ধোনির হাই-ফাইভ না গুজরাটের দুইয়ে দুই
২৭ মে ২০২৩, ১০:২৪ পিএম | আপডেট: ২৮ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
গতবছর আইপিএলে অভিষেক হওয়ার মৌসুমেই চ্যাম্পিয়ন হয় গুজরাট টাইটান্স। পরশুরাতে চলমান মৌসুমের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে ৬২ রানের বড় ব্যবধানে গুঁড়িয়ে টানা দ্বিতীয়বার আসরটির ফাইনালে নাম লিখিয়েছে গুজরাট। আর এর মাধ্যমেই আইপিএলে অনন্য এক রেকর্ড স্থাপন করল হার্দিক পান্ডিয়ার দলটি। বিশ্ব টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে জনপ্রিয় এই আসরে এই প্রথম কোন দল অভিষেকের প্রথম দুই মৌসুমেই ফাইনালে খেলার কীর্তি অর্জন করলো। আহমেদাবাদে প্রথমে ব্যাটিং করে ২৩৪ রানের পাহাড়সম পুঁজি পায় গুজরাট। প্রায় অসম্ভব এই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ১০ বল বাকি থাকতে ১৭১ রানেই থেমেছে রোহিত শর্মার দল। আজ ফাইনালে আসরের সবচেয়ে সফল দল চেন্নাই সুপার কিংসের মুখোমুখি হবে গুজরাট। এবারের মৌসুমে হার্দিক-রাশিদদের অভিযান শুরু এই চেন্নাইকে হারিয়ে। তবে প্রথম কোয়ালিফায়ারে মহেন্দ্র সিং ধোনির কৌশলের কাছে হারতে হয়েছিল গুজরাটকে। এই মৌসুমে এই দুই দলের লড়াইয়ের ফল এখন ১-১ সমতায়। আজ রাতে সেই সমতা ভাঙার সুযোগ আছে দুই দলের সামনেই। তবে আহমেদাবাদের ঘরের মাঠে ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসাবে সেই চেন্নাইকে পেয়ে আরও উজ্জীবিত হার্দিক!
এদিন টস জিতে প্রথমে গুজরাটকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোই যেন কাল হয় মুম্বাইয়ের। দানবীয় এক সেঞ্চুরি হাঁকান গুজরাট ওপেনার শুভমান গিল। ৬০ বলেই ৭ চার আর ১০ ছক্কায় খেলছেন ১২৯ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস। এই ইনিংসে ভর করে ৩ উইকেটে ২৩৩ রানের পাহাড় গড়ে গুজরাট। রান তাড়ায় ১৪.২ ওভার পর্যন্ত ৪ উইকেটে ১৫৫ রান নিয়ে লড়াইয়ে টিকে ছিল মুম্বাই। তবে ওই ওভারে মোহিত শর্মা জোড়া শিকার করলে মুম্বাইয়ের আশা শেষ হয়ে যায়। বিধ্বংসী বোলিং করা মোহিত মাত্র ১০ রানে একাই নেন ৫টি উইকেট।
গুজরাট অধিনায়ক হার্দিক জানেন, আইপিএলের ইতিহাসে চেন্নাই অন্যতম সফল দল। চার বারের চ্যাম্পিয়ন ধোনিরা এবার ফাইনাল খেলবে দশম বারের মত। চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ফাইনালের ব্যাপারে হার্দিক বলেন, ‘আমরা নিজেদের সেরাটা দেব। কী ফলাফল হবে সেটা আমাদের কাছে এখন প্রাসঙ্গিক নয়। সবাই মিলে সেরাটা উজাড় করে দিতে পারলে, ১০০ শতাংশ দিতে পারলে জমে যাবে। নকআউট খেলাটাই আমার কাছে বেশ মজার। যা কোন ফলাফল হতে পারে। আমি তো এটা নিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে মজাই করছি।’ স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে ফাইনালের আগে দলের পরিবেশ ফুরফুরে রাখতে চাইছেন গুজরাট অধিনায়ক।
ফাইনালে ধোনির দল কঠিন প্রতিপক্ষ জানেন হার্দিক। তাই ফলাফল নিয়ে ভেবে নিজেকে বা সতীর্থদের চাপে ফেলতে চাইছেন না তিনি। হালকা মেজাজে থেকে ক্রিকেট উপভোগ করতে চাইছেন। তার বিশ্বাস, সবাই মিলে সেরাটা দেওয়াই আসল। পর পর দুই বছর ফাইনালে ওঠার জন্য সতীর্থদের কৃতিত্ব দিয়েছেন গুজরাট অধিনায়ক। হার্দিক বলেছেন, ‘আমরা যে এত দূর আসতে পেরেছি, তার পিছনে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম। সবাই প্রচুর পরিশ্রম করেছে। প্রত্যেকে নিজের দায়িত্ব পালন করেছে। আমি চেয়েছি সবাই খোলা মনে খেলুক। ফাইনালেও ফলাফল নিয়ে ভাবতে চাই না। নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলেই ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে।’
অন্যদিকে আজ রাতের ফাইনালের মাধ্যমেই প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটকে বিদায় বলতে যাচ্ছেন ভারতের সাদা বলের অন্যতম সেরা অধিনায়ক ধোনী। চেন্নাইকে পঞ্চমবারের মত চ্যাম্পিয়ন করার মাধ্যমে দারুণ এক বিদায়ী সম্ভাষণ পেতে চাইবেন বয়স ৪২ ছুঁই-ছুঁই এই ক্রিকেটার। আহমেদাবাদের ১ লক্ষ ৩২ হাজার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামে আজ রাতের ফাইনালটা তাই পাচ্ছে ভিন্ন মাত্রা। ধোনী তার গোটা ক্যারিয়ারেই বিখ্যাত ছিলন চ্যালেঞ্জ জেতার জন্য। শেষ ম্যাচেও তেমনটাই চাইবে চেন্নাইয়ের ভক্তরা। ধোনীর আজকের চ্যালেঞ্জের নাম শুভমান গিল। এই আসরে তিন শতকে ইতিমধ্যেই ৮৫১ রান করে ফেলা গিলকে থামানোটাই বিশাল চ্যালেঞ্জ।
তবে এর আগেও এই ধরনের ভয়ংকর ব্যাটারদের বিপক্ষে বাজী জিতেছেন ধোনী। আইপিএল ২০১১ মৌসুমের সর্বোচ্চ দুই রান সংগ্রাহক ক্রিস গেইল ও বিরাট কোহলিকে ফাইনালে অফ স্পিনের বিষে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ধোনী। অথচ সেবার গোটা আসরে এই দুই ব্যাটার অফ স্পিনের বিপক্ষেই ছিলেন সবচেয়ে ভয়ংকর। অন্যদিকে পরশু মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে গিল জানান, ‘যদি পারতাম আমি আহমেদাবাদের পিচ সব জায়গায় নিয়ে যেতাম।’ যেখানে দাঁড়ালেই রান পাচ্ছেন গিল সেই পিচে কিভাবে তাঁকে থামাবেন ধোনী! আজকের ফাইনালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক সেটাই।
দুই দলের বিশেষত্ব হচ্ছে দলীয় পারফরম্যান্স। এরপরও যদি বিশেষ কয়েকজন ক্রিকেটারের দিকে নজর দিতে হয় তাহলে সবার আগে আসবে গুজরাটের গিলের নাম। এরপর একই দলের মোহাম্মদ শামি, রাশিদ খান ও মোহিত শর্মার দিকে নজর রাখতে হবে। এই তিন বোলার এবারের আসরে যথাক্রমে ২৮,২৭ ও ২৪ উইকেট নিয়ে ফাইনালে বেগুনী ক্যাপের (সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী) যুদ্ধে নামবেন নিজেদের মধ্যে। চেন্নাইয়ের তিন বোলার তুষার দেশপান্ডে, রবীন্দ্র জাদেজা ও মহেশ পাথিরানাও এই মৌসুমে বল হাতে দারণ করেছেন, তবে তাদের উইকেট সংখ্যা গুজরাটের বোলিং ত্রয়ীর মত নয়। ধোনীর দলের ব্যাটিংয়ের গভীরতা অনেক বেশি হলেও মূলত তারা দুই ওপেন ডেভিড কনওয়ে ও ঋতুরাজ গাইকোদের উপর নির্ভরশীল ছিল মৌসুমজুড়েই।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
মেসিকে নিয়ে বড় পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ বিএনপির সঙ্গে কাজ করতে তৈরি আছি: হাছান মাহমুদ
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে দলের কোনো নেতা-কর্মীকে ছাড় দেওয়া হবে না : যুবদল সভাপতি
ঢাকা মেডিকেলের সিসিইউতে ভর্তি শাজাহান খান
আলোকচিত্রশিল্পী ড. শহিদুল আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত স্থগিত
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওলামা মাশায়েখ মহাসম্মেলন কাল
ব্র্যাক ব্যাংকের ৩০,০০০ কোটি টাকার রিটেইল ডিপোজিট মাইলফলক
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে গবেষণায় জোর দিতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার পরামর্শ
ব্রাহ্মণপাড়ায় জেলেকে পিটিয়ে হত্যা
কুয়াকাটায় দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
কলারোয়ায় হাজার হাজার ছাগলের মৃত্যু
হত্যা মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের ফাঁসানোর প্রতিবাদ
শিয়ালের কামড়ে নারী ও শিশুসহ আহত ৯
লোহাগাড়ায় ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
বন্দরগুলোর অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া হবে : নৌপরিবহন উপদেষ্টা
পঞ্চগড়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান
ধামরাইয়ে পুলিশ ক্যাম্পে ঝুলছে তালা
ভোগান্তির আরেক নাম আশাশুনি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
যশোরে বিএনপি নেতার আদালতে আত্মসমর্পণ
যশোর শহরজুড়ে রাস্তার পাশে ময়লার ভাগাড়