ইহুদি জাতি মুশরিক ও কাফির দুটোই
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
ইসরাঈল জাতি কাফের ও মুশরিক দুটোই। আল কুরআনের আলোকে নি:সন্দেহে তারা কাফের এবং সাচ্চা মুশরিকও বটে। শুধুমাত্র জ্ঞানপাপীরাই বলতে পারে যে, তারা মুশরিক নয়। সত্যিকার অর্থে মুশরিক কাকে বলে তার সংজ্ঞাই তারা জানেন না। পৃথিবীর পুরাতন জাতিগুলোর মধ্যে অত্যন্ত প্রাচীন জাতি হলো, ইসরাঈল তবে হঠকারী, বিশ^াসঘাতকতা ও অহংকারী জাতি হিসাবেও তারা বিশ^ ইতিহাসের পাতাকে কলংকিত করেছে। অভিশপ্ত এ জাতির ওপর আল্লাহর ক্রোধ বার বার আপতিত হয়েছে। হযরত ইবরাহিম আ: বিবি সারাকে নিয়ে বাবেলে বসবাস করতেন। সেখানে হযরত ইসহাক আ: জন্মগ্রহণ করেন। হযরত ইসহাক আ: এর পুত্র ছিলেন হযরত ইয়াকুব আ: যার অপর নাম ছিল ইসরাইল। বংশ পরস্পরায় এই বনী ইসরাঈল জাতিতে আল্লাহ তা’আলা অসংখ্য নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। উল্লেখিত নবী-রাসুলদের মধ্যে হযরত মুসা: ছিলেন অন্যতম। অভিশপ্ত এ জাতি তাদের অসংখ্য নবীকে হত্যা করেছে। হযরত মুসা আ: এর সাথে তাদের বেয়াদবি, অবাধ্যতা ও হঠকারিতা ছিল সবচেয়ে বেশী। নবী মুহাম্মদ সা: এর সাথেও তাদের বিশ^াসঘাতকতার তালিকা দীর্ঘতম।
আল্লাহর সত্তা, তাঁর গুণাবলী, অধিকার ও ক্ষমতা-ইখতিয়ারে কোন ভাবে অন্য কাউকে ভাগ বসানোর নাম শিরক। শিরক দুই প্রকার। যথা: শিরকে জলী ও শিরকে খফী। উভয় শিরক অত্যন্ত বিপদজনক। প্রকাশ্যে আল্লাহর সাথে শিরক করা আর মনে মনে বিশ^াসে শিরক করা। অন্য কাউকে ভাগ বসানো মানে নিজেদেরকে আল্লাহর মোকাবেলায় অপ্রতিদ্বন্ধী মনে করা, অন্য মানুষ, মানবগোষ্ঠী, কোন আত্মা, জিন, ফেরেশতা অথবা কোন বস্তুগত, কাল্পনিক বা আনুমানিক সত্তাও হতে পারে। শিরকে জলী থেকে শিরকে খফী আরো মারাত্মক। কারণ এটি তাওহীদবাদীদের মধ্যে থেকে শিরককে ছড়িয়ে দেয়। কারণ প্রকাশ শিরককে মানুষ চিনতে পারে কিন্তু মুসলমানদের মধ্যে অবস্থান করে শিরকের চিন্তা-চেতনা ছড়িয়ে দেয়া সহজ হয় শিরকে খফী ওয়ালাদের মাধ্যমে।
ইসরাঈল জাতি মুশরিক ছিল তার বড় প্রমাণ কুরআন ও হাদীস দিচ্ছে। যথা:
এক, আল্লাহ তা’আলা বলেন,“ইহুদীরা বলে, উযাইর আল্লাহর পুত্র এবং খৃষ্টানরা বলে, মসীহ আল্লাহর পুত্র। এগুলো একেবারেই আজগুবী ও উদ্ভট কথাবার্তা। তাদের পূর্বে যারা কুফরিতে লিপ্ত হয়েছিল তাদের দেখাদেখি তারা এগুলো নিজেদের মুখে উচ্চারণ করে থাকে। আল্লাহর অভিশাপ পড়ুক তাদের ওপর, তারা কোথা থেকে ধোকা খাচ্ছে!”(সুরা তাওবা:৩০) অথচ তাওহীদের মর্মবানী হচ্ছে তিনি এক ও একক। তাঁর কোন শরীক নাই, তাঁর কোন সন্তান নেই তিনি কারো সন্তান নন। সুরা ইখলাসে বলা হয়েছে,“বলো, তিনি আল্লাহ,একক। তিনি অমুখাপেক্ষী। তাঁর কোন সন্তান নেই তিনি কারো সন্তান নন। তার সমতুল্য কেউ নেই।” মুশরিকরা প্রতি যুগে খোদায়ীর এ ধারণা পোষণ করে এসেছে যে, মানুষের মতো খোদাদেরও একটি জাতি বা শ্রেনী আছে। তার সদস্য সংখ্যাও অনেক। তাদের মধ্যে বিয়ে-শাদী এবং বংশ বিস্তারের কাজও চলে। তারা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকেও এ জাহেলী ধারণা থেকে মুক্ত রাখেনি। তাঁর জন্য সন্তান-সন্তুতিও ঠিক করে নিয়েছে।
দুই, আল্লাহ তা’আলা বলেন, “ইহুদী ও খৃষ্টানরা বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান এবং তাঁর প্রিয়পাত্র। তাদেরকে জিজ্ঞেস করো, তাহলে তোমাদের গোনাহের জন্য তিনি তোমাদের শাস্তি দেন কেন?”(সুরা মায়েদা:১৮) এই চিন্তা-চেতনা কি শিরকের অন্তর্ভুক্ত নয়? তাদের এ সকল অপরিণামদর্শী মারাত্মক গোনাহের জন্য মহান আল্লাহ বিভিন্ন সময় তাদের ওপর আযাব ও গযব নাযিল করেছেন। স্বয়ং আল্লাহ তা’আলাই প্রশ্নাকারে বলছেন, “তারা যদি আল্লাহর সন্তানই হয়ে থাকে তাহলে তিনি তাদের ওপর বিভিন্ন সময়ে আযাব-গযব নাযিল করেছেন কেন? আল্লাহ তা’আলা বলেন: “স্মরণ করো, যখন তোমরা মুসাকে বলেছিলে, “আমরা কখনো তোমার কথায় বিশ্বাস করবো না, যতক্ষণ না আমরা নিজ চক্ষে আল্লাহকে প্রকাশ্যে দেখবো।” সে সময় তোমাদের চোখের সামনে তোমাদের ওপর একটি ভয়াবহ বজ্রপাত হলো, তোমরা নি¯প্রান হয়ে পড়ে গেলে। কিন্তু আবার আমি তোমাদের বাচিঁয়ে জীবিত করলাম, হয়তো এ অনুগ্রহের পর তোমরা কৃতজ্ঞ হবে।” (সুরা বাকারা ঃ ৫৫-৫৬)
তিন, আল্লাহ তা’আলা বলেন,“স্মরণ করো সেই সময়ের কথা যখন আমি মুসাকে চল্লিশ দিন-রাত্রির জন্য ডেকে নিয়েছিলাম। তখন তার অনুপস্থিতিতে তোমরা বাছুরকে নিজেদের উপাস্যে পরিণত করেছিলে। সে সময় তোমরা অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করেছিলে।”(সুরা বাকারা: ৫১) মুসা আ: কর্তৃক বনী ইসরাঈলরা ফিরাউনের জুলুম-নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার পর মিসর ছেড়ে যখন সাইনা বা সিনাই উপদ্বীপে পৌঁছে গেল তখন মহান আল্লাহ হযরত মুসা আ: কে চল্লিশ দিন-রাত্রির জন্য তুর পাহাড়ে ডেকে নিলেন। ফেরাউনের দাসত্ব মুক্ত হয়ে যে জাতিটি এখন মুক্ত পরিবেশে স্বাধীন জীবন যাপন করছে তার জন্য শরী’আতের আইন এবং জীবন যাপনের বিধান দান করার জন্যই মূলত: মুসা আ: কে আল্লাহ ডেকে নেন। আর ক’দিনে তারা শিরকে লিপ্ত হলো। গাভীর বাছুর পুজায় লিপ্ত হলো।
চার, বনী ইসরাঈলীরা আল্লাহকে দোষারূপ ও গালমন্দ করতো। তারা আল্লাহকে গরীব বলে দোষারূপ করেছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন যারা বলে, আল্লাহ গরীব এবং আমরা ধনী। এদের কথাও আমি লিখে নিবো এবং এর আগে যে আম্বিয়াদেরকে এরা অন্যায়ভাবে হত্যা করে এসেছে তাও এদের আমলনামায় বসিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি তাদেরকে বলবো, এই নাও, এবার জাহান্নামের আযাবের মজা ভোগ করো।”(সুরা আলে ইমরান: ১৮১) (চলবে)
লেখক: ইসলামী চিন্তাবিদ, গবেষক।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে- কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের নেতা ইয়াকুব চৌধুরী
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি