ভারত নির্লজ্জের মত হাসিনাকে আশ্রয় দিচ্ছে: রিজভী
২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:০৪ পিএম | আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৯ পিএম
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, হাসিনা এতগুলো অন্যায় করেছে বাংলাদেশে সারাবিশ্ব তা জানে। ভারত কি তা জানে না? কিন্তু নির্লজ্জের মত তাকে সমর্থন দিচ্ছে, আশ্রয় দিচ্ছে এবং তারপক্ষ হয়ে বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ ও মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কলঙ্কলেপনের অপপ্রচার করে যাচ্ছে।
সম্প্রতি দৈনিক ইনকিলাবের সহাকারী সম্পাদক মেহেদী হাসান পলাশকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
সাক্ষাতকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে হাসিনা বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি মন্তব্য করে রিজভী বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে যে পরিস্থিতি গেছে তা বিশ্লেষণ করে তার ওপর ভিত্তি করে কর্মসূচি দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সেই সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তারেক রহমান এবং তিনি দিয়েছেন বলেই আন্দোলনের যে পটভূমি রচিত হয়েছে তার ওপরেই জুলাই-আগস্টের বিপ্লব সম্পন্ন হয়েছে।
শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে আদর্শের ওপর বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিএনপি সে আদর্শের ওপর থাকতে পারছে না বলে সমালোচনা আছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমালোচনা থাকবেই। সমালোচনাটা গ্রহণ করা বা সমালোচনা হতে দেওয়া সেটাও কিন্তু বিএনপির একটা বৈশিষ্ট্য। শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাকশাল থেকে যে বহুদলীয় গণতন্ত্রের উত্তোরণ করেছিলেন সেই উত্তোরণেই তো এটা নিশ্চিত হয়েছে। সমালোচনা ও সহ-অবস্থান দুটোই থাকবে। সেই ধারাটাই বিএনপি এখনও পর্যন্ত অক্ষুণ্ন রেখেছে।
‘‘এই সমালোচনার জন্য কোন ধরনের রিয়েকশন কোনো ধরনের হুমকি দেয়া হয় নাই বিএনপি বা তারেক রহমানের পক্ষ থেকে। এটা তার নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্যের একটা বিশেষ দিক। বরং তিনি সমালোচনাকে উৎসাহিত করেছেন’’, বলেন রুহুল কবির রিজভী।
হাসিনা আমলে গত ১৫ বছর নানামুখি চাপ, ভয়ভীতি, জুলুম-নির্যাতন ও প্রলোভবন সত্বেও বিএনপি না ভাঙার কারণ জানতে চাইলে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, এটা অবশ্যই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব, ব্যক্তিত্ব, দক্ষতা ও সক্ষমতার কারণে সম্ভব হয়েছে। জেলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত জনগণের ওপর তার যে প্রভাব ছিল কেউ সেই ছায়া থেকে বের হয়ে যেতে চাননি। এটা একটা বড় বিষয়।
দলের ভেতরে নানা আলোচনা-সমালোচনা থাকবে মন্তব্য করে রিজভী আরও বলেন, তারেক রহমান দলের হাল ধরেছেন। তিনি সবগুলোকে একোমেডেট করে একটা যথাযথ নেতৃত্ব দিয়েছেন। এটা একটা তার বড় সাংগঠনিক প্রতীভা। এটা তিনি জাতির সামনে তুলে ধরতে পেরেছেন।
‘‘শুধু বাংলাদেশ কেন ভারতেও আমরা দেখেছি কংগ্রেসকে কতবার ভাঙতে। আরও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ভেঙে নতুন রাজনৈতিক দল করতে। কিন্তু এই ১৭ বছরের সীমাহীন নিপীড়ন-উৎপীড়নের মধ্যেও এই দলটাকে অটুঁট রাখা, সঠিক ট্রাকে রাখা এই অসাধারণ দায়িত্ব পালন করেছেন তারেক রহমান’’, বলেন তিনি।
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে বিএনপির ভূমিকা প্রসঙ্গে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আগস্ট বিপ্লবে বিএনপি সক্রিয়ভাবে সমর্থন দিয়েছে। প্রথমদিকে হয়তো বলা হয়নি। কিন্তু সমর্থনতো দেয়া হয়েছে। আমাদের তরুণ সংগঠনগুলো যুবদল-ছাত্রদল আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যাযে তরুণদের পাশাপাশি থেকেছে। তাদেরকে নানাভাবে প্রকাশ্যে সহযোগিতা করেছে। আন্দোলনে আমাদের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল। না হলে ৪২২ জন মারা যাবে কেন? ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ সংগঠন গড়ে তুলে সারাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জুলাই-আগস্টের শহিদ পরিবার ও আহতদের সহায়তা দেয়া হচ্ছে।দলমত নির্বিশেষে সবার পাশেই দাঁড়িয়েছে।
ভারত ইস্যুতে সাক্ষাতকারে রিজভী বলেন, বৃহত প্রতিবেশী দেশ হিসেবে সুসম্পর্ক থাকতে পারে। এই বৃহত প্রতিবেশী দেশ বলে আমরা কেন ক্রমান্বয়ে নিজেদেরকে ছোট করব? জনসংখ্যা হিসেবেও তো আমরা ছোট না। ১৮ কোটি জনসংখ্যার একটা দেশ কত ছোট হবে!
তিনি আরও বলেন, আমাদের নিজস্ব আত্মশক্তি-জাতিয়তাবোধ-দেশপ্রেম মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতা রয়েছে। এই দেশকে কেউ গ্রাস করবে নানাভাবে করায়ত্ব করবে এটা তো হতে পারে না। ভারত একটি বৃহত গণতান্ত্রিক দেশ তাদের প্রতি আমাদের শ্রোদ্ধাবোধ আছে। কিন্তু শ্রোদ্ধাবোধ তো আমাদের প্রতিও থাকতে হবে।
‘‘হাসিনা এতগুলো অন্যায় করেছে বাংলাদেশে সারাবিশ্ব জানে, ভারত জানে না? কিন্তু নির্লজ্জের মত তাকে সমর্থন দিচ্ছে, আশ্রয় দিচ্ছে এবং তারপক্ষ হয়ে বর্তমান বাংলাদেশের জনগণ ও মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কলঙ্কলেপনের অপপ্রচার করে যাচ্ছে। জঙ্গি জঙ্গি নানাকথা বলে যাচ্ছে। এখানে ইসলামপন্থী-বামপন্থী-ডানপন্থী আছে কেউ তো এখান থেকে বলেনি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়িত হচ্ছে’’ বলেন রিজভী।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, আমি ওই কারণেই বলছি ভারতের সমমর্যাদার ভিত্তিতে আমরা প্রতিবেশী। আমরা আমাদের দিক থেকে সহায় সম্পদ-জনসম্পদ সবমিলিয়ে আমরাও শক্তিশালী রাষ্ট্র। ভারত তো একটা বৃহত রাষ্ট্র ঠিকআছে। কিন্তু ওখান থেকে হুমকি দেয় কয়েক মিনিটের মধ্যে বাংলাদেশ দখল করার। আমাদের মধ্যে ন্যূনতম দেশপ্রেম থাকলে রক্ত তো গরম হবেই। তারা কখনই বাংলাদেশের মানুষের দৃষ্টিতে দেখে না তারা শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে দেখে। তাদের একমাত্র আপনজন হচ্ছে শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের লোকজন।
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সরকারের সমর্থন ছাড়া ব্যাংক লুটপাট করা সম্ভব হতো না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
শিল্পে উৎপাদন খাতের অবদান কমেছে
জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা না করলে রাজনীতির অধিকার হারাবে শিবির: ছাত্রদল
ভারতে কুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু
কারিগরির সাড়ে ৩ হাজার জনবল নিয়োগে কোনো বাঁধা নেই
স্ত্রীসহ ইভ্যালির রাসেলের দুই বছরের কারাদণ্ড
আদালতের পৃথক নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের দাবি বিচারকদের
সমন্বিত অনলাইন সত্যায়ন ব্যবস্থাপনার উদ্বোধন সাশ্রয় হবে ৫শ’ থেকে ৭শ’ কোটি টাকা
আওয়ামী লীগের অপকর্ম জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে : নাসের রহমান
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্ত্রী-সন্তানকে হত্যায় ঘাতকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
নেতারা 'পলাতক', কীভাবে হরতাল-অবরোধ পালন করবে আওয়ামী লীগ?
হায়ার পার্টনার্স মিট ২০২৫ এ ট্রিপল সম্মাননায় ভূষিত টিভি হাট
ডাকসু নির্বাচনে কারচুপি পুনঃতদন্ত চেয়ে ঢাবি উপাচার্যকে স্মারকলিপি
মস্কোর কাছে আসাদকে ফেরত চাইলেন আল-শারা
দেশের বাজারে আরো বাড়ল সোনার দাম
ভূমি ও নদী দখল
বিদেশগামী কর্মীদের দক্ষতা অর্জনে গুরুত্বারোপ রাবিডের সেমিনারে নেতৃবৃন্দ
আইসিটি খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে
গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে চরমোনাইর পীরের দল
আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ৮ সদস্যের দল