হযরত আম্মার (রা.) এক সাহসি সাহাবী
২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৪ এএম
আরব দেশ,মরু ভুমির দেশ। বিরাজমান জাহেলি পরিবেশ। কোথাও নেই ধর্ম পালনের পরিবেশ। বিধর্মীরা দেব-দেবীর উপসনায় লিপ্ত।হিংসা-বিধেশ,খুন-খারাবী,মার-মারি,কাটা-কাটি,চুরি-ডাকাতি,ধষন,জেনা ব্যভিচার ছিল তাদের স্বভাবজাত চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। বিনা কারণে বছরের পর বছর চলছে যুদ্ধ। কোথায় শান্তিময় সমাজ।অমবশ্যার ঘোর অন্ধকারে উদয় হলো শান্তির সূর্যোদয়। সেই রুবর নাম হলো হযরত রাসুল (দ)।ফুটন্ত সৌরভ ছড়িয়ে পরে দিগ দিগন্তে। বঞ্চিত মানুষের হলো আশ্রয়।প্রস্ফুটিত হলো অশান্তিময় সমাজে,শান্তির বারি ধারা। বিশ^ নবী (দ) বলেন,‘বন্ধুরা তোমরা যা করেছ তা ঠিক নয়। তোমরা মুক্তি পুজা ছাড়।এ সব মিথ্যা ও অলীক। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি কর্তা। তাই এক আল্লাহকে মানো’।
আরবের অধিকাংশ মানুষ ছিল অহংকারী,কলুষিত মনের অধিকারী। তারা নবী (দ) এর কথা না শুনে বরং তার বিরুধিতায় লিপ্ত ছিল। বিশ^ নবী (দ) ছিলেন একজন আল্লাহর মনোনীত রাসুল।তিনি (দ) বিরতিহীন ভাবে ইসলামের বাণী প্রচারের কাজ শুরু করেন।প্রিয় নবী (দ) এর সু মধুর বানী কাফের-মুশরিকদের কানে আঘাত করে। তারা আল্লাহ ও নবীর উপর ইমান আনে। শুরু হলো সাহাবীদের প্রতি চরম নির্যাতন। নির্যাতিত ব্যক্তিদের মধ্যে ইয়াসির (রা) ও সুমাইয়া (রা) ছিলেন অন্যতম সাহসি সাহাবী। হযরত ইয়াসির ও তার স্ত্রী হযরত সুমাইয়া (রা) যখন ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন,তখন পুত্র আব্দুল্লাহ ও আম্মার (রা) ছোট ছিল। ইসলামের বাহক নবী (দ) এর মহা ডাকে সারা দিয়ে আব্দুল্লাহ ও আম্মার ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। তখনই স্বপরিবারেত নির্যাতনের শিকার হোন। ইসলামের চির শত্রু আবু জেহেল। তার বর্শার নিষ্ঠুর আঘাতে হজরত সুমাইয়া (রা) ক্ষত বিক্ষত দেহ। তিনিই হলেন ইসলাম ধর্মের প্রথম মহিলা শহীদ। তেমনি ভাবে হযরত ইয়াসির (রা) ও পুত্র সন্তান আব্দুল্লাহ আল্লাহর পথে শাহাদাত লাভ করেন।বেচে থাকেন শহীদ পরিবারের আরেক সাহসি মানুষ হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা)। তিনি ছিলেন এক বৈচিত্র ময় জীবনের অধিকারী। ইসলাম বিরুধী শক্তি তার উপর নানা ভাবে জুলুম,নির্যাতন চালাতে থাকেন। তিনি সব নির্যাতন নিরবে সহ্য করেন। অথচ আম্মার (রা) এর অন্তর,এক আল্লাহর প্রতি বিশ^াসে অবিচল ছিল। তিনি আল্লাহ,রাসুল (দ) ও ইসলাম ধর্ম থেকে এক বিন্দু পরিমান সরে যান নি।কাফেররা হযরত আম্মার (রা) কে জ¦লন্ত আগুনে শুইয়ে,পানিতে ডুবিয়ে মারার চেষ্টা অবাহৃত রাখেন। আল্লাহ জীবন ও মরণের একমাত্র মালিক। তার হুকুম ছাড়া কোন প্রাণীর বাচা বা মরা সম্ভব নয়। আল্লাহর অসীম কদুরত ও রহম দিয়ে প্রতি বারেই তিনি বেচে গেছেন।
হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রা) ছিলেন রাসুল (দ) এর একজন নিবেদিত প্রাণ সাহাবী। একজন অগ্রগামী বীর সৈনিক। হযরত রাসুল (দ) ও দ্বীনের ডাকে সবার আগে হাজির। জীবন বাজি রেখে দ্বীন ইসলামের কাজ করেন। যুদ্ধের ময়দানে আল্লাহর উপর ভরসা ও এক বুক সাহস নিয়ে কাফেরদের বিরুদ্ধে বিরতিহীন ভাবে লড়াই করেন। চলছে ইয়ামামার যুদ্ধ। এক ভয়ানক যুদ্ধ।এ যুদ্ধে আম্মার জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ শুরু করেন। হযরত আম্মার (রা) একটি কান, ইসলামের চির শত্রু কাফেরের তলোয়ারের আঘাতে শহীদ হয়ে মাটিতে পরে।তাতে আম্মার (রা) এর কোন দুঃখ বা আফসোস নেই। তিনি খোলা তলোয়ার নিয়ে ছুটে জান শুত্রুর ভিড়ে। চারি দিকে শত্রু। করেন কচু কাটা। অপর দিকে মুসলিম বাহিনীর সব সৈনিক কাফেরদের চরম আঘাতে ছত্র ভঙ্গ হয়ে পরে। তখন হুযরত আম্মার (রা) এক বুক সাহস নিয়ে পাহাড়ের মত শক্ত করে দাড়ান। সাথীদের আহব্বান করেন, তোমরা যুদ্ধে ফিরে আস। আম্মার (রা) ডাক শুনে মুসলিম বাহিনীর সব সাহসি সৈনিক ফিরে আসে যুদ্ধে। শুরু হলো প্রান পণে যুদ্ধ। চারি দিকে লাশের পর লাশ। তারপর, মুসলিম বাহিনীর হাতে বিজয়ের পতাকা। উড়ছে পত পত করে। হযরত আম্মর (রা) এর সাহসিকতায় ইয়ামমার যুদ্ধে সবাই মুগ্ধ। হজরত আম্মার (রা) নবীজীর একজন পাণ প্রিয় সাহাবী ছিলেন। নবীজী তাকে অন্তরের অন্তর দিয়েই ভালোবাােসন।মদিনা শহর। চলছে মসজিদে নববীর ভিত্তি স্থাপনের কাজ। বিশ^ নবী (দ) নিজেই নির্মান কাজ করছে। হজরত আম্মার (রা) মাথায় ইট নিয়ে হযরত রাসুল (দ) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছেন। প্রিয় নবী (দ) সে সময় আম্মারের মাথার ধুলি-বালি নিজ হাতে পরিস্কার করে দিলেন। যার মাথায় নবী (দ( এর হাত, তিনি কতই না উত্তম,সুভাগ্যবান ব্যক্তি। একদিন নবী (দ) অতি কষ্টে আম্মার (রা) কে বলেন,‘আফসোস আম্মার! একটি বিদ্রোহী দল তোমাকে শহীদ করবে। তুমি তাদেরকে আল্লাহর আদেশের দিকে ডাকবে আর তারা তোমাকে ডাকবে জাহান্নামের দিকে’।সময় কারো জন্যে অপেক্ষা করে না। চলছে আপন গতিতে। চলছে ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী (রা) এর শাসন কাল। হজরত আলী (রা) ও হজরত মুয়াবিয়া (রা) এর মাঝে চলছে সিফফিনের যুদ্ধ। সে সময় হজরত আম্মার (রা) এর বয়স ৯১ বছর। এ বৃদ্ধ বয়সে যুদ্ধ ছেড়ে বাড়িতে বসে থাকা তার কাছে মোটেও ভালো লাগল না।তিনি ছুটে আসেন যুদ্ধেও মযদানে। তিনি লড়াই করেন হজরত আলী (রা) এর পক্ষে, হজরত মুয়াবিয়া (রা) বিপক্ষে। চলছে তুমুল লড়াই। এ যুদ্ধে উভয় পক্ষে চার হাজার সৈনিক শাহাদাত বরন করেন। হজরত আম্মার (রা) সিফফিনের যুদ্ধেই শাহাদাত বরন করেন।
হজরত আম্মার (রা) ছিলেন একজর অপরাজিত সাহসি সৈনিক,রাসুল (দ) এর প্রিয় সাহাবী। তিনি স্বাভাবিক জীবন-যাপনে অভ্যস্থ ছিলেন।তিনি সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কারো সাখে কোন প্রকার আপোষ,মিমাংসা করেন নি।তিনি আল্লাহ ও রাসুলকে গভীর ভাবে ভালোবাসেন। ভালোবাসেন ইসলামকে। আল্লাহর রাস্তায় হাসি মুখে নিজের জীবন উৎসগ করেন। তার ত্যাগ তিতিক্সা কোন দিন ভুলার মত নয়। তার আর্দশ যদি আমরা পালন করি।তার মহান মানসিকতা সম্পপুর্ণ পুত্র সন্তান প্রতিটি পরিবারে গড়ে উঠুক এই কামনা করি।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, গ্রন্থকার, পঞ্চগড় নুরুন আলা নুর কামিল মাদ্রাসা, পঞ্চগড়।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে- কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের নেতা ইয়াকুব চৌধুরী
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
নিউ ইয়র্কের আদালতে অভিযুক্ত লুইজি