পরমানু শক্তি কমিশনে অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি
২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৯ পিএম | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৯ পিএম

দেশের পরমাণু বিজ্ঞান ও গবেষণার উন্নয়নে কমিশনের স্বায়ত্বশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অযাচিত হস্তক্ষেপ বন্ধ এবং একটি পেশাদার ও সম্মানজনক কর্মপরিবেশ সুনিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে আগারগাঁওয়ের পরমানু শক্তি কমিশনের অডিটরিয়ামে আয়োজত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী জানানো হয়। দাবী পুরণ না হলে কর্মবিরতি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি বিজ্ঞানী সংঘ’র সভাপতি ড. এএস এম সাইফুল্লাহ। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারন সম্পাাদক ড. মোঃ গোলাম রসুল, বাপশক অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আরেফিন সাধারন সম্পাদক এ টি এম গোলাম কিবরিয়া, বাপশক কর্মচারী কল্যান সমিতির সভাপতি ইসমাইল হোসেন মামু মহাসচিব মো: কামরুজ্জামান উজ্জল প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (ওঅঊঅ) এর রীতিনীতি অনুসরণক্রমে বাংলাদেশে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, উন্নয়ন, প্রসার, তদ্সংশ্লিষ্ট গবেষণা কর্ম, সেবা, শিক্ষা বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংক্রান্ত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (বাপশক) ১৯৭৩ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার নং: ১৫ তথা ২০১৭ সালের ২৩ নং আইন বলে প্রতিষ্ঠিত একটি বিশেষায়িত কমিশন। কমিশনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতি বছর প্রায় ৮ লক্ষাধিক ব্যক্তি ও শতাধিক প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরণের সেবা গ্রহণ করে থাকে।
মালিক সংস্থা হিসেবে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্তু সকল চুক্তি (Construction, জ্বালানি সংগ্রহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) এবং লাইসেন্সসমূহ কমিশনের হওয়া সত্ত্বেও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কমিশনকে বাদ দিয়ে বিদ্যুৎ ক্রয়ের চুক্তি পিডিবি ও এনপিসিবিএল এর মধ্যে সম্পাদনের জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। মালিক সংস্থা হওয়া সত্বেও কমিশনকে বাদ দিয়ে নবগঠিত একটি কোম্পানির সাথে এ ধরণের চুক্তি করার প্রচেষ্টা কমিশনের অধিকার খর্ব করা এবং কমিশনকে দূর্বল করার অপচেষ্টারই অংশ।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার রীতিনীতি মেনে পরমাণু প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিশেষায়িত গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এক্ষেত্রে বিগত সরকারের চাপিয়ে দেয়া iBAS++ সিস্টেমে সংবেদনশীল কাজ করা সম্ভব কিনা সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তা ছাড়াও পারমাণবিক বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট গবেষণা এবং এ সংক্রান্ত প্রকল্প ও তার পরিচালন ব্যয়সহ সকল তথ্য সংবেদনশীল হওয়ায় iBAS++ সিস্টেমের মতো একটি সার্বজনীন সিস্টেমে উক্ত তথ্য আপলোড করা সমীচীন নয় বলে কমিশনের বিজ্ঞানীরা মনে করে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, জানতে পেরেছি একটি ভারতীয় একটি সফটওয়ার। যেটির সার্ভার চেন্নাই থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সুতরায় এই সিস্টেমে অন্তর্ভূক্ত করতে বাধ্য করার প্রচেষ্টা কমিশনের মতো একটি বিশেষায়িত সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠানের বিশেষত্ব নষ্ট করার অপচেষ্টা বলে মনে হয়।
এই সিস্টেমে প্রবেশ না করায় কমিশনের অনুকূলে অর্থ ছাড় বন্ধ করা হয়েছে। ফলে কমিশনের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, পেনশন প্রাপ্তিসহ গবেষণা ও সেবা কার্যক্রম পরিচালনায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। কমিশনে কর্মরত প্রায় ৬০০ বিজ্ঞানীসহ ২৫০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মার্চ’২৫-এর বেতন-ভাতাদি এখনও পাননি। এই প্রতিষ্ঠানের স্বায়ত্বশাসন, ন্যায্য অধিকার ও সম্মান রক্ষা না হলে, দেশের পরমাণু বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কিন্তুবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন চেয়ারম্যান ও ৪ জন সদস্যের সমন্বয়ে কমিশন গঠিত হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে শীর্ষ পদগুলো শূন্য থাকায় কমিশনের সার্বিক কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। বর্তমানে চেয়ারম্যান পদে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং মাত্র একজন সদস্য চলতি দায়িত্বে নিয়োজিত। পূর্ণ কমিশন না থাকায় এবং মন্ত্রণালয়ের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং কর্তৃত্ববাদী আচরণের কারণে কমিশনের বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ বাপশক আইন ২০১৭ এবং বাপশক চাকুরীবিধিমালা ১৯৮৫ তে প্রদত্ত সুবিধাদি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
২০১১ সালে তৎকালীন সরকার কমিশনের জিও প্রদানের ক্ষমতা রহিত করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যস্ত করে। তখন থেকে কমিশনের বিজ্ঞানীগণ উচ্চ শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে বঞ্চিত হয়ে আসছে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর ফ্যাসিস্ট সরকার বিতাড়িত হলেও এখনও মন্ত্রণালয়ে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিস্টের দোসর আমলারা অন্যায়ভাবে পূর্ণ স্কলারশিপ থাকা সত্ত্বেও বিজ্ঞানীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা/প্রশিক্ষনের জিও প্রদান না করে এবং অপ্রয়োজনীয় আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তৈরী করে কমিশনের নবীন বিজ্ঞানীবৃন্দকে বঞ্চিত করছে। কোন কোন ক্ষেত্রে যোগ্য বিজ্ঞানীদের বাদ দিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিজেরাই শুধুমাত্র বিদেশ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বিদেশের বিভিন্ন বিশেয়ায়িত প্রশিক্ষনে অংশগ্রহণ করছেন। গত কয়েকমাসে মন্ত্রণালয়ের প্রায় ১২ জন কর্মকর্তা পরমাণু প্রযুক্তি বিষয়ক বৈদেশিক প্রশিক্ষণে মনোনয়ন নিয়েছেন, যা হতাশাজনক এবং অগ্রহণযোগ্য। বিজ্ঞানীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষন গ্রহণ উৎসাহিত না করে বাধাগ্রস্থ করার বিষয়টি দেশকে পরমাণু গবেষণায় পিছিয়ে রাখার কোন এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মনে হয়।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

পীরগঞ্জে জামায়াতের গণসংযোগ

‘নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা অবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করতে হবে’

খুলনায় বিয়ের প্রলোভনে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ, সহযোগী আটক

নুসরাত-অপু-নিপুণ সহ ঢালিউডের ১৭ তারকার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের

পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ লাভে প্রলোভনে পড়ে প্রতারিত হবেন না: পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স

আম্বানী পরিবার ২৭ তলা ‘অ্যান্টিলিয়া’র টপ ফ্লোরে কেন থাকেন?

ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ, মাছ ধরার প্রস্তুতি জেলেদের

বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে বিক্ষোভ

ইবির দা‘ওয়াহ বিভাগে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের বিদায়ী সংবর্ধনা

মুরাদনগরের রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা নিরসনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই খুন

বায়ুমন্ডলের সুরক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে খুলনায় মন্ট্রিল প্রোটোকল বিষয়ক কর্মশালা

বিপুল অর্থ লোপাট, রেহানার স্বামী ও দেবরসহ ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছাগলনাইয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ এসএসসি পরীক্ষার্থী আহত

শিবগঞ্জের মধুমতির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফের প্রতারণা, জোর করে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদে মাছ ধরতে গিয়ে পানিতে পড়ে নিখোঁজ যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ফরিদপুরে নিখোঁজের তিনদিন পর মাদরাসা শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার

ভারতকে জবাব দিতে ইমরান খানের মুক্তি চায় পিটিআই

ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও শাটডাউন কর্মসূচি পালিত

আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলা ‘সব কিছু করেছে ছেলের বউ’, আদালতে সাংবাদিক দেখে হিটু শেখ