সামাজিক সমস্যা সমাধানে ধর্মীয় দিকনির্দেশনা

Daily Inqilab মাওলানা এইচ এম গোলাম কিবরিয়া (রাকিব)

১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম

মানব সমাজ দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। সমাজ কাঠামোতে দেখা দিচ্ছে নানান সমস্যা। সৃষ্ট এসব সমস্যা আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রতিবন্ধক। দেশের প্রধান প্রধান এসব সমস্যা এবং এবিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হলো।

দেশ,ভাষা ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য ইসলাম পরিপূর্ণ এক জীবন ব্যবস্থা। এই জীবন ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো: একটি শাশ্বত, চিরন্তর ও পরিপূর্ণ জীবনবিধান। এই বিধান সার্বজনীন, যুগোপযোগী ও জীবন্ত। কুরআনুল কারীমের শাশ্বত শিক্ষা, রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর অনুপম আদর্শ এবং সাহাবীগণ (রা) -এর অত্যুজ্জ্বল জীবনচার ইসলামের বৈশিষ্ট্য। ইসলামের সার্বজনীনতা, উদার দৃষ্টিভঙ্গি অসাম্প্রদায়িক চেতনা, অসাধারণ মানবিকতা, অতুলনীয় কল্যাণধর্মী এবং জীবন্ত শাশ্বত ও অন্ততর্মুখী এক জীবন ব্যবস্থা হলো ইসলাম। ইসলাম বস্তুবাদী জীবনদশন নয়। ইসলাম মানুষ ও আল্লাহ্র সমগ্য সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করতে শিখায়। ইসলাম মানুষকে আল্লাহ্ ও তাঁর মাখলুখকের সাথে সম্পৃক্ত করে, বস্তুগত ও আধ্যায়ত্মিক সমন্বয় সাধন করে।

ইসলামের অপব্যাখ্যা
সমাজে কিছু লোক তাদের নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য ধর্মের অপব্যাখ্যার আশ্রয় নিয়ে সরলমনা জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে এবং প্রতারণা করছে। কখনও কখনও ফতোয়া জারী করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এমনকি আল্লাহ্-রাসূলের বাণীর ব্যাখ্যা করা হচ্ছে মনগড়াভাবে। ইসলামের কোন কোন বিষয়ে এবং চার মাযহাব সম্পর্কে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে এবং হানাফী মাযহাব সম্পর্কে আপত্তিকর বক্তব্য প্রদান করে ধর্মীয় সংহতি বিনষ্ট করা হচ্ছে। হাদীসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। এত ধর্মীয় বিভেদ-বিশৃঙ্খলা উসকে দেয়া হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ধর্মীয় বিবাদ প্ররোচিত করা হচ্ছে। এত ধর্মীয় শৃঙ্খলা ও সহমর্মিতা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ফতোয়ার অপপ্রয়োগঃ সূক্ষ্ম ও জটিল মাসআলা প্রদানে নিজেদেরকে যোগ্য ও বিশেষজ্ঞ মনে করে আলেম নামধারী বেআলেম কিছু ব্যক্তি তাদের খেয়াল-খুশিতো ফতোয়া প্রদান করে। তারা কুরআন-সুন্নাহর এমন হাস্যকর ব্যাখ্যা দেয় যা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী, আধুনিক ও সমসাময়িক, আলেমগণের ব্যাখ্যার পরিপন্থী। কোন কোন ক্ষেত্রে তারা নিজেদেরকে খোলাফায়ে রাশিদীন, সালাফে সালেহীন ওও সাহাবাায়ে কিরামের সমপর্যায়ের মনে করে। এসব কুখ্যাত ব্যাক্তিরা স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে অথবা গ্রামের টাউট-বাটপারদের অবৈধ সুবিধা ভোগ করতে ক্রীড়নক হিসাবে কাজ করে। তাদের জঘন্য কাজের ফলে সমাজে ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি হয়। সমাজের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয় এবং সংঘাতময় পরিস্থিরি সৃষ্টি হয়।

চরম পন্থা ইসলামে নিষিদ্ধঃ চরম পন্থা অবলম্বন ইসলামী আকীদা-বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনার সম্পূর্ণ বিরোধী। ইসলাম ভারসাম্যপূর্ণ জীবনব্যবস্থার নাম। ইসলাম মধ্যপন্থা অবম্বনের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। এজন্য বিশ্বনবী (সা) মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহবান জানিয়েছেন “তোমার সরল পন্থা অবলম্বন করো, চরম পন্থা বর্জন করো, সুসংবাদ দাও এবং ঘৃণা সৃষ্টি করো না” (বুখারী)।

“ধর্মে (ধর্মান্তরিতকাণে) জোর জবরদস্তি নেই। সত্য পথ ভ্রাত্ম পথ থেকে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে” (সূরা বাকারা: ২৫৬)। দ্বীন প্রচারের জন্য ভীতি প্রদর্শন ও মানুষ হত্যার মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি সম্পূর্ণ হারাম ও ইসলাম বিরোধী। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, “প্রকৃত মুসলমান সেই ব্যক্তি যার কথাবার্তা ও কার্যকলাপের অনিষ্ট থেকে মুসলমানরা নিরাপদ থাকে” (আবু দাঊদ)।

আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন ধর্মকে কেন্দ্র করে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ্ বলেছেন, “হে আহলে কিতাব! তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ্ সম্পর্কে নিতান্ত সত্য ছাড়া ভিন্ন কিছু বলো না” (সূরা নিসাঃ ১৭১)।

“বলুন, হে আহলে কিতাব! তোমরা নিজেদের ধর্মে অন্যায় বাড়াবাড়ি করো না এবং এমন সম্প্রদায়ের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না, যারা ইতিপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অকেকে পথভ্রষ্ট করেছে। আর তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে” (সূরা মায়িদা: ৭)।

আলোচ্য আয়াত দু’টিতে যদিও আহলে কিতাবকে সম্বোধন করা হয়েছে তবুও এর তাৎপর্য ব্যাপক। এর মধ্যে সকল সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত। সকলকে বাড়াবাড়ি ও গোঁড়ামী বর্জন করতে বলা হয়েছে।

মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাঃ মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে মানব প্রজন্মের মর্যাদাহানি করা হয়। আল্লাহ্ তায়ালা মানব জাতির জন্য কতিপয় মৌলিক অধিকার দান করেছেন। ইসলামে মানবাধিকার অত্যন্ত ব্যাপক। কোন ক্ষুদ্র বিষয়ও এতে উপেক্ষিত হয়নি। ইসলাম বিধৃত মানবাধিকার সার্বজনীন, শাশ্বত, চিরন্তণ ও পূর্ণাঙ্গ। মহাগ্রন্থ কুরআনুল কারীম মৌলিক মানবাধিকার ঘোষণা করেছে। বিদায় হজ্জের ভাষণে কতপিয় মৌলিক মানবাধিকারের কথা বিধৃত হয়েছে। এছাড়া খোলাফায়ে রাশেদীন ও সাহাবা (রা)-গণের মাধ্যমে ইসলামে মানবাধিকার পূর্ণ অবয়ব লাভ করে। উল্লেখযোগ্য মানবাধিকার: জীবনের অধিকার, নিরাপত্তার অধিকার, জীবনের মৌলিক মানের অধিকার। দাসত্ব থেকে মুক্তির অধিকার, সুবিচারের অধিকার, সকল মানুষের সমতার অধিকার, সম্পত্তির অধিকার, মান-ইজ্জতের অধিকার, মতামত প্রকাশের অধিকার অন্যতম।

ন্যায়বিচারঃ ইসলাম জাতি-ধর্ম-বর্ণ তথা সাদা-কালো ধনী-দরিদ্রে ভেদাভেদকে স্বীকার করে না। তাই ইসলাম যেমন সর্বত্র আইনের স্বীকৃতি দিয়েছে তেমনি বিচার ব্যবস্থায় ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত করেছে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, “তোমরা অত্যাচার করা থেকে বিরত থাকো। কেননা অত্যাচার কিয়ামতের দিন ঘোর অন্ধকারের রূপ ধারণ করবে” (মুসলিম)।

“কোন ব্যক্তি অন্যায়ভাবে করো অর্ধ হাত পরিমাণ জমিও দখল করলে নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন সাত স্তর জমি তার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হবে” (বুখারী-মুসলিম)।

“নিশ্চয়ই নিকৃষ্ট দায়িত্বশীল ঐ ব্যক্তি যে অধীনস্তদেরকে অত্যাচার করে” (মুসলিম)।

এভাবে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে অন্যায়-অত্যাচারের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে বিশদভাবে সর্তক করা হয়েছে। কারণ অত্যাচার থেকে সন্ত্রাস জন্ম নেয়। সুতরাং অত্যাচার সংক্রান্ত এসব বাণীই প্রমান করে যে, ইসলামের সাথে সস্ত্রাসের কোন সম্পর্ক নেই।

প্রকৃত মুসলমান সন্ত্রাসী হতে পারি নাঃ রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, “মুসলিম সে, যার মুখ এবং হাতের অনিষ্ট থেকে মুসলমানরা নিরাপদ থাকে” (বুখারী মুসলিম)।

সারা বিশ্বে মানবতার জন্য ইসলাম শান্তির বাণীবাহক। বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর পত্রে তাদেরকে লিখেন, “ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তি লাভ করবেন”।

রাসূলুল্লাহ (সা)-এর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা মুসলিম উম্মাহর দায়িত্ব। এই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইসলাম গ্রহনকারীদের শান্তি ও নিরাপত্তা প্রদান করা মুসলমান সমাজের দায়িত্ব। আল্লাহ্ পাক ঘোষণা করেন, “মুমিন পুরুষ এবং মহিলাগণ একে অপরের সহায়ক ও পৃষ্ঠপোষক। তারা ন্যায়সঙ্গত কাজের আদেশ দেয় এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে” (সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ৭১) । “তারা মুমিনদের প্রতি কোমল ও বিনীত” (সূরা আল- মায়িদা, আয়াত: ৫৪)।

“তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত। মানবজাতির কল্যাণের জন্যই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। মোতরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহ্র প্রতি ঈমান আনবে” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১১০)।

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, “এমন ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার প্রতিবেশী তার দুষ্কৃতি থেকে নিরাপদ নয়” (মুসলিম শরীফ)। (চলবে)

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা, কুমিল্লা জেলা মাদরাসা খতিব, প্রাবন্দিক ও উপস্থাপক।


বিভাগ : ধর্ম দর্শন


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

৬৪ বছর বয়সে বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণ

৬৪ বছর বয়সে বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণ

টঙ্গীতে প্লাস্টিকের গোডাউনে আগুন

টঙ্গীতে প্লাস্টিকের গোডাউনে আগুন

ইসরায়েলি অভিযান, রাফা ছেড়েছেন ৬ লাখ ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি অভিযান, রাফা ছেড়েছেন ৬ লাখ ফিলিস্তিনি

র‍্যাব-১১ হাতে ২২ বছর পর স্ত্রী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

র‍্যাব-১১ হাতে ২২ বছর পর স্ত্রী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী গ্রেপ্তার

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে আরও দেশের প্রতি আহ্বান এরদোয়ানের

ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে আরও দেশের প্রতি আহ্বান এরদোয়ানের

বাগেরহাটে সংসদ সদস্যের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

বাগেরহাটে সংসদ সদস্যের নাম ভাঙ্গিয়ে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভোট বর্জন

এই ট্রেনে চড়েই চলে যাবেন বিশ্বের একেবারে শেষ প্রান্তের… কোথায় জানেন

এই ট্রেনে চড়েই চলে যাবেন বিশ্বের একেবারে শেষ প্রান্তের… কোথায় জানেন

পশ্চিমবঙ্গের মালদহে বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

পশ্চিমবঙ্গের মালদহে বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু

হংকং-সিঙ্গাপুরের পর এবার নেপালে নিষিদ্ধ হলো ভারতীয় মশলা

হংকং-সিঙ্গাপুরের পর এবার নেপালে নিষিদ্ধ হলো ভারতীয় মশলা

চবি ঝর্ণা দেখতে এসে ঝরে গেল আরও একটি প্রাণ

চবি ঝর্ণা দেখতে এসে ঝরে গেল আরও একটি প্রাণ

ইউরোপের নির্বাচনে কড়া শরণার্থী নীতি কতটা প্রভাব ফেলবে?

ইউরোপের নির্বাচনে কড়া শরণার্থী নীতি কতটা প্রভাব ফেলবে?

নামাজের সময় মসজিদে ধরিয়ে দেওয়া হলো আগুন, নিহত ১১

নামাজের সময় মসজিদে ধরিয়ে দেওয়া হলো আগুন, নিহত ১১

চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫

চৌদ্দগ্রামে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে পড়ে নিহত ৫

ফিলিপাইনের জাহাজের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছে চীনা কোস্টগার্ড

ফিলিপাইনের জাহাজের অনুপ্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করছে চীনা কোস্টগার্ড

গাজায় জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান আরব লিগের

গাজায় জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহ্বান আরব লিগের

আর‌ও এক বিরল রোগের ঝুঁকি, ফের কাঠগড়ায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা

আর‌ও এক বিরল রোগের ঝুঁকি, ফের কাঠগড়ায় অ্যাস্ট্রাজেনেকা

‘অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা’ তত্ত্ব একেবারে ভিত্তিহীন: চীন

‘অতিরিক্ত উৎপাদন ক্ষমতা’ তত্ত্ব একেবারে ভিত্তিহীন: চীন

উখিয়া টেকনাফের সীমান্ত এলাকা অবৈধ অস্ত্র, মাদক চোরাচালানের রোডম্যাপে পরিণত হচ্ছে

উখিয়া টেকনাফের সীমান্ত এলাকা অবৈধ অস্ত্র, মাদক চোরাচালানের রোডম্যাপে পরিণত হচ্ছে

এদেরসনকে হারানোর ধাক্কা সিটির, ব্রাজিলের জন্যও যা দুর্ভাবনার

এদেরসনকে হারানোর ধাক্কা সিটির, ব্রাজিলের জন্যও যা দুর্ভাবনার

জার্মানির ইউরো দলে ৪ গোলরক্ষক, নেই নাব্রি-হুমেলস

জার্মানির ইউরো দলে ৪ গোলরক্ষক, নেই নাব্রি-হুমেলস