হাসিনাকে ফেরত দিয়ে সম্পর্কোন্নয়নের বার্তা দিতে পারে ভারত : একান্ত সাক্ষাৎকারে মুসলিম লীগের মহাসচিব
০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ এএম
গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার পলায়নের পরে দেশে যে অভাবনীয় এক জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শ্বৈরাচার হাসিনা ও তার দোসররা নানামুখী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। ভিনদেশি ষড়যন্ত্রসহ কোনো চক্রান্তই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও এদেশের জনগণকে পরাভ‚ত করতে পারবে না। বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। বাংলাদেশ এখন আর পরাধিনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ নয়। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা রয়েছে। কেউ যদি বাংলাদেশকে অঙ্গরাজ্য মনে করে তা’ হবে অদূরদর্শী চিন্তার ফসল। জুলাই-আগস্টের সম্মিলিত ভাবে জাতির গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে এদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কেউ চোখ রাঙ্গিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতে বাংলাদেশের গণমানুষের চেতনাকে নস্যাৎ করতে পারবে না। বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের ইনকিলাবের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দোসররা আগ্রাসনবাদী ভারতকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। ইসকন, সংখ্যালঘু ও সা¤প্রদায়িক ইস্যু, ভারতীয় বিজেপি সরকারের বিভিন্ন উষ্কানিমূলক মন্তব্য, আগরতলায় বাংলাদেশ হাই কমিশনে হামলা, বাংলাদেশ শান্তি রক্ষী পাঠানোর মমতা ব্যানার্জির কাল্পনিক মন্তব্য সবই এ ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা মাত্র। স্থানীয় ভাবে তার সাথে যুক্ত হয়েছে পুলিশ বাহিনীসহ প্রশাসনের একটি অংশের অসহযোগিতা, গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও শ্রেণী-পেশার মানুষের পরিস্থিতির সাথে অসংগতিপূর্ণ দাবী দাওয়া নিয়ে রাজপথে নেমে আসা ইত্যাদি। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মত আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সম্মানিত মানুষও এই পরিস্থিতি সামাল দিতে গলদঘর্ম হচ্ছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধান উপদেষ্টার চেষ্টা ও আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকলেও তার সহকারী অনেকেরই সক্ষমতা ও ভ‚মিকা প্রশ্নবিদ্ধ। অনেক দেরীতে হলেও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ হিসাবে রাজনৈতিক দলগুলোকে একসাথে বৈঠকে ডেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু আমন্ত্রণ জানানোর ক্ষেত্রে তারা কোন মানদÐ ব্যবহার করেছেন তা পরিষ্কার নয়! অনেক রাজনৈতিক দলকে বৈঠকে ডাকা হয়নি। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে বিগত ১৬বছর আপোষহীন ধারাবাহিক লড়াই চালিয়ে যাওয়া অনেক দলকেই আমন্ত্রণ না জানিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে অভিযুক্ত। ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোন অংশকে বাহিরে রাখলেও জাতীয় ঐক্য অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। গণতান্ত্রিক পক্ষ বিবেচনার ক্ষেত্রে তারা মানদÐ হিসাবে ২০২৪ সালের নির্বাচনকে ব্যবহার করতে পারেন। ফ্যাসিস্ট হাসিনার তীব্র চাপ ও প্রলোভন উপেক্ষা করে ২০২৪ এর পাতানো নির্বাচন বয়কট করা রাজনৈতিক দলগুলো নিশ্চিত ভাবেই গণঅভ্যুত্থান চেতনার ধারক ও বাহক। তাছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় ও পেশাজীবী সহ সম্ভাব্য সকল অংশীজনকে এ ধরনের জাতীয় ঐক্যে সম্পৃক্ত করা আবশ্যক বলে বাংলাদেশ মুসলিম লীগ মনে করে।
কাজী আবুল খায়ের বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পরও ভারতের আধিপত্যবাদী মানসিকতার কোন পরিবর্তন না হওয়ায় এটা প্রমাণিত যে, আমাদের জন্য স্বৈরাচারী বাকশাল অথবা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের চাইতেও বড় সমস্যা ভারতীয় আগ্রাসন। মুসলিম লীগ শতাধিক বছর ধরে লাগাতার ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং আপোষহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আশা ও আনন্দের কথা ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে মুসলিম লীগের অনড় ও আপোষহীন অবস্থান, সময় পরিক্রমায় আজ গোটা জাতীর কাছেই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষা-কবচ হিসাবে মূল্যায়িত হচ্ছে। বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের বাস্তবতা মেনে নিয়ে ভারতকে আধিপত্য ও আগ্রাসন নীতি থেকে সরে এসে জন-আকাঙ্খা মূল্যায়ন পূর্বক মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। প্রতিবেশী দুই দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক অবজ্ঞা বা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। সুসম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য উভয় দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে আমূল পরিবর্তন এনে ঢেলে সাজাতে হবে। গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকারের নিকট হস্তান্তরের মাধ্যমে ভারত সরকার সম্পর্কোন্নয়নের বার্তা দিতে পারে। ভারতীয় ইতিবাচক বার্তার জবাব বাংলাদেশের জনগণও অবশ্যই ইতিবাচক হিসাবেই দেবে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কোন মূল্যে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে কার্যকরী ভ‚মিকা রাখতে হবে। জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা অথবা বিদ্যমান কাঠামোতে ২০২৪ গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণকারী দলসমূহ থেকে মনোনীত প্রতিনিধি নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের আকার বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত জাতিকে অনুপ্রাণিত করে ঐক্যবদ্ধ করবে। অপরদিকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় অভিজ্ঞ ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা সম্পন্ন রাজনীতিবিদদের দেশ পরিচালনায় অংশগ্রহণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে গতিশীল ও স্থবির প্রশাসনে ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য এনে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার পূর্বক একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের অভীষ্ট লক্ষ্যে দ্রæততম সময়ে পৌছাতে পারবে বলে আমরা মনে করি। মুসলিম মহাসচিব বলেন, সকল অনিবন্ধিত দল ও অরাজনৈতিক সংগঠনের সভা-সমাবেশ আয়োজনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আগাম অনুমতি গ্রহণ এবং একটি বিশেষ কমিশন গঠন করে তাদের সকল দাবী-দাওয়া মূল্যায়নের জন্য লিখিত আবেদন করার নির্দেশনা জারি স্থানীয় পর্যায়ে ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে পারে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
গফরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু নিহত
দোয়ারাবাজারে স্ত্রীর যৌতুক মামলায় যুবক গ্রেপ্তার
সচিবালয়ে আগুন পরিকল্পিত: প্রকৌশলী ইকরামুল খান
সেন্ট মার্টিন থেকে ফেরার পথে আটকা পড়েছেন ৭১ পর্যটক
জকিগঞ্জে মোটরসাইকেল দূর্ঘটনায় এক যুবকের মৃত্যু
বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের অগ্রগতির লক্ষে ইসিফোরজে’র প্রি-ওয়ার্কশপ
উচ্চ পর্যায়ের নতুন কমিটি গঠন, ৩ কর্মদিবসে প্রাথমিক প্রতিবেদন
ব্রাহ্মণপাড়ায় ছুরিকাঘাতে এক যুবককে হত্যা
কালীগঞ্জে পুকুর থেকে ২ শিশুর লাশ উদ্ধার
নিবন্ধন চূড়ান্ত: হজযাত্রী ৮৩ হাজার ২৪২ জন
হল্যান্ডের পেনাল্টি মিস,বিবর্ণ সিটি ফের হারাল পয়েন্ট
শরীফ থেকে শরীফার গল্প বাতিল করতে হবে: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
বিসিএ নির্বাচন সম্পন্ন: মিজান সভাপতি, মতিন সম্পাদক
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৩
বিএনপি মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী: শাহজাহান চৌধুরী
সচিবালয়ে আগুন: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করলো এবি পার্টি
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ