শাড়ি পুড়িয়ে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহবান রিজভীর
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ এএম
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমননা এবং আগরতলায় সহকারি হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনে’র আহŸান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক অনুষ্ঠানে নিজের স্ত্রী আরজুমান আরা বেগমের দেয়া ভারতীয় শাড়ি নিজের হাতে ছুড়ে ফেলে দেন। পরে নেতা-কর্মীরা সেই শাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। রিজভী বলেন, যারা আমার দেশের পতাকাকে নেমে ছিঁড়ে দেয় আমরা তাদের দেশের পণ্য বর্জন করব। আমরা তাদের দেশের যে শাড়ি কিনতো আমাদের মা-বোনেরা-স্ত্রীরা তারা আর ভারতীয় শাড়ি কিনবে না। তারা ভারতের সাবান কিনবে না, তারা ভারতের টুথপেষ্ট কিনবে না, তারা ভারতের কোনো কিছু কিনবে না। আমার দেশ আমরা স্বনির্ভর। আমার এখানে পেঁয়াজ হয়, ভারতের পেঁয়াজের চাইতে আমাদের পেঁয়াজের ঝাঁজ অনেক বেশি, ভারতের মরিচের চাইতে আমাদের মরিচের ঝাল অনেক বেশি, আমাদের যদি জায়গা না থাকে আমরা ছাদের ওপরে মরিচ লাগাব, আমরা বাড়ির উঠানের মধ্যে পেঁপে গাছ লাগাব, তাই আমরা এদের (ভারত) মুখাপেক্ষী হবো না, আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করব। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রেসক্লাবের সামনে ‘দেশীয় পন্য কিনে হও ধন্য’ ব্যানারে ভারতীয় পণ্য বর্জন ও দেশী পণ্য ব্যবহার উসাহিত করতে এই অনুষ্ঠানটি হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি পুরনো শাড়ি আমার বাসায় আমার স্ত্রীর ছিলো, আমার স্ত্রী আমাকে দিয়েছে একটি ইন্ডিয়ান শাড়ি, এটা আজকে আপনাদের সামনে আমি ছুড়ে ফেললাম (ছুঁড়ে ফেলে দিলে কর্মীরা ভারত বিরোধী শ্লোগান দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়)। আর কোনো ভারতীয় শাড়ি নয়। আমরা টাঙ্গাইলের শাড়ি কিনব, আমরা রাজশাহীর সিল্ক, আমরা কুমিল্লার খদ্দর কিনব। এ সময়ে কর্মীরা শ্লোগান দিতে থাকে ‘বয়কট বয়কট, ভারতীয় পণ্য’।
ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের ওপর মুখাপেক্ষী থাকব এটা ভাবার কারণ নেই। আপনারা একটু দেবেন আর বলবেন তা শুনতে হবে, এটা দুই-একজন হাসিনার মতো লোক বলতে পারে, কিন্তু কোটি কোটি বাংলাদেশের মানুষ এটা করবে না। তবে আমার দেশের জনগণকে বলব, ওরা যে বাংলাদেশকে লুন্ঠিত করার চেষ্টা করেছে, বাংলাদেশের পতাকা পুঁড়িয়েছে, আমাদের মর্যাদাহানি করার চেষ্টা করেছে, আমরা ভারতের পতাকাকে লাঞ্ছিত করব না, আমরা আরেকটা স্বাধীন দেশের মর্যাদাকে ছোট করব না, আমরা প্রত্যেক জাতির যে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সেটিকে অসন্মান করব না, আমরা ওদের মতো ছোটলকি করব না। আমরা ওদের দেশের পতাকাকে সন্মান করব কিন্তু ওদের পণ্য বর্জন করব।
ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছো, তোমরা আমাদেরকে পছন্দ করো না। তারপরও তোমাদের জিনিস আমাদের কিনতে হবে? বাংলাদেশের মানুষ তো মাথানত করার মানুষ না। আমরা এক বেলা খেয়ে থাকব, তারপরও আমরা মাথানত করবো না।
রিজভী বলেন, ভারতের অনেক সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা বলেন যে, আমাদের (ভারতে) এখানে না আসলে আপনাদের (বাংলাদেশের মানুষের) চিকিৎসা হয় না। আমি প্রশ্ন করি, আরে আপনারা কি বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেন, আপনারা কি বিনা টাকায় এক কাপ চা খাওয়ান, এই নজির তো নেই আপনাদের। বাংলাদেশের লোক ডলার খরচ করে ওখানে গিয়ে। এখন কলকাতার নিউ মার্কেট বন্ধ, দোকান পাট বন্ধ, সেখানে আর কোনো খরিদদার নেই।
তিনি বলেন, ওখানের একজন ডাক্তার নাকি বলেছেন, এবার বাংলাদেশের রোগী আসলে সেখানে ভারতীয় পতাকা এমনভাবে রাখা হবে যেন তারা মাথা নিচু করে ঢুকে। আপনারা বাংলাদেশের মানুষকে চিনেন না, আপনারা অনেক জাতিকে সেখানে (ভারতে) পদানত করে রেখেছেন যারা স্বাধীনতা চায়, কিন্তু বাংলাদেশের মানুষকে চিনেন না। ওই পশ্চিম পাকিস্তানি পাঞ্জাবিরাও কিন্তু এদেশের মানুষকে, লুঙ্গি পরা মানুষ হাতে স্ট্যান্ড গান নিয়ে পরাভ‚ত করেছে। নদীনালার দেশ, খাল-বিলের দেশ, বন্যা-খরার দেশ আমরা কি করে এই অবস্থায় শত্রæদের প্রতিরোধ করতে হয় সেটা আমরা জানি।
তারা নিষ্ঠুর হাসিনাকে পছন্দ করে, বাংলাদেশকে নয় মন্তব্য করে রিজভী বলেন, তারা (ভারত) নিষ্ঠুর হাসিনাকে পছন্দ করে, বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না। বাংলাদেশ টিকে থাকুক এটা তারা চায় না। আজকে তারা নানা ধরনের উস্কানি দিচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে, বাংলাদেশের ভেতরে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের উস্কানিতে পা দেয়নি। দুই-একটা গোষ্ঠি থাকতে পারে তারা চিহ্নিত হয়ে গেছে, তারা বাংলাদেশের মানুষের কাছে উন্মোচিত হয়ে গেছে, পার্শ্ববর্তী দেশ যে আমাদের এখানে উস্কানি দিতে পারে এটা গোটা জাতি ধরে ফেলেছে। আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর যে ঐক্য এটা ইস্পাতকঠিন ঐক্য এই ঐক্যকে কেউ ভাঙতে পারবে না।
আগরতলায় সহকারি হাইকমিশন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, সেখানে একটি উগ্রবাদী মানুষ জোরপূর্বক বাংলাদেশের সহকারি হাইকমিশন তার ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে আমাদের কর্মচারিকে আঘাত করেছে, আমাদের জাতীয় পতাকা যেটা পত পত করে উড়ছিলো সেটার স্ট্যান্ড ভেঙে আমাদের পতাকাকে তারা ছিঁড়েছে। কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনে গিয়ে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আজে-বাজে বলেছে, বোম্বের ডেপুটি হাইকমিশনে গিয়ে তারা বলেছে, আমরা তাদের নানাবিধ বাংলাদেশ বিরোধী প্রচার আমরা দেখছি। বাংলাদেশ সরকার আগরতলায় ভিসা বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা সঠিক সিদ্ধান্ত।
ভারতীয় পণ্য বর্জনের এই অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জাহিদুল কবির, জাহ্ঙ্গাীর আলম, তৌহিদুর রহমান আউয়ালও বক্তব্য রাখেন।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
উত্তরা ক্লাবের নতুন সভাপতি ফয়সল তাহের
গজারিয়ায় বিএনপি নেতার শীত বস্ত্র বিতরণ
টাঙ্গাইলে মহাসড়কে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার
ভোটার তালিকা হালনাগাদে ইসির প্রস্তুতি
গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত
দোয়ারাবাজারে স্ত্রীর যৌতুক মামলায় যুবক গ্রেপ্তার
সচিবালয়ে আগুন পরিকল্পিত: প্রকৌশলী ইকরামুল খান
সেন্ট মার্টিন থেকে ফেরার পথে আটকা পড়েছেন ৭১ পর্যটক
জকিগঞ্জে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু
বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের অগ্রগতির লক্ষে ইসিফোরজে’র প্রি-ওয়ার্কশপ
উচ্চ পর্যায়ের নতুন কমিটি গঠন, ৩ কর্মদিবসে প্রাথমিক প্রতিবেদন
ব্রাহ্মণপাড়ায় ছুরিকাঘাতে এক যুবককে হত্যা
কালীগঞ্জে পুকুর থেকে ২ শিশুর লাশ উদ্ধার
নিবন্ধন চূড়ান্ত: হজযাত্রী ৮৩ হাজার ২৪২ জন
হল্যান্ডের পেনাল্টি মিস,বিবর্ণ সিটি ফের হারাল পয়েন্ট
শরীফ থেকে শরীফার গল্প বাতিল করতে হবে: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
বিসিএ নির্বাচন সম্পন্ন: মিজান সভাপতি, মতিন সম্পাদক
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৩
বিএনপি মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী: শাহজাহান চৌধুরী
সচিবালয়ে আগুন: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করলো এবি পার্টি