পালানো ছাড়া শেখ হাসিনার জীবনে বীরত্বের কিছু দেখিনি: রিজভী
১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২১ পিএম | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনে পালানো ছাড়া বীরত্বের কিছু দেখেননি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, আজকে পতিত স্বৈরাচার পালিয়ে গিয়ে কত কথাই তারা বলছেন। একদিন তার এক মন্ত্রী বলেছিলেন তার পিতার নাম ধরে তার কন্যা কখনো পালায় না আমরা তো শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনে পালানো ছাড়া বীরত্বের কিছু দেখিনি। ৭৫ এর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর পাঁচ বছর তিনি বিদেশে পালিয়ে ছিলেন। তিনি তার পরিবারের যে হত্যাকাণ্ড আর প্রতিবাদ করতে এক বছর পরেই কিংবা ৬ মাস পরে দেশে আসতে পারতেন কিন্তু তিনি আসেননি। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে তিনি দেশে ফিরতে পেরেছিলেন দেশে ফিরেই তিনি ষড়যন্ত্র চক্রান্ত শুরু করেছিলেন। তিনি দেশে ফেরার ঠিক ১৩ দিনের মাথায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শাহাদাত বরণ করেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত রিকশাচালক শহীদ মোহাম্মদ কামাল এর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে তার বাসভবনে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অর্থ সহায়তা দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়েছেন তার আত্মীয়-স্বজনসহ। আজকে যারা এখন আড়ালে আবডালে শেখ হাসিনার জন্য অশ্রুপাত করছেন তাদের মনে রাখা উচিত তিনি তার বোনকে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে পালিয়েছেন, তার আত্মীয়-স্বজন সব পালিয়েছেন। আর আপনারা যারা নেতাকর্মী সামান্য একটি খুদকুঁড়ার জন্য এই ১৭-১৮ বছর ধরে গণতন্ত্রকামী মানুষ প্রতিবাদী মানুষের ওপর যুবলীগ-ছাত্রলীগের পোশাক পরে কত যে নিপীড়ন নির্যাতন করেছেন কত যে রক্তাক্ত করেছেন তার কোনও শেষ নেই। আর আজকে তার জন্য মায়া কান্না করছেন।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, তাকে (শেখ হাসিনাকে) জিজ্ঞেস করুন আপনি আমাদেরকে ফেলে গেলেন কেন? আপনার আত্মীয় স্বজনরা কেন আমাদেরকে সঙ্গে নিয়ে গেল না। আমি আওয়ামী লীগের ওই সমস্ত নেতাকর্মী এখন যারা অন্ধকারে বসে তার জন্য মায়া কান্না করছেন, তাদেরকে বলি আপনাদের তো আপনার নেত্রীর সঙ্গে কথা হয়। দেখলাম এক জেলার সাধারণ সম্পাদক তাদের নেত্রীর সাথে কথা বলছেন, আপনারা কি বলতে পারলেন না আপনি আপনার আত্মীয় স্বজনকে নিয়ে গেলেন, বোনকে নিয়ে গেলেন, আপনার পুত্র তো আগেই দেশের বাইরে থাকে, আপনার কন্যা থাকে বিদেশে। আপনার আরও যেসব আত্মীয়-স্বজন কোথায় সেই নিক্সন? কোথায় সেই হেলাল? কোথায় শেখ তন্ময়? কোথায় শেখ সেলিম? তারা তো কেউ বাংলাদেশে নেই আত্মীয়-স্বজনকে নিরাপদ করে আপনি চলে গেলেন জনগণের দুর্বার আন্দোলনের স্রোতে, নেতাকর্মীদের ফেলে গেলেন কেন?
তিনি বলেন, পৃথিবীর যারা অসীম সাহসী নেতৃত্বে এবং দেশপ্রেমী হয় তারা নিজের দেশ রেখে নিজের নেতাকর্মীদেরকে ফেলে রেখে যায় না। বেগম খালেদা জিয়া কি পেরেছে? বেগম খালেদা জিয়াকে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনরা কত চেষ্টা করেছে পারেনি। কিন্তু তখনও আপনাকে চেষ্টা করে তারা সফল হয়েছিল। পরে শেখ হাসিনা অভিমান করে বললেন মঈনুদ্দিনকে উনি গেলেন না কিন্তু আমি কেন যাব। উনি গেলেন না ওনার অদম্য দেশপ্রেম উনি গেলেন না ওনার এক গভীর ভালোবাসা জনগণের সে কারণে দীর্ঘ ৬-৭ বছর কারাগারের মধ্যে রোগে-শোকে কাতর হওয়ার পরেও তার কণ্ঠ তার সাহস উদ্যম দেশের প্রতি ভালোবাসা এক অনবদ্য প্রেরণার অংশ হয়েছিল গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে কোনও অবস্থায়ই না পেরেছে স্বৈরাচারীর এরশাদ, না পেরেছে শেখ হাসিনা, না পেরেছে মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দীনরা। কিন্তু আপনি দেশের পরিস্থিতি এবং আপনার অন্যায়-অবিচারের কথা ঠিকই জানতেন যে জনগণের স্রোত ধেয়ে আসবে। জনগণের ক্ষোভের যে প্রবাহ সেই প্রবাহে আমি এর আগেই বলেছিলাম আপনার রাজ সিংহাসন উল্টে যাবে ঠিকই উল্টে গেছে। পালিয়ে গেছেন তার বন্ধু প্রতিম দেশে আত্মীয়-স্বজনসহ। এটাতো কাপুরুষের কাজ। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এটা কি দেখেন না নিজের আত্মীয়-স্বজন নিজের ছেলেমেয়েকে পার করে নিয়ে গেলেন অথচ নেতাকর্মীদেরকে ফেলে চলে গেলেন।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলন যখন বিজয়ের মুহূর্তে ঠিক সেই সময় রিকশাচালক কামালসহ আটজন পৃথিবী থেকে চলে গেছে এরা গণতন্ত্রের বিজয়পুত্র। এরা গণতন্ত্রের এক অনন্য অসাধারণ সারথি এদের চালিত রথেই গণতন্ত্রের পতাকা উড়েছে।
এ সময় বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, ডিইউজের সহসভাপতি রাশেদুল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আরিফুর রহমান তুষারসহ রিকশাচালক কামালের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
অস্ট্রিয়ার তিরোলে তুষারধসে বাবা-ছেলের মৃত্যু
বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিছে: জেফার
নতুন শাসকদের সাথে সংঘর্ষে সিরিয়ায় আসাদ অনুসারীদের হাতে ১৪ জন নিহত
কালকিনিতে ইউপি সদস্য নিহত, আহত ১০
রাজধানীতে শীতের ছোঁয়ায় শীতল সবজির বাজার
উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হলেন ফয়সাল তাহের
মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
সংস্কার ও নির্বাচনী প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলবে: প্রধান উপদেষ্টা
ইংরেজি নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ
ইন্টারপোলের তালিকায় হাসিনার নাম যুক্ত হওয়া নিয়ে যা জানা গেল, খোঁজা হচ্ছে আরও যেসব বাংলাদেশিকে
দক্ষিণ কোরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন ভোট, মুদ্রার মান পতন
কটিয়াদীতে তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম
জাহাজে ছেলে হত্যা: শোকে মারা গেলেন বাবা
ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে বিজিবি’র হাতে ১৬ বাংলাদেশি আটক
সৈয়দপুরে রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের কার্পেটিংয়ের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিলো ছাত্ররা
শার্শায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২ গ্রুপে সংঘর্ষ
ইউক্রেনে আহত উত্তর কোরীয় এক সেনা আটক
টাকা খেয়ে আ.লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে ভারতের মিডিয়া : সারজিস
বাংলাদেশের সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র : জাতীয় নাগরিক কমিটি
সিরিয়ার সাবেক বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করেছে প্রশাসন