তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া সরকারের বাঁচার পথ নেই: রিজভী

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

০২ মে ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম | আপডেট: ০২ মে ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম

অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া সরকারের বাঁচার আর কোন পথ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকারের যদি সুবুদ্ধি হয় এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে তাহলে তাদের জন্য ভালো। আর যদি তা না করে তাহলে যুগে যুগে স্বৈরাচারী সরকারের যে অবস্থা হয়েছে হিটলার-মুসোলিনির যে অবস্থা হয়েছে সেই অবস্থা হবে। এছাড়া এ সরকারের অন্য কোনো ওয়ে আউট থাকবে না। সরকার এখনও পারে একটা উদ্যোগ নিয়ে জনগণের যে আকাক্সক্ষা একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা। না হলে বাঁচার পথ নেই। মঙ্গলবার নয়পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ভেতরে ভেতরে সরকার আত্মশক্তি হারিয়ে ফেলেছে। এখন তাদের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে। এই সরকার বিভিন্নভাবে ডিজিটাল আইন দিয়ে ভয়ের রাজ্য তৈরি করেছে। কিন্তু সেই আইনের মাধ্যমে তারা নিজেরাই পরাজিত হচ্ছে এটা তারা টের পাচ্ছে না। হয়তো টের পাচ্ছে কিন্তু বলছে না। ভিতরে ভিতরে শেখ হাসিনা পরাজিত হয়ে গেছে। আমরাই বিজয়ী।

রিজভী বলেন, যে সরকারের পক্ষে জনসমর্থন থাকে না তারা নানা কায়দা কানুন করে জুলুম নির্যাতন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিজেদের লোক বসিয়ে কিছুদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে। কিন্তু দীর্ঘদিন থাকতে পারে না। এই সরকার দেশ রক্ষার ক্ষেত্রে দেশের জনগণের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যর্থ। এ সরকার বিভিন্ন সময়ে জনগণকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে রাতের বেলা ব্যালট বাক্স পূর্ণ করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নির্বাচন করেছে এইটা এবার তারা করতে পারবেনা। কারণ নানা স্তরের মানুষ এ সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। কর্তৃত্ববাদী সরকার কখনো বেশি সময় ক্ষমতায় থাকতে পারে না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, কর্মসূচিগুলো পালন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বিএনপির যে ইউনিয়ন পর্যায়ে উপজেলা পর্যায়ে জেলা পর্যায়ে যে কর্মসূচিগুলো হয়েছে সেগুলোতে ব্যাপক হারে জনসমর্থন পেয়েছে। এ আন্দোলনগুলো সফল হয়েছে। যদি ব্যর্থ হত তাহলে সরকার এতো ধরপাকড় করত না। বিএনপির জনসমর্থক দিন দিন বাড়ছে বলেই সরকার এত ব্যাপকহারে গ্রেফতার করেছে এবং এখনো করছে। এত ধরপাকড় করেও যখন বিরোধীদলকে থামাতে পারেনা তখন বুঝতে হবে এ সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে।

তিনি বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে কত আন্দোলন বিপ্লব হয়েছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি এই আন্দোলনে আমাদের অনেক সাথীকেই হারিয়েছি তারপরও কেউ দমে যায়নি। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত কেউ দমে যাবে না।

‘নির্বাচন নিয়ে সংবিধানের বাহিরে যাওয়ার সুযোগ নেই’ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এ প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) তাদেরকে প্রশ্ন করতে পারতেন সুযোগ নেই কেনো? এটা কি আটলান্টিক মহাসাগর যে নৌকা ছাড়া পার হওয়া যাবে না। সংবিধানের মধ্যেই সংবিধান সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। ওরা গায়ের জোরে কথা বলছে। এটা কোনো রাজনৈতিক পরিভাষা হতে পারে না। তাহলে ১৯৯৫-৯৬ সালে হল কেমন করে? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য তারা ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করেছে পুলিশ নেতাকর্মী ছাত্র সবাইকে হত্যা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করলেন। ক্ষমতায় এসেই তা বাতিল করলেন। তাহলে আপনারা জাতির সাথে প্রতারণা করেছেন। যারা জাতির সাথে প্রতারণা করে তারা কোনোদিনই জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে আমাদের উপর হামলা করে আমরা খালি হাতেই দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি। তারা মনে করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়েই তারা ক্ষমতায় থাকবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমরা দেখেছি মানবাধিকারের জন্য জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য গণতন্ত্রের জন্য খালি হাতে লড়াই করেছে এবং তারাই জয়ী হয়েছে। তবে এটা একদিনে সম্ভব না। এ সমস্ত দানব সরকারের বিরুদ্ধে এ লড়াই আরো দীর্ঘদিন হতে পারে।

এসময় বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা তারিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


বিভাগ : রাজনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

সাধারন সম্পাদককে হারিয়ে সিলেট দক্ষিণ সুরমায় বিজয়ী আ'লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বদরুল

সাধারন সম্পাদককে হারিয়ে সিলেট দক্ষিণ সুরমায় বিজয়ী আ'লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক বদরুল

ভারতে হিন্দু জনতার সংখ্যা কমেছে ৮ শতাংশ! বাড়ছে মুসলমানদের সংখ্যা।

ভারতে হিন্দু জনতার সংখ্যা কমেছে ৮ শতাংশ! বাড়ছে মুসলমানদের সংখ্যা।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: নড়িয়ায় নির্বাচিত হলেন যারা

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: নড়িয়ায় নির্বাচিত হলেন যারা

সিলেট গোলাপগঞ্জে জেলা আ'লীগ নেতা এলিমকে হারাতে পারলেন না ব্রাজিল যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক উজ্জ্বল

সিলেট গোলাপগঞ্জে জেলা আ'লীগ নেতা এলিমকে হারাতে পারলেন না ব্রাজিল যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক উজ্জ্বল

অপার সম্ভাবনাময় দেশের বৃহত্তম বীজ উৎপাদন খামার

অপার সম্ভাবনাময় দেশের বৃহত্তম বীজ উৎপাদন খামার

আ’লীগে-আ’লীগে টক্কর, সিলেট সদর উপজেলায় জয় পেলেন সুজাত

আ’লীগে-আ’লীগে টক্কর, সিলেট সদর উপজেলায় জয় পেলেন সুজাত

রাশিয়ায় এক সেনাসহ দুই মার্কিন নাগরিক গ্রেপ্তার

রাশিয়ায় এক সেনাসহ দুই মার্কিন নাগরিক গ্রেপ্তার

ধানকাটা-ঝড়বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম: ওবায়দুল কাদের

ধানকাটা-ঝড়বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম: ওবায়দুল কাদের

স্বামীর হাত-পা বেঁধে যৌনাঙ্গে ছ্যাঁকা-মারধর, স্ত্রী গ্রেপ্তার

স্বামীর হাত-পা বেঁধে যৌনাঙ্গে ছ্যাঁকা-মারধর, স্ত্রী গ্রেপ্তার

বিজিবির অভিযানে এপ্রিলে ১৩৪ কোটি ৩৬ লক্ষাধিক টাকার চোরাচালান জব্দ

বিজিবির অভিযানে এপ্রিলে ১৩৪ কোটি ৩৬ লক্ষাধিক টাকার চোরাচালান জব্দ

বেইলি রোড অগ্নিকান্ড: কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক গ্রেপ্তার

বেইলি রোড অগ্নিকান্ড: কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক গ্রেপ্তার

বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেও চ্যাম্পিয়নস লীগ অধরাই রয়ে গেল পিএসজির

বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করেও চ্যাম্পিয়নস লীগ অধরাই রয়ে গেল পিএসজির

বগুড়ায় তিন উপজেলায় ভোটার বিহিন উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত

বগুড়ায় তিন উপজেলায় ভোটার বিহিন উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত

প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জ্ঞান অর্জন করতে হবে: রাজউকের চেয়ারম্যান

প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জ্ঞান অর্জন করতে হবে: রাজউকের চেয়ারম্যান

ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়ার আহ্বান

ইসরাইলকে যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়ার আহ্বান

ইসলাম বিরোধী শিক্ষা কারিকুলাম মেনে নেয়া হবে না পীর সাহেব চরমোনাই

ইসলাম বিরোধী শিক্ষা কারিকুলাম মেনে নেয়া হবে না পীর সাহেব চরমোনাই

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আরও একটি দেশের স্বীকৃতি

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আরও একটি দেশের স্বীকৃতি

তেঁতুলিয়া সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ

তেঁতুলিয়া সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে বিএসএফ

যে পাঁচ কারণে হারতে পারেন মোদি’

যে পাঁচ কারণে হারতে পারেন মোদি’

ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ধ্বংস, ১৫৪০ সেনা নিহত

ইউক্রেনের ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা ধ্বংস, ১৫৪০ সেনা নিহত