ভারতের সহায়তায় ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে আ.লীগ: মির্জা ফখরুল
১৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৫ এএম | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৫ এএম
ছাত্র-জনতার বিপ্লব ব্যর্থ করতে ভারতের সহায়তায় আওয়ামী লীগ একের পর এক ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, নতুন খেলা শুরু হয়েছে সংখ্যালঘু, কিন্তু এদেশে কেউ সংখ্যালঘু নয়। তারা আবার ষড়যন্ত্র করছে, কিছু একটা করে ভারতের সহায়তায় ফিরে আসতে চায়। এদের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে হবে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৬৯, ৭১ দেখেছেন, ২৪ সাল দেখেছেন। দেখেছেন যে দেশের জনগণ কিভাবে জ্বলে উঠতে পারে। ভালই ভালই আত্মসমর্পণ করেন। যারা বাহিরে আছেন এদিক-ওদিক করছেন ভালো হয়ে যান। সকলকেই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার ও নৈরাজ্য ঠেকাতে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। দুদিনের অবস্থান কর্মসূচির বৃহস্পতিবার শেষ দিন ছিল।
শেখ হাসিনাকে করে মির্জা ফখরুল বলেন, ইতিহাস বড় নির্মম, আল্লাহ তাআলার বিচার বড় নির্মম। আল্লাহতাআলা তাদেরকে চোখের সামনে দেখিয়ে দিল যে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী। কোরআনের আয়াত তেলাওয়াত করে তিনি বলেন, আল্লাহ বলেন, “আমি আমীরকে ফকির করতে পারি, ফকিরকে আমীর করতে পারি। জীবিতকে মৃত করতে পারি, মৃতকে জীবিত করতে পারি”। আল্লাহ তাআলার এটিকে অস্বীকার করেছিল হাসিনা। সীমা লঙ্ঘন করেছিলেন তিনি। অহংকার, কি অহংকার! আল্লাহর কি হুকুম, তাকে পালিয়ে যেতে হলো সেই জায়গায়, যেখানে তার গোড়া পোতানো আছে।
তিনি বলেন, খুনি শেখ হাসিনা ১৫ বছর ধরে আমাদের নেতাকর্মীদের স্টিম রোলার চালিয়েছে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের অমানবিক নির্যাতন করেছে। আমাদের ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। শত শত নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ২৪ সালের নির্বাচনের আগে ২৮ হাজার নেতাকর্মীকে মাত্র দুদিনে কারাগারে নিয়েছিল। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এতো প্রাণ দিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা যা ইতিহাসে বিরল। অনেকে মা তার ছেলে হারিয়েছে, বোন তার ভাই হারিয়েছে।
ছাত্র আন্দোলনে নিহত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আবু সাইদ টিউশনি করে লেখা পড়া করার চালিয়েছে। গরীব ঘরের সন্তান।
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও সালমান এফ রহমানের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এদেরকে বিচার করতে হবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিরোধী ট্রাইব্যুনালে। অপরাধ করেছেন গণহত্যা চালিয়েছেন। যারা লুণ্ঠন করেছেন নির্যাতন করেছেন হত্যা করেছেন তাদের বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল, এ সরকারকে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করতে হবে। যতদিন তারা গণতন্ত্রের পক্ষে থাকবে। অবশ্যই বর্তমান সরকার নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী কর্মকর্তা হয়েও যারা স্বৈরাচার সরকারের দোসর হয়ে কাজ করেছিলেন তাদেরকে বের করতে হবে, যারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী এই সরকারের হয়ে সরকারে বসে থেকে কাজ করেছেন তাদেরকে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, নগদ একটি বাটপারি প্রতিষ্ঠান, এদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক। পোস্ট অফিসের সাথে নগদের কোন সম্পর্ক নেই। মানুষকে স্নাইপার দিয়ে হত্যা পেছনে এদেশের প্রতিটি ব্যবসায়ী জড়িত। এরা টাকার কুমির হয়েছে। সব পাচার করেছে। এদেরকে ধরুন। হাসিনা সালমান রহমানকে প্লেনে নেয়নি। আমাদের নেত্রীকে আটক করা হয়েছিল আমাদের কেউ পালিয়ে যায়নি। এটাই হলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতানেত্রীদের মধ্যে পার্থক্য। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন।
তিনি বলেন, আমাদের চাওয়া ছিল দেশনেত্রী মুক্ত হাওয়া দেখতে চেয়েছিলাম। এখন দেখতে পাচ্ছি, আর চাওয়া পাওয়া কিছু নেই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে করে বলেন, আন্দোলন কিন্তু শেষ হয়নি, সতর্ক থাকুন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, একবুক রক্ত দিয়ে ছাত্র জনতা যে স্বাধীনতা এনেছে, মায়ের বুক খালি হয়েছে, শহীদ হয়েছেন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্র এখনো থামেননি। এরা ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র করার দুঃসাহস দেখাবেন না। এ দেশের ছাত্র জনতা খেলা দেখিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের নিষ্পেষিত নির্যাতন করেছে, ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আর এই দেশে তাদের আসতে দিবে না। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নিহতদের স্মরণে দোয়া করা হয় ।
বক্তব্য রাখেন ভাইস চেয়ারম্যান ড আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, কৃষক দলের সাধারণ শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিছে: জেফার
নতুন শাসকদের সাথে সংঘর্ষে সিরিয়ায় আসাদ অনুসারীদের হাতে ১৪ জন নিহত
কালকিনিতে ইউপি সদস্য নিহত, আহত ১০
রাজধানীতে শীতের ছোঁয়ায় শীতল সবজির বাজার
উত্তরা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হলেন ফয়সাল তাহের
মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, ইউপি সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা
সংস্কার ও নির্বাচনী প্রস্তুতি একই সঙ্গে চলবে: প্রধান উপদেষ্টা
ইংরেজি নববর্ষে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ
ইন্টারপোলের তালিকায় হাসিনার নাম যুক্ত হওয়া নিয়ে যা জানা গেল, খোঁজা হচ্ছে আরও যেসব বাংলাদেশিকে
দক্ষিণ কোরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিশংসন ভোট, মুদ্রার মান পতন
কটিয়াদীতে তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম
জাহাজে ছেলে হত্যা: শোকে মারা গেলেন বাবা
ভারত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে বিজিবি’র হাতে ১৬ বাংলাদেশি আটক
সৈয়দপুরে রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের কার্পেটিংয়ের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিলো ছাত্ররা
শার্শায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২ গ্রুপে সংঘর্ষ
ইউক্রেনে আহত উত্তর কোরীয় এক সেনা আটক
টাকা খেয়ে আ.লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে ভারতের মিডিয়া : সারজিস
বাংলাদেশের সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র : জাতীয় নাগরিক কমিটি
সিরিয়ার সাবেক বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করেছে প্রশাসন
ফেসবুকে কাকে ননসেন্স বললেন শবনম বুবলী