এ বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খাওয়ারও আহ্বান মৎস্য উপদেষ্টার
০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম | আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৬ পিএম

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ, এটা কোনো সংস্কৃতির অংশ নয়। যারা ঢাকায় থাকেন তারা এটা চালু করেছেন। এটা আরোপিত সংস্কৃতি। তিনি এ বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানান।
ফরিদা আখতার বলেন, আপনারা চৈত্র সংক্রান্তি পালন করবেন এবং পহেলা বৈশাখে বাতাসা খান, দই, চিড়া, মিষ্টি, ছাতুর শরবত খান, ভাত, শাক, সবজি খান, ইলিশ বাদে অন্য মাছ খান।
সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০২৫’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, মানুষ পহেলা বৈশাখে ইলিশ খায় কেমন করে। এসময় তো ইলিশ পাওয়ার কথা না। পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। এটা আমি পরিষ্কার করতে চাই যেহেতু ঢাকায় এটা চালু হয়েছিল। পহেলা বৈশাখে যারা ইলিশ খাবেন তারা জাটকাই খাবেন। একইসঙ্গে তারা আইন লঙ্ঘন করবেন। কাজেই বাজারে পাওয়াটাও আইনের লঙ্ঘন হয়। এসময়টাতে জোরালোভাবে জাটকা সংরক্ষণের বিষয়টাতে সচেতন করার জন্যই আমরা বলেছি।
ফরিদা আখতার বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে আহ্বান জানাতে চাই যে পহেলা বৈশাখে বা এপ্রিল মাসে পান্তা-ইলিশ, কোনোভাবেই এটা আমাদের সংস্কৃতি অংশ নয়। অন্য সময় খেলেও আমাদের কোনো বিষয় না। কিন্তু ১৪ এপ্রিল পান্তার সঙ্গে ইলিশ খাওয়া হয়, সেটা যেন না খাওয়া হয়, সেই অনুরোধটা করব। কারণ এসময় ইলিশ নয়, জাটকা খাওয়া হয়। সে হিসেবে জাটকা সংরক্ষণ করে ইলিশে রূপান্তর করার আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এ বছর পান্তা-ইলিশ না খাওয়ারও আহ্বান জানাই। কারণ আগে আমাদের জাটকা সংরক্ষণ করতে হবে।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ, এটা কোনো সংস্কৃতির অংশ নয়। যারা ঢাকায় থাকেন তারা এটা চালু করেছেন। এটা আরোপিত সংস্কৃতি। বরং পহেলা বৈশাখের আগের দিন বাঙালি সংস্কৃতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা হলো চৈত্র সংক্রান্তি, সেখানে কোনো আমিষ খাওয়া হয় না। সেদিন ১৪ রকমের শাক খাওয়া হয়, বিশেষ করে তিতো শাক যেমন গিমা শাক খাওয়া হয়। আপনারা চৈত্র সংক্রান্তি পালন করবেন এবং পহেলা বৈশাখে বাতাসা খান, দই, চিড়া, মিষ্টি, ছাতুর শরবত খান, ভাত, শাক, সবজি খান, ইলিশ বাদে অন্য মাছ খান।
উপদেষ্টা বলেন, কোল্ডস্টোরেজ থেকে মজুত করা ইলিশ বাজারে আসার একটা সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা চাই না সেটা বাজারে আসুক। কারণ ইলিশ ও জাটকা একটা কনফ্লিট তৈরি করবে। পহেলা বৈশাখে পান্তার সঙ্গে ইলিশ না খেয়ে ভর্তা, পোড়া মরিচ খেতে পারেন। জেলেরা যদি তাদের জীবন-জীবিকা ঝুঁকিতে রেখে মাছ ধরা বন্ধ রাখতে পারে। তাহলে আমরা কেন একদিন ইলিশ খাওয়া বন্ধ করতে পারব না। সেজন্য আমি অনুরোধ করব, আমরা এই সময়টাতে ইলিশ বা জাটকা না খাই।
ন্যায্য মূল্যে সাধারণ মানুষকে ইলিশ খাওয়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেবেন কি না জানতে চাইলে ফরিদা আখতার বলেন, আমরা সবার সহযোগিতা চাই যাতে জাটকা সংরক্ষণ করতে পারি। যাতে আমরা ইলিশটা পাই। জাটকা সংরক্ষণ করতে পারলেই ৫০ শতাংশ ইলিশ বাড়বে। ইলিশ বাড়লেই সরবরাহ বাড়বে। সেটা করতে পারলে আমরা বাজারে ইলিশ পাব। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে বাজারে সিন্ডিকেট যারা করে তারা যেন এটা দখল করতে না পারে, আমাদের সেই চেষ্টাই থাকবে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমেরও সহযোগিতা লাগবে। জুনের পরে আমরা ইলিশ যখন নির্দিষ্ট সাইজে হবে তখন বিশেষ অভিযান চালাব।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য ইলিশ সহজলভ্য করার কথা যেটা বললেন, এর আগে বিআরডিসির মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করেছিলাম সমুদ্র থেকে ইলিশ এনে দেওয়া যায় কি না। সেই চেষ্টা চলছে, এখনো আমরা পরিকল্পনা করিনি। তবে অবশ্যই আমরা ভাবতে পারি।
ভারতে ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ভারতের বিষয়টা আগে দুর্গাপূজা আসুক তখন দেখা যাবে। আমাদের ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটা এখনো আছে। আমরা প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য কিছু ছাড় দিয়েছি। সেখানে নির্দিষ্ট কিছু দেশ আছে যেখানে আমাদের বাংলাদেশিরা রয়েছে, তাদের ইলিশ খাওয়ানোর জন্য এটা করা হয়েছে। আমরা যেহেতু বলি বাংলাদেশিরা ইলিশ আগে খাবে। তাই প্রবাসী বাংলাদেশিরাও ইলিশ খাবে সেই জায়গায় আমরা যেতে চাই।
বাংলাদেশে যখন ইলিশ ধরা বন্ধ থাকে তখন ভারতের জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে ইলিশ ধরে নিয়ে যায়– এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে কোনো কিছু হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার বলেন, এবার সেটার সুযোগ নেই। আমরা বৈজ্ঞানিকভাবে এবার সময়টা নির্ধারণ করেছি। ভারতও বৈজ্ঞানিকভাবে কিছু একটা করে। আগে তারিখের সঙ্গে কোনো মিল ছিল না, ভারতের ছিল ৬১ দিন (ইলিশ ধরা বন্ধের সময়সীমা), আমাদের ৬৫ দিন। এখন আমাদের প্রয়োজনে যেভাবে তারিখ নির্ধারণ করেছি সেখানে ভারতের জেলেদের সুযোগটা আর থাকছে না। শুধু ভারত নয়, প্রতিবেশী কোনো দেশেরই সেই সুযোগ থাকবে না। প্রায় একই সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, এতে ভারত কোনো এক্সট্রা দিন পাবে বলে আমার মনে হচ্ছে না।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

বরগুনায় অবৈধ পৌর টোল বন্ধের দাবিতে মালিক-শ্রমিকদের মানববন্ধন

রিশাদের মাথায় ফাজাল মেহমুদ ক্যাপ

জুলাইয়ে জাতীয় নির্বাচনের অ্যাকশনপ্ল্যান ঘোষণা করবে ইসি

৬দফা দাবিতে বরগুনায় কারিগরি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

দৌলতপুর উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় অসাধুউপায় অবলম্বনে করায় এক পরীক্ষার্থী বহিষ্কার

মাদকের সঙ্গে কোনো আপোষ নেই আটঘরিয়ায় পুলিশের ওপেন হাউজ ডে-রেজানুর

যে যাই বলুক, জুনের পরে নির্বাচন যাবে না: আইন উপদেষ্টা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙালিয়ানা সাজ

২০২৮ অলিম্পিকের ক্রিকেট ভেন্যু চূড়ান্ত

ওয়ানখেড়েতে রোহিতের নামে স্ট্যান্ড

গুগলের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিল জাপান

নেতা-কর্মীদের বিপদে ফেলে ওবায়দুল কাদেরের আয়েশি জীবন

ঈশ্বরগঞ্জে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা নিরসনের দাবীতে মানববন্ধন

জুনের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের দাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের

অগ্নিকান্ডের ঘটনা উৎঘাটনে পুলিশ ও সিআইডি কাজ শুরু করেছে- জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জানাননি বলে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় অসন্তুষ্ট বিএনপি

প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের ডেডলাইন দেননি : বিএনপি

সদরপুরে পুকুরে ডুবে ভাই বোনের সলিল সমাধি

যে কারনে সড়কে ব্যারিকেট দিলো সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেই গাড়িচালক আবদুল মালেকের ৫ ও স্ত্রীর ৩ বছরের কারাদণ্ড