উচ্ছ্বসিত তাসকিন-সাবিনারা
০৫ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৫৭ পিএম | আপডেট: ০৬ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের নামে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার পেয়ে উচ্ছ্বসিত জাতীয় দলের ক্রিকেটার তাসকিন আহমেদ ও সাফজয়ী জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনরা। বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্রের ৭৪তম জন্মবার্ষিকীর দিন গতকাল ১০ ক্রীড়া ব্যাক্তিত্ব ও দু’টি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার। এদিন সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মনোনীতদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারমান ও সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিব, বিভিন্ন বাহিনী প্রধানসহ পদস্থ কর্মকর্তারা। এবারের শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কারপ্রাপ্তরা পেয়েছেন ১ লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও একটি করে সনদপত্র।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীনতার পর জাতির পিতা এদেশের খেলাধুলার উন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। আমাদের পরিবার সব সময় ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কামাল সব সময় খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক চর্চায় অগ্রণী ভূমিকা রাখত। কামাল আমার ছোট। আমরা পিঠাপিঠি দুই ভাই-বোন। সে আমার খেলার সাথী ছিল। আন্দোলন সংগ্রামেও একসঙ্গে ছিলাম আমরা। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে কামালের যে অবদান রয়েছে, সেটা চিরদিন দেশের মানুষ স্মরণ করবে।’
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শেখ কামালকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ কামালের মৃত্যুর কয়েকদিন আগে আমি জার্মানি যাচ্ছিলাম। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, নতুন বিয়ে করেছো, তোমাদের জন্য কি আনব। তখন সে বলেছিল, আমার জন্য কিছু আনতে হবে না। আমার আবাহনী ক্লাবের ফুটবলারদের জন্য এডিডাসের বুট নিয়ে আইসো। তখন তাকে লিখে দিতে বললাম। ডায়েরিতে তার ‘এডিডাস’ লেখাটি আজও আমার কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।’
স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়াবিদদের সাফল্য নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের অনেক গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েরা স্বর্ণ জয় করে নিয়ে আসে। অনেক প্রতিবন্ধী বেশি বেশি সাফল্য দেখায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা যে বাংলাদেশের জন্য স্বর্ণপদক নিয়ে আসে এটা কম কথা না। এ জন্য অবশ্য আমরা তাদের সহযোগিতা করি। যাতে তারা বিভিন্ন ক্রীড়া আসরে অংশ নিতে যেতে পারে। তাদের পরবর্তী জীবনটা কেমন হবে? সেজন্য আমি বলব, আমাদের যারা ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক-বীমা ও প্রাইভেট সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত আছেন, তারা যদি নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে খেলোয়াড়দের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে আর্থিক সচ্ছলতা পাবে তারা। পাশাপাশি ওই প্রতিষ্ঠানেরই সুনাম বয়ে আনতে পারবে খেলোয়াড়রা।’
বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন নিয়ে সমাজের বিত্তশালীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন,‘ক্রীড়াসেবীদের কল্যাণে জন্য আপনারা এই ফাউন্ডেশনে (বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন) অনুদান দেবেন। কারণ, অনেক খেলোয়াড় অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের চিকিৎসার সুযোগ থাকে না, অনেকে আর্থিকভাবে সংকটে পড়ে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি তাদের সহযোগিতা করতে। আমি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলাম না তখনও চেষ্টা করেছি এবং এখন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরও চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
এবার সেরা ক্রীড়াবিদের পুরস্কার পেয়েছেন সাফজয়ী জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা পেসার তাসকিন আহমেদ ও স্বর্ণজয়ী ভারোত্তোলক জিয়ারুল ইসলাম। শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার পেয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত তারা। পুরস্কার হাতে নিয়ে ক্রিকেটার তাসকিন আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন,‘প্রথমবারের মতো জাতীয় পুরস্কার পেলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে, যেটা আমার জন্য খুবই গর্বের বিষয়। আমার আসলে খুবই ভালো লাগছে।’ তিনি জানান, পুরস্কার গ্রহণের সময় তাসকিনের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ দলকে শুভ কামনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে যাতে তাসকিনরা ভালো খেলেন সেটার পরামর্শও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাসকিনের কথায়, ‘আসলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন যে, সামনে কি কি খেলা আছে। তিনি নিজেই বলেছেন যে সামনে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ আছে সবার জন্য শুভ কামনা, ভালো খেলো।’
নিজ প্রতিক্রিয়ায় ফুটবলার সাবিনা খাতুন বলেন, ‘এই পুরস্কারের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি এ দেশের ক্রীড়াঙ্গনের আধুনিকায়নে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন একটি অনুপ্রেরণার নাম। তার মধ্যে ছিল নেতৃত্বের অসাধারণ গুণাবলী।’ সাবিনা যোগ করেন, ‘দেশের খেলাধুলা প্রসারের লক্ষ্যে শেখ কামাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শক্তিশালী আবাহনী ক্লাব। তিনি ক্রীড়াবিদদের নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, তার মতো একজন স্বপ্নদ্রষ্টাকে আমরা অকালে হারিয়ে ফেলেছি। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। তবে তারই বড় বোন ক্রীড়া অন্তপ্রাণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণের সুযোগ পেয়ে নিজেকে পরম সৌভাগ্যবান মনে করছি আমি। এটা আমার জীবনের গৌরবের ক্ষণ হয়ে থাকবে।’
পুরস্কার পেলেন যারা-
আজীবন সম্মাননা : আব্দুস সাদেক
ক্রীড়াবিদ: সাবিনা খাতুন, তাসকিন আহমেদ ও জিয়ারুল ইসলাম
উদীয়মান ক্রীড়াবিদ: মুহতাসিন আহমেদ হৃদয় ও আমিরুল ইসলাম
ক্রীড়া সংগঠক: মালা রাণী সরকার ও ফজলুল ইসলাম
ক্রীড়া সাংবাদিক: খন্দকার তারেক মো. নুরুল্লাহ
ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার: আতাহার আলী খান
ক্রীড়া সংস্থা: বাংলাদেশ আরচ্যারি ফেডারেশন
পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ বেতারে উর্দু সার্ভিস চালু করতে পর্যালোচনা সভা
তোফাজ্জলের জানাজায় মানুষের ঢল, দাফন হলো বাবা-মা ও ভাইয়ের কবরের পাশে
দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
গণপিটুনিতে হত্যা: ঢালাওভাবে ছাত্রদের বিজয়কে খাটো করতে আওয়ামী মিডিয়ার আস্ফালন, সমালোচনার ঝড়
সাবেক এমপি ইয়াকুবসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে
ভারতকে ৩৭৬ রানে গুটিয়ে দিল বাংলাদেশ, হাসানের ৫
লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরো ১৫০ অনিয়মিত বাংলাদেশি
দোয়ারাবাজার সীমান্তে মহিষসহ মাছের চালান জব্ধ
সিলেটে ১৫০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার, নারী গ্রেফতার
আশ্বিনকেও ফেরালেন তাসকিন
কক্সবাজার পাহাড়তলীতে অনৈতিক কাজে অতিষ্ঠ মানুষ, বাধা দেয়ায় বাসার মালিকের উপর হামলা
অংশীদারত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির খসড়া পাঠিয়েছে ইইউ
তাসকিনের জোড়া আঘাত, লিটনের রেকর্ড
ডিবির আলোচিত ডিসি মশিউর গ্রেপ্তার
১৯৯ রানের জুটি ভাঙলেন তাসকিন
গণপিটুনিতে দুই মাসে ৩৩ জনের মৃত্যু
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় প্রশ্ন তুললেন জয়
মেট্রোরেলের কাজীপাড়া স্টেশন খুলছে আজ
বিচিত্রার সম্পাদক দেওয়ান হাবিব আর নেই