বিমসটেক সম্মেলনে ড. ইউনূসের তিনটি শূন্যের বিশ্ব গড়ার আহ্বান

ইনকিলাব ডেস্ক

০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৪ এএম | আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১:২৬ এএম

বাংলাদেশ বিমসটেকের (বঙ্গোপসাগরীয় বহুখাতীয় প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থা) কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত উন্মোচনের আহ্বান জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ শূন্য দারিদ্র, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নির্গমন—এই তিনটি লক্ষ্য সামনে রেখে বিমসটেক অঞ্চলের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চায়।

আজ শুক্রবার (৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন। ড. ইউনূস বলেন, বিমসটেক বিশ্বের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ মানুষের আবাসভূমি। সঠিক নীতি ও উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এই বিপুল জনসংখ্যাকে ‘সমস্যা’ নয়, বরং এক মূল্যবান সম্পদে রূপান্তর করা সম্ভব। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব ভবিষ্যৎ গড়া সম্ভব বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ বাণিজ্য বিমসটেক অঞ্চলের টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৮ সালে স্বাক্ষরিত বিমসটেক গ্রিড সংযোগ চুক্তি এ ক্ষেত্রে বড় মাইলফলক হতে পারে। একইসঙ্গে, ২০০৪ সালের বিমসটেক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দেন তিনি, যা এ অঞ্চলে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

এছাড়া, রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত না হলে পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ব্যাহত হতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি। বিমসটেক প্রায় ২৮ বছর ধরে কাজ করলেও এর কার্যকারিতা এখনও অনেক ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত বলে মন্তব্য করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, এই সংস্থার কার্যক্রম আরও ফলপ্রসূ করতে নতুন কৌশল গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিনি আহ্বান জানান, তরুণদের ক্ষমতায়ন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রসার, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সদ্ব্যবহার ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। একইসঙ্গে, সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি। বিমসটেকের মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিভাগ : জাতীয়