ঢাকা   রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

এখন গোটা দেশে একটা নৈরাজ্য চলছে : মির্জা ফখরুল

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১২ মে ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম | আপডেট: ১২ মে ২০২৪, ০৪:৪১ পিএম

বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, গোটা দেশে লুটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং সেটা দিয়েই তারা এই সরকারকে টিকিয়ে রাখছে। এর সাথে তারা নিজেরাও জড়িত এবং তাদের সুবিধা ভোগী লোকজনরাও জড়িত।

মির্জা ফখরুল বলেন, মূল সমস্যা হচ্ছে এই সরকারের কোনো জবাবদিহিতা নেই জনগণের কাছে। তাদের মধ্যে এমন একটা দাম্ভিকতা সৃষ্টি হয়েছে যে আমাদের তো জনগণের প্রয়োজন নেই। সুতরাং এখানে অর্থনীতি ধ্বংস হলো কি হলো না, জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপদ থাকলো কি থাকলো না, ক্যান্সারে মারা যাচ্ছে বা হাসপাতালের ব্যবস্থা আছে কিনা এটা নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তাদের ক্ষমতা ঠিক থাকলেই ক্ষমতা নিরঙ্কুশ থাকতে পারলেই তাদের কাজ হাসিল হয়ে যাচ্ছে।

আজ রোববার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দীর্ঘ ছয় মাস পর সংবাদ সম্মেলনে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে কি এটা একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়েই গেছে। ব্যার্থ রাষ্ট্র হওয়ার জন্য বলছি না, আমরা আগে থেকেই বলে আসছি ব্যর্থ রাষ্ট্র। এই সরকার পরিকল্পিতভাবে এই রাষ্ট্রকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিণত করেছে। আমরা যে সিস্টেমগুলো অর্জন করেছিলাম, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের যে অর্জন হয়েছিল সেই অর্জন শুরু হয়েছিল আপনারা পর্যালোচনা করে দেখতে পারেন ভিত্তিটা তৈরি করেছিলাম আমরাই। বিএনপি তার শাসন আমল থেকে এই ভিত্তি তৈরি করেছিল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরা যেটা করেছে দুর্নীতি এবং অনিয়ম তার উপর ভিত্তি করে এই রাষ্ট্রকে কি করে পুরোপুরি পরনির্ভরশীল করা যায় এবং তাদের বিশেষ গোত্রকে অন্যায়ভাবে আর্থিক দিক দিয়ে শক্তিশালী করা যায় সেই লক্ষ্যে তারা কাজ করছে। একজন মন্ত্রী উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, বিদেশে তার বাড়ি রয়েছে। প্রত্যেকটা মন্ত্রী-এমপির বাড়ি-সম্পদ দেশের বাইরে রয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, কখন একটা রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়। যখন তার অর্থনৈতিক মেরুদন্ডটাকে ভেঙে ফেলা হয়। রাজনৈতিক স্ট্রাকচার ভেঙে ফেলা হয়। সামাজিক কাঠামো ভেঙে যায়, যখন কোথাও জবাবদিহিতা থাকে না তখন একটি রাষ্ট্রব্যক্ত স্টেটে পরিণত হয়। সর্বক্ষেত্রে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়। এখন গোটা দেশে একটা নৈরাজ্য।

ঘুষের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনি কোনো অফিসে গেলে ঘুষ ছাড়া কোনো কথা নেই। চাকরি কেউ পাবে না যদি আপনি ঘুষ না দেন। এবং তাদের দলীয় লোকজন হতে হবে। বিচার কেউ পাচ্ছে না যদি দলীয় লোক না হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকে নাম না নিয়ে তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতাদের ব্যক্তিগত একটা বিষয় আছে। তার রুচি তার কালচার তার লেখাপড়া তার শিক্ষা যোগ্যতা তারপরে তার কথাবার্তা আমরা যেটা বলি সেটা প্রকাশ পায়। তার স্টেটমেন্ট বলবে তিনি কি ধরনের বক্তব্য রাখছেন।

তিনি বলেন, উনাদের একটা ফলস ধারনা তৈরি হয়েছে। তারা সংকট থেকে উপরে উঠে গেছেন। কিন্তু সংকট আরো গভীর হয়েছে। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংকট আরো গভীর হয়েছে। সরকারের সংকট আরো গভীর হয়েছে। এবং উনারা যদি এখনই এটা উপলব্ধি না করেন এবং ফিরে আসার চেষ্টা না করেন তাহলে ভবিষ্যৎ তাদের জন্য খুব ভালো না।

ঢাকার বাইরে সরকারি হাসপাতালের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, সেখানে যদি আপনারা যান তালে অবিশ্য বিষয় সেখানে ঢোকা যায় না এত দুর্গন্ধ এত নোংরা এত দালালদের অত্যাচার চিন্তা করা যায় না। হাসপাতালের আশেপাশে নতুন নতুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার করে ফেলা হয়েছে এটা একটা বড় ব্যবসা বিরাট ব্যবসা হাসপাতাল থেকে দালালরা ধরে ধরে নিয়ে যায় ওখানে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষাখাত প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, শিক্ষা খাতে আপনারাই দেখছেন আমার কিছু বলার নেই। শিক্ষা খাতের কি অবস্থা তারা পরিকল্পিতভাবে প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের দলীয় লোকজনদেরকে ভাইস চঞ্চলের হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছে। তার সেই যোগ্যতা থাকুক আর না থাকুক। শিক্ষক নিচ্ছে সম্পূর্ণ দলীয় লোকজনদেরকে। যারা মেধাবী যারা নিজেদের যোগ্যতায় এ পর্যন্ত এসেছে তারা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শুধু বিএনপির মা বলি না। আমি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মা বলি। এই মহিয়ষী নেত্রীর দুর্ভাগ্য ক্রমে সঠিক মূল্যায়ন অনেকেই করতে পারছেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশীয় বিষয়ক সহকারী সচিব ডোনাল্ড লুর ঢাকা সফর প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'দেখুন এসব আমাদেরকে জিজ্ঞাসা না করে ওনাদের (আওয়ামী লীগ সরকার) জিজ্ঞাসা করুন। এসব নিয়ে আমরা ইন্টারেস্টেড না। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের জনগণের ওপরই আমাদের ভরসা, আমাদের পুরো আস্থা, সেই আস্থার ওপরে আমরা দাঁড়িয়ে থাকি। রাজনীতিও আমাদের জনগণকে নিয়ে।’


বিভাগ : রাজনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

গোল উৎসবে নেশন্স কাপে উড়ন্ত সূচনা জার্মানির

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

জয়ে ইংল্যান্ডের সাউথগেট-পরবর্তী অধ্যায় শুরু

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

পোপের ১৫৪ রানের পরেও ইংল্যান্ডের ৩২৫,কামিন্দু-সিলভায় লংকানদের লড়াই

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

স্কটল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো অস্ট্রেলিয়া

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

মানিকগঞ্জে ইছামতী নদীতে থেকে মরদেহ উদ্ধার

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

‌'শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কঠাগড়ায় দাঁড় করাতে হবে'

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

শেষ ম্যাচও জিততে চায় বাংলাদেশ

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জামায়াতকে পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

আইওসির কোচিং কোর্সে বাংলাদেশের মাহফিজুল

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

নাটোরে পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ শুরু

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

পটিয়ায় জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদ্ন্নুবী অনুষ্ঠিত

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

মীরসরাইয়ে কমছে পানি তীব্র হচ্ছে নদীভাঙন

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

বিএনপিতে কোনো সন্ত্রাসী চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেয়াই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

নেমে গেছে বানের পানি স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষতচিহ্ন

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সভাপতি শওকত সম্পাদক মানিক

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

সংযোগ সড়ক ভেঙে দুর্ভোগে ৬ গ্রামবাসী

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

বাড়িভিটা হারিয়ে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

ভয়াবহ বন্যায় কৃষি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের সর্বনাশ

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা

মাদরাসা শিক্ষার সংস্কার : একটি পর্যালোচনা