জমজমাট কক্সবাজার পর্যটনকেন্দ্র : ভ্রমণপ্রেমিরা ভারতবিমুখ

কক্সবাজার ব্যুরো

১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৬ এএম | আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৬ এএম

বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। অন্যদিকে ভারতের উস্কানিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র অব্যহত রয়েছে। এতে করে বাংলাদেশের মানুষ দারুণভাবে ক্ষুব্ধ ভারতের ওপর। তাই চলতি পর্যটন মৌসুমে লাখো বাংলাদেশি ভারত ভ্রমণ করার কথা থাকলেও তারা ভারত না গিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণে আসছেন। ফলে জমজমাট হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। ভ্রমণপ্রেমিদের ভারতবিমুখিতা কক্সবাজার পর্যটন শিল্পসহ সকল দেশীয় পর্যটন শিল্পের জন্য একটি ভালো সুযোগ।
গতকাল কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের বেশ কিছু এলাকা ঘুরে জানা গেছে, সাপ্তাহিক দু’দিন ছুটির সাথে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বন্ধ থাকায় লাখ লাখ পর্যটক আসছেন কক্সবাজারে। মধ্য ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাঝারি হোটেল থেকে তারকা হোটেল পর্যন্ত কোনো হোটেলে সিট খালি নেই, বুকিং নিতে পারছেন না তারা। এ ধারা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
হোটেল মালিকরা জানান, ব্যাপক পর্যটক আগমনে জমজমাট হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের ব্যবসা-বাণিজ্য। হোটেল-মোটেল, রেস্টুরেন্ট, শুঁটকির দোকান, আচারের দোকানসহ সৈকতে ছাতা চেয়ার ব্যবসায় এখন জমজমাট অবস্থা। এই সুযোগে ভালো আয় হচ্ছে অটোরিকশা ও টমটম চালকদের। জমজমাট পর্যটক আগমনের সুযোগে হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং বাইক চালকেরা নৈরাজ্য সৃষ্টি করে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করে পর্যটকদের পকেট কাটতে না পারে সে জন্য সতর্ক রয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। অভিযোগ রয়েছে, অতীতে ফ্যাসিবাদের সময় হোটেল-মোটেল ও রেস্টুরেন্টে অতিরিক্ত খাবারের মূল্য আদায় করায় কক্সবাজার বিমুখ হয়ে পড়েছিলেন পর্যটকরা। তবে এসব বিষয় কক্সবাজার থেকে পর্যটকদের মুখ ফেরাতে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলেই প্রমাণিত হয়েছে। এখন কোনো ব্যবাসয়ী এ ধরনের নৈরাজ্যের মাধ্যমে পর্যটকদের কক্সবাজারবিমুখ করতে চান না।
পর্যটন ব্যবসায়ী টুয়াক নেতা আনোয়ার কামাল বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রায় বন্ধ থাকায় পর্যটকরা সবাই কক্সবাজারে ছুটি কাটাতে আসছেন। এ প্রসঙ্গে হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস সমিতি নেতা আলহাজ্ব আবুল কাশেম শিকদার বলেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় ভারতের নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে দেশের ভ্রমণ পিপাসুরা ভারত থেকে মুখ ফিরিয়ে তারা কক্সবাজার ভ্রমণে আসছেন। এটি কক্সবাজারের পর্যটনের জন্য সুখবর বলা যায়।
গত সপ্তাহে কক্সবাজারের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেন পর্যটন উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। তিনি কক্সবাজারের পর্যটন খাতের উন্নয়নে সরকারি এবং বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. রহমতউল্লাহ বলেন, স্থানীয় অধিবাসীসহ কক্সবাজার ভ্রমণকারি লাখ লাখ পর্যটক সেবায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তথা কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলা পুলিশ শুধু নিরাপত্তাই নয়, কিছু টেকনোলজি বেইজড সেবা চালুও করেছে। এরমধ্যে অন্যতম অনলাইন বাসটার্মিনাল, কক্সক্যাবসহ অনলাইন হোটেল বোর্ডার ইনফরমেশন সেন্টারও আছে। কক্সবাজার জেলার পর্যটনের স্ট্যান্ডার্ডকে আরো উঁচুতে নিয়ে যেতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ।

বিভাগ : জাতীয়