করা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যা মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সে ওই মামলায় জামিনে বেরিয়ে এসে রাজনীতিকভাবে ‌ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার চেষ্টার

অভিযোগে বুধবার তাকে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালত তার রিমান্ড না মঞ্জুর করে তাকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ প্রদান করেন বলে আদালতের একটি সূত্র জানায়।

একাধিক প্রাপ্ত তথ্যে আরও জানা গেছে, এছাড়া গাজীপুর মহানগরীর ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল্লাহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দায়ের করা হত্যা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন। শহীদুল্লাহর বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখল করে জাল দলিলের মাধ্যমে বিভিন্ন জনের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অপহরণ ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে। শহীদুল্লাহর বিরুদ্ধে এর আগে একাধিক অপরাধমূলক মামলা থাকার পরও তাকে গাজীপুর মহানগরীর ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি করায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এবার হত্যা মামলার আসামী হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের বিষয়টি ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

ওই সূত্রের তথ্য মতে আরও জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানায় দায়ের করা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের উপর হামলা ও হত্যার ঘটনায় একাধিক মামলা দায়ের হয়। থানায় দায়ের করা ওই মামলায় গাজীপুর মহানগরীর ১৪ নং ওয়ার্ডের ইসলামপুর এলাকার মুক্তার হোসেন ও শরিফুল ইসলাম নামে দুইজন আওয়ামী লীগ নেতা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়ে এলাকায় অবস্থান করছেন। হত্যা মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনে বেরিয়ে আসার পর এরা এখন সরকার বিরোধী আন্দোলনে সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

বাসন থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, মুক্তার হোসেন ও শরিফুলকে গ্রেপ্তারে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। শরিফুল ও মুক্তার জামিনের রিকল দেখালে তাদের দুজনকে ছেড়ে আসা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সচেতন মহলের একাধিক ব্যক্তি জানায়, আমরা জানি মামলায় জামিন পাওয়ার অধিকার আসামিদের রয়েছে। আদালত কাকে জামিন দিবেন, আর কাকে দিবেন না সেটি আদালতের বিচারকের বিষয়। আমরা মনে করি জামিনে বেরিয়ে এসে কেউ যেন পুনরায় অপকর্ম করতে না পারে সেটাই দেখার বিষয়। জামিনে বেরিয়ে এসে সরকার বিরোধী আন্দোলনে সঙ্ঘবদ্ধ হওয়া প্রসঙ্গে তারা বলেন, আদালতের দেওয়া শর্ত বন্ধ করলে আদালত তাদের জামিন বাতিল করবেন বলে আমরা মনে করি।

বিভাগ : জাতীয়