আল্লাহ তাআলা,একমাত্র ইবাদত ও আনুগত্যের মালিক
০৭ মার্চ ২০২৪, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ০৭ মার্চ ২০২৪, ১২:০৭ এএম
আল্লাহ তাআলা মহান বিজ্ঞানী,সৃষ্টির কারিগড়।তিনি মানুষকে সর্ব সেরা, শ্রেষ্ঠ জাতি হিসাবে পৃথিবীতে প্রেরন করেন। মানুষের প্রথম কাজ হলো,আল্লাহ তাআলার ইবাদত ও অনুগত্য প্রকাশ করা। তার নিকট সাহার্য্য,সহযোগিতা কামনা করা। এরশাদ হচ্ছে,‘আমি তোমার ইবাদত করি এবং তোমার নিকট সাহার্য্য কামনা করি’।(সুরা ফাতিহা)। অন্যত্র এরশাদ হচ্ছে,‘বলুন! নিশ্চয় আমার নামাজ,আমার কোরবানী,আমার জীবন,আমার মৃত্যু জগত, সব কিছু মহান আল্লাহ জন্য। যার কোন অংশীদার নেই। এ কথার প্রতিই আমি আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম মুসলিম’। (সুরা আনআম)।
ইবাদত অর্থ কি? মানুষ কার ইবাদত করবে ? ইবাদত শব্দের অর্থ হলো,উপসনা করা,আল্লাহর বিধান অনুযায়ী সব কাজ করা। আল্লাহর নির্দেশ ও ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক যে কোন কাজ করাই হলো ইবাদত। যারা আল্লাহ ও রাসুল (দ) এর প্রতি ইমান এনেছে,তারাই সফলতা লাখ করেছে। বিশ^ নবী যখন আল্লাহর মহান বানী প্রচার শুরু করেন, তখন কাফের-মুশরিকরা নিজেকে অপমানিত মনে করে।তাদের জীবনে বিকৃত প্রভাব বিস্তার করে। আনুগত্য কাকে বলে? আনুগত্য মানে,মেনে চলা, আর্দেশ ও নির্ষেধ পালন করা। আনুগত্য মানে কোরআনের বিধান ও রাসুল (দ) এর হুকুম পালন করা। আনুগত্যের বিপরিত শব্দ হলো মাছিয়াত।যার অর্থ নাফরমানী করা।সুতুরাং আনুগত্য মানে শান্তি ও শৃংখলা। এরশাদ হচ্ছে,‘আল্লাহর আনুগত্য কর এবং উলিল আমরের আনুগত্য কর’। (নিসা- ৫৯)।বিশ^ নবী (দ) বলেন,যে আমার আনুগত্য করল,সে আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে আমার হুকুম অমান্য করল, সে আল্লাহর হুকুমই অমান্য করল। যে আমার আমীরের আনুগত্য করল সে আমার আনুগত্য করল। আর যে আমীরের আদেশ অমান্য করল প্রকৃত পক্ষে সে আমারই আদেশ অমান্য করল’। (বুখারী)। কোআরানের ভাষায় একমাত্র আল্লাহই হলেন,ইবাদত ও আনুগত্যের মালিক। তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত ও আনুগত্য করা যাবে না।এরশাদ হচ্ছে,‘আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য স্থির করো না। তাহলে নিন্দিত ও বিতাড়িত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে’।(বনি ্সরাইল ২২)। আল্লাহ আরো বলেন,‘হে নবী আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে ডাকবেন না।তাহলে আপনি শাস্তিতে নিপতিত হবেন’।(সুরা শুআরা- ২১৩)। যদি আমরা আল্লাহর ভালোবাসা চাই,তা হলো বিশ^ নবী (দ) এর অনুসরন করতে হবে। এরশাদ হচ্ছে-‘হে রাসুল আপনি বলুন,যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও তবে আমার রাসুল (দ) এর অনুসরন কর,তাহলেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ সমুহ ক্ষমাহ করে দেবেন। আল্লাহ তাআলা হলেন ক্ষমাহ শীল ও দয়ালু। হে রাসুল আপনি বলে দিন,আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য প্রকাশ কর। আর যদি তারা বিমুখতা অবলম্বন করে তাহলে আল্লাহ কাফেরদের ভালোবাসেন না’।(সুরা ইমরান-৩১-৩২)। বিশ^ নবী (দ) হলেন,আল্লাহর প্রেরিত রাসুল ও হাবিব। তিনি তার উপর মহা গ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর বিধি বিধান ও রাসুল (দ)কে যথাযথ ভাবে মান্য করবে সেই আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যোগ্য বান্দা।
আমরা মানুষ সমাজিক জীব। সমাজে বাসবাস করি।ইসলামী বিধান অনুযায়ী আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য প্রকাশ করি।মহান রবের বিধি বিধিান লংঘন করি না। তারঁ বিধান লংঘন করা নিষেধ। সে হিসাবে মৃত্য ব্যক্তির কাছে কিছু চাওয়া শিরকে আকবার। মানে মহা পাপ,কবীরা গুনাহ। কোন মোমিন এমন কাজ করলে তার ইমান থাকবে না।এরশাদ হচ্ছে,‘হে নবী ,আপনি বলে দিন,তোমরা কি আল্লাহ ব্যতিত কোন বস্তুর ইবাদত করো,যে তোমাদের অপকার ও উপকার করার ক্ষমতা রাখেন না।অথচ আল্লাহ সব শোনেন ও জানেন’।(সুরা মায়িদা ৭৬)। আল্লাহ আরো বলেন,‘বলুন! আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, তা ছাড়া আমার নিজের ভালো-মন্দের উপর আমার কোন অধিকার নেই। আমি যদি গায়েবের খবর জানতাম,তবে তো আমি আনেক কল্যানেই লাভ লাভ করতাম এবং কোন অকল্যাণই আমাকে স্পশ করত না। ইমানদার সমপ্রদায় জন্য সর্তককারী ও সুসংবাদদাতা ছাড়া আমি তো আর কিছুই না’।(সুরা আরাফ ১৮৮)।বিশ^ নবী (দ) বলেন,‘পাপ কাজের আদেশ না করা পযন্ত ইমাম বা নেতার কথা শোনা ও তার আদেশ মান্য কর। তবে পাপ কাজের আদেশ শোনা ও আনুগত্য করা যাবে না।(বুুখারী)। ইসলাম শান্তির ধর্ম,সার্ম্যের ধর্ম। এরশাদ হচ্ছে-‘আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর’।আল্লাহকে ভয় এবং রাসুল (দ) এর আনুগত্য মানে নিজেকে ইবাদতের মাঝে নিয়োজিত রাখা। এরশাদ হচ্ছে-‘হে ইমানদারগণ আনুগত্য কর খোদার,আনুগত্য কর রাসুলের এবং সে সব লোকের যারা তোমাদের মধ্যে সামগ্রিক দায়ীত্ব সম্পন্ন।অতপর তোমাদের মধ্যে কোন ব্যাপারে মত বিরোধের সৃষ্টি হয় তবে তা আল্লাহ ও রাসুলের দিকে ফিরিয়ে দাও,যদি তোমরা প্রকৃতই আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমানদার হয়ে থাক। এটাই সঠিক কর্মনীতি এবং পরিনিতির দিক দিয়েও এটাই উত্তম’।(সুরা নিসা ৫৯)। অন্য জায়গায় বলেন,‘ইমানদার লোকদের কাজ তো এই যে,যখন তাদেরকে আল্লাহ ও রাসুলের দিকে ডাকা হবে,যেমন রাসুল তাদের মামলা মুদ্দামার ফায়সালা করে দেয় তখন তারা বলে আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম’।(আন নুর)।‘কেবল মোমেন পুরুষ ও কোন মোমেন স্ত্রী লোকের এই অধিকার নেই যে,আল্লাহ ও তার রাসুল যখন কোন বিষয়ে ফায়সালা বলে দেবে,তখন সে নিজেই সেই ব্যাপারে কোন ফায়সালা করার ইখতিয়ার রাখবে’।(আহযাব)।আল্লাহর আনুগত্যের ব্যপারে‘হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) বলেন,রাসুল (দ) বলেছেন,মুসলমানদের উপর নেতার আদেশ শোনা ও মানা অপরিহার্য্য কর্তব্য। চাই সে আদেশ তার পছন্দনীয় হোক আর অপছন্দনীঢ হোক। তবে হা, যদি আল্লাহর নাফরমানী মুলক কোন কাজের নির্দেশ হয়, তবে সেই নির্দেশ শোনা ও মানার কোন প্রয়োজন নেই’।(বুখারী ও মুসলিম)। হযরত আবু অলিদ ওবাদা ইবনে ছামেত (রা) বলেন,আমরা নিম্নোক্ত কাজ গুলোর জন্য রাসুল (দ) এর কাছে বাইয়াত গ্রহন করলাম। যথা- ১.নেতার আদেশ মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে,তা দঃুসময়ে হোক আর সুÑসময়ে হোক।খুশির মুহুতে হোক আর অখুশির মুহুতে হোক ২.নিজের তুলনায় অপরের সুযোগ সুবিধাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে ৩.ছাহেবে আমরের সাথে বির্তকে জড়াবে না।হ্যা যদি নেতার আদেশ প্রকাশ্য কুফরীর শামিল হয় এবং সে ব্যাপারে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে যথেষ্ট দলিল প্রমাণ থাকে,তাহলে ভিন্ন কথা৪.যেখানে যে অবস্থাতেই থাকি না কেন, হক কথা বলতে হবে। আল্লাহর পথে কোন নিন্দুকের ভয় করা চলবে না’।(বুখারী ও মুসলিম)। আনুগত্যই হলো চালিকা ও প্রাণ শক্তি। প্রাণ্য শক্তি ছাড়া রবের সন্তুন্তি অর্জন সম্ভব নয়। ইসলামের বাইরে আরো একটি জগত আছে। তারা আনুগত্যকে অবাস্তব ও অসম্ভব মনে করে। আনুগত্য না করলে সব আমল নষ্ট হয়ে যাবে। এরশাদ হচ্ছে-‘হে ইমানদারহণ তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসুলের অনুসরন কর। আর নিজেদের আমল বিনষ্ট করো না’( মুহাম্মদ-৩৩)। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুনাফিকরা নবী (দ) এর পেছনে জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় করেছে,তারাই যুদ্ধে যাওয়ার নিদের্শ অমান্য করেছে। তাদের সমস্ত আমল ধুলায় মিশে গেছে। আল্লাহ তাদেরকে মুনাফিক ঘোষনা করেন। এরশাদ হচ্ছে-‘তোমরা তাদের প্রতি রাজী ও সন্তষ্ট হলেও আল্লাহ তো কিছুতেই ফাসেকের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন না’।(তওবা ৯৬)।‘যদি তোমরা রাসুলের ুআনুগত্য কর,তাহলে হেদায়াত প্রাপ্ত হবে। আমার রাসুলের দায়ীত্ব তো শুধু মাত্র দ্বীনের দাওয়াত পৌছিয়ে দেয়া’।(আন নুর-৫৪)। আল্লাহর আনুগত্য ব্যতীত কোন আমল কবুল হবে না। বিশ^ নবী (দ) বলেন,যে আনুগত্যের গন্ডি থেকে বের হয়ে যা,সে জামায়াত থেকে বিছিন্ন হয়ে যায়, অতপর মৃত্যু বরন করে,তার মৃত্যু জাহেলিয়াতের মৃত্যু’।(মুসলিম)। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা) বলেন,রাসুল (দ)বলেন,যে ব্যক্তি আনুগত্যের বন্ধন থেকে হাত খুলে নেয় সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে এমন অবস্থায় হাজির হবে যে,নিজের আত্নপক্ষ সর্মথনে তার বলার কিছুই থাকবে না। আর যে বাইয়াত ছাড়া মারা যাবে তার মৃত্যু হবে জাহেলিয়াতের মৃত্যু’।(মুসলিম)। আল্লাহর প্রতিনিধি হিসাবে আমাদের কাজ হলো তার ইবাদত ও আনুগত্য প্রকাশ করা। মহান প্রভু মানুষকে অসংখ্য অঙ্গ প্রতঙ্গ দিয়েছেন। সে হিসাবে আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্য প্রকাশ করা। আনুগত্যেশীল বান্দার সফলতাই হচ্ছে জান্নাত। সর্বশেষে বলতে চাই,আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে ইহকাল ও পরকালের সফলতা লাভ করতে হবে। সন্তান,স্ত্রী,পরিবার,প্রতিবেশী জীবনে আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যে প্রকাশ্যের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে উঠুক। এই হোক আজকের প্রত্যাশা।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, গ্রন্থকার, পঞ্চগড় নুরুন আলা নুর কামির মাদ্রাসা, পঞ্চগড়।
বিভাগ : ধর্ম দর্শন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঘণকুয়াশায় আরিচা-কাজিরহাট, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি তার বিপরীত কাজ করে সুন্দর সমাজ গড়বে- কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের নেতা ইয়াকুব চৌধুরী
রোমাঞ্চকর ম্যাচে বার্সাকে হারিয়ে শীর্ষে আতলেটিকো
জেসুসের জোড়া গোলের রাতে আর্সেনালের বড় জয়
বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর
চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
প্রতিবন্ধী স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ
কেরু চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
বিহারিরা কেমন আছে
লক্ষ্মীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
আসাদ সরকারের পতন : নতুন সিরিয়ায় ইসরাইলি আগ্রাসন
মেটলাইফ বাংলাদেশের গ্রাহকরা ডিসকাউন্ট পাবেন ওশান প্যারাডাইস হোটেলস ও রিসোর্টে
১৫ নারী ও শিশুকে হস্তান্তর
আবাসন ও গার্মেন্ট খাতের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
মেহেরপুরে বেড়েছে গরম কাপড় বিক্রি
কাশিয়ানীর হাট-বাজার নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব
অ্যানুয়াল বিজনেস কন্টিনিউয়িটি প্ল্যান ড্রিল ২০২৪ আয়োজন করলো ব্র্যাক ব্যাংক
সমস্যায় জর্জরিত আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
সবুজ গালিচায় হলুদের সমারোহ
আখাউড়ায় ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত